রক্তে ভেজা খঞ্জর |||| বিশ্বজিৎ মানিক
অপঘাতে দেশে কতো মানুষের প্রাণ – অকারণে ঝরে যায়
লিপি হয়ে থাকে ঘাতকের নাম – অপরাধ তালিকায়
বিচারের বাণী দেখা যায় কতো – নিরবে নিভৃতে কাঁদে
ভিকটিম পরিবার কখনো দেখি – পরে যায় নিদারুণ ফাঁদে।
প্রতিবাদ দেখেছি কতো কতো হয় – কাগজের পাতা ভরে
এটাও কখনো দেখেছি অপলক – রাজপথ কাপে ডরে
হত্যার প্রতিবাদে হরতাল অবরোধ – করতে দেখেছি কতো
বিবেকের কলম চলতে দেখেছি – প্রতিদিন অবিরত।
উত্তাল জনতা কখনো আবার – দেখেছি উন্মাদ হতে
অন্যায়ের প্রতিকার করতে দেখেছি – জনতার আদালতে
অনশন অবরোধে রাজপথ ঘিরে – দেখেছি মানুষের ঢল
জনতার ভয়ে করতে পারেনি – ঘাতকেরা আর কোন ছল।
বধির হয়েছ আজ কেন তোমরা – বিবেকের লতা পাতা?
কলম কেন আজ বন্ধ তোমাদের – বন্ধ কাগজের খাতা?
নীলাদের কথা বলছনা কেন – টকশোতে বসে বসে?
জিব কি তোমাদের চেতন হারিয়েছে – পরে গেছে মুখ থেকে খসে?
নারায়ণ রায়ের কন্যাটি ছিল – দশম শ্রেণির ছাত্রী
কৈশোর তার পেড়িয়ে যায়নি – হয়নি বিবাহযোগ্যা পাত্রী
পরিবার পরিজন নিয়েই তারা – সাভারে বসবাস করে
স্হানীয় অ্যাসেড স্কুলেই নীলা – দশম শ্রেণিতে পড়ে।
ব্যবসায়ী পিতার নেশাখোর এক – মিজান নামের ছেলে
প্রেম নিবেদন করতো নীলাকে – স্কুলে যাবার কালে
মেয়েটি নাকি করেছিল তার – প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
ব্যর্থ হয়ে স্থির করে মিজান – কেড়ে নিতে তার প্রাণ।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে মেয়েটি যখন – ডাক্তার দেখাতে যায়
ঘাতক মিজান খঞ্জর হাতে নিয়ে – পিছু পিছু তার ধায়
মাঝপথে এসে সহযোগী সাথে – রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে
ভাইয়ের কাছথেকে নিয়ে যায় বোন – জোর করে ছিনিয়ে।
ছিনতাই করে মেয়েটিকে তারা – আস্তানায় নিয়ে গিয়ে
জোরে বলে তাকে ধর্মান্তর করে – করতে চেয়েছিল বিয়ে
নিমরাজি হলে নেমে আসে তার – ভাগ্যে নির্মম পরিহাস
স্তব্ধ করে দেয় খঞ্জরাঘাতে – ষোড়শীর শেষ নিঃশ্বাস।
অসহায় ভাই পারেনি করতে – বোনটিকে পুনরুদ্ধার
অপারগ হয়ে করেছিল শুধু – গগনবিদারী চিৎকার
কেহ আসেনি এগিয়ে – কোন গুণবান লোক
পরপারে বোন, সাথে ছিল তার – কিভাবে কাটাবে শোক?
২৩/০৯/২০২০ খ্রিস্টাব্দ।