বিপ্লব ঘোষ-এর কবিতা
অমর কাব্য
একটি আন্দাজ করে বলি
পঞ্চাশ বছরে মনে হয়
হাজার তিন কবিতা হলো
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে
ভাল করে দেখে যা বুঝেছি
একটি– কি– দুটি কবিতাই !
কিন্তু তাতে কার এল গেল !
আমারও কিছু তো হয়নি
তবু যেন নিয়ম করেই
রাতে কলম নিয়ে বসেছি
যদি আর একটি কবিতা !
কিন্তু তাই যদি হয় শেষে
আমার কোন কাজে লাগবে !
এসব অনেক ভেবে দেখি
ভূতের মতোই তাড়া খেয়ে
রাত গভীর হলে একই ।
এই আমার জন্ম নিয়তি
কবে অমর কাব্য আসবে
এই ভেবে তো কেউ আসে না !
——‘
অলৌকিক শক্তি
একেক সময় নিজের প্রতি খুব রাগ হয়।সব কিছুর একটা আয়ূ আছে।কোথাও গিয়ে থামতে জানা চাই। কর্ম থেকে যেমন মানুষ অবসর নেয়। তারপর কেউ ভ্রমণে বেরুয়। সংসারের চাবি কারো হাতে দিয়ে দেয়। ভবিষ্যত জীবনে কষ্ট ভোগ যেন না হয় তার হিসেব করে। পাশের বাড়ির মধুবাবু বউ মারা যাবার পর ভেঙে পড়লেন। একমাত্র ছেলে বিদেশে। সে আসবে না। শেষে ওই সুন্দর রাস্তর পারে বাড়ি বিক্রি করে বৃদ্ধাশ্রমে চলে গেলেন চোখের জলে। আমি বলতে চাইছি অন্য কথা। এই যে কোন জন্ম থেকে লিখছি আজ ঠিক মনে নেই । তারপর শোক, আঘাত এল জীবনে। আমার আরো সর্বনাশ হলো। দুঃখ এসে কবিতার হাট, দরজা খুলে দিয়েছে। আর বেরুবার পথ নেই । আগুনে পুড়ে এক অলৌকিক শক্তি তৈরি হলো। আর মুক্ত পেলাম না। কবিতা নাকি অকবিতা লিখেই চলেছি। সেসব থাকবে নাকি আস্তাকুঁড়ে যাবে সেই নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই ।
—-
জয়িতা
ভাল যাকে বাসতে চেয়েছি
আমার যত কিছু তাকেই
দিয়ে যদি চলে যেতে পারি
সে কি ভেবে যে পথ ভুলেই …..
সে কি জানে — আমার সময় বড় কম
বিপ্লব ঘোষ: কবি ও কথাসাহিত্যিক, পশ্চিমবঙ্গ থেকে