এবার করোনায় আক্রান্ত ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দুই মন্ত্রী ।।সৌদিতে করোনা ৪৫ জনের; ইইউসহ আরো ১২ দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ।।করোনা রোগীদের চিকিৎসার গা শিউরে ওঠা অভিজ্ঞতা জানালেন ইতালির ডাক্তার ।।করোনাভাইরাস : ইতালির অবস্থা ভয়াবহ, ব্যবসা বন্ধে প্রবাসীরা বিপাকে ।।করোনা ঠেকাতে অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করল শ্রীলংকা ।।করোনাভাইরাসস্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ-সমাবেশ স্থগিত । করোনায় প্রাণ হারালেন ইতালির খ্যাতিমান চিকিৎসক। ১২ মার্চের বিশ্ব করোনা সংবাদ! করোনা আতঙ্কে অস্ট্রেলিয়ায় কনসার্ট বাতিল মাইলির
১২ মার্চের বিশ্ব করোনা সংবাদ! ।। করোনাভাইরাসে চীনের পরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ইতালি ও ইরান। এরই মধ্যে করোনার থাবায় প্রাণ গেছে ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তার। এবার করোনায় আক্রান্ত হলেন ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইশাক জাহাঙ্গীরিসহ মন্ত্রিসভার দুই সদস্য। দেশটির আধাসরকারি নিউজ এজেন্সি ফার্স নিউজের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।
বেশ কয়েক দিন ধরেই ইশাক জাহাঙ্গীরির স্বাস্থ্য ভালো যাচ্ছিল না। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছিল। সাম্প্রতিক শীর্ষপর্যায়ের বৈঠকগুলোতে তাকে দেখা যায়নি। এসবের মধ্যেই বুধবার এমন খবর এসেছে।
ফার্সের খবরে বলা হয়, হস্তশিল্প, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবিষয়ক মন্ত্রী আলী আসগর মুনসিন এবং শিল্প, খনিজ ও বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী রেজা রাহমানিও প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে এই সংক্রমণ নিয়ে দেশটির সরকারি গণমাধ্যমে কোনো খবর প্রকাশিত হয়নি। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে ইরান অন্যতম।
ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে দেশটির মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৬২ জন মারা গেছেন। বুধবার পর্যন্ত দেশজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫৪ জনে।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এখন পর্যন্ত ৯ হাজার লোক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশের ৩১টি প্রদেশেই এই সংক্রমণ দেখা গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আক্রান্ত হওয়া ৯ হাজার ৭০০ কোভিড-১৯ রোগীর অধিকাংশই ইরানের। মূলত শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির কারণেই অঞ্চলটিতে ভাইরাস এতটা মারাত্মক রূপ নিয়েছে।
করোনা রোগীদের চিকিৎসার গা শিউরে ওঠা অভিজ্ঞতা জানালেন ইতালির ডাক্তার
ইতালিতে গতকাল বুধবার ১৯৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার জেরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২৭ জনে ঠেকেছে। এখন পর্যন্ত ১২ হাজার চারশ ৬২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সে দেশে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপে কন্টে নির্দেশ দিয়েছেন, ওষুধের ফার্মেসি বাদে সবগুলো দোকান, রেস্টুরেন্ট ও অনুষ্ঠানের ভেন্যু বন্ধ করে দিতে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ইতালির একজন চিকিৎসক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এরই মধ্যে নিজের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তাতে উঠে এসেছে, ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই চিকিৎসক করোনাভাইরাসকে সুনামির সঙ্গে তুলনা করেছেন।
ইতালির হিউম্যানিটাস গাভাজেনি হসপিটালের ডা. ডেনিলে ম্যাকিনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই, এ রোগের লক্ষণ ও অবহেলা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করেছেন।
তিনি লিখেছেন, এখানে আমাদের সঙ্গে কী ঘটছে এবং কী লিখবো তা নিয়ে অনেক ভাবনা-চিন্তার পর মনে হলো- চুপ থাকা দায়িত্ববানের কাজের মধ্যে পড়ে না। করোনাভাইরাসের দাপটের মুহূর্ত আমি বার্গামোতে কাটিয়েছি। আমি জানি যে, এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক তৈরি করা যাবে না। কিন্তু ভয়াবহতার বার্তা যখন মানুষের কাছে একেবারেই পৌঁছে না, তখন সেটি আর ভয়ের।
বার্গামোতে এক লাখ ২২ হাজার মানুষ বাস করে। মিলান থেকে ৩০ মাইল দূরের এই শহরে ১২৪৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
ডা. ডেনিলে ম্যাকিনি লিখেছেন, গত সপ্তাহে আমি পুরো হাসপাতাল পর্যবেক্ষণ করে দেখে অবাক হয়েছি। আমাদের বর্তমান শত্রু তখন পর্যন্ত এতো ভয়াবহ আকারণ ধারণ করেনি। হাসপাতালের ওয়ার্ড তখনো খালি ছিল, বিদ্যুৎও চলে যাচ্ছিল মাঝে মাঝে।
তিনি আরো লেখেন, বর্তমানের মতো নিরবতা আর হাসপাতালের করিডোরগুলোতে পরাবাস্তব শূন্যতা অতীতে আর কখনো দেখিনি। আমরা এমন এক যুদ্ধ শুরুর আগ মুহূর্তে আছি, যা এখনো সেই অর্থে শুরু হয়নি। অনেকে (আমিসহ) নিশ্চিত ছিলেন না যে এ জাতীয় বর্বরতা কখনো আসবে।
আমি এখনো মনে করতে পারছি যে, সপ্তাহখানেক আগে এক রাতে একজনের পরীক্ষার (করোনা) ফল জানার অপেক্ষায় আছি। যখন আমি এটা বুঝতে পারলাম, আমার আতঙ্ক বেড়ে গেল। আমি এখন দেখতে পাচ্ছি, কী ঘটতে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এখন নাটকীয়ভাবে মোড় নিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এই ভাইরাস ‘বিস্ফোরিত’ হয়েছে। সময়ের পরিবর্তনে ভয়বহ আকার নিচ্ছে। হাসপাতালে খালি করা ওয়ার্ডগুলো ক্ষণিকের মধ্যে পূরণ হয়ে যাচ্ছে। এখন হাসপাতালে বেডের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এখন কাউকে সার্জারি করতে গেলেও করোনা পরীক্ষা করতে হচ্ছে।
চিকিৎসকের এই পোস্ট ৩৫ হাজারের বেশিবার শেয়ার করা হয়েছে। তবে ডা. ডেনিলে ম্যাকিনি সবাইকে অনুরোধ করেছেন, করোনাভাইরাসকে যেন কোনো ফ্লুর সঙ্গে তুলনা না করা হয়।
তিনি লিখেছেন, এখানে বাড়তি কোনো সার্জন নেই, ইউরোলজিস্ট নেই, অর্থোপেডিক্স নেই; আমরাই এই সুনামি মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছি। আমি চিকিৎসকদের চোখেমুখে যে ক্লান্তি দেখেছি, তাতেই বোঝা যায় কী পরিমাণ চাপ তাদের ওপর পড়েছে।
চিকিৎসকরা ‘বেড’ সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং রোগীদের ধরে ওঠানো-নামানোর কাজ করছেন। এমনকি তারা থেরাপিস্টদের কাজ থেকে শুরু করে নার্সের কাজও করছেন। ওদিকে নার্সরা ছোখের পানি ফেলছেন সবাইকে বাঁচাতে না পেরে।
এখানে কোনো শিফট নেই, আলাদা কর্মঘণ্টা নেই। সামাজিক জীবন বলে কিছু নেই আমাদের। পরিবারের সদস্যরা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় তাদের সঙ্গে তেমনভাবে দেখা পর্যন্ত করছি না।
তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, এরই মধ্যে তার অনেক সহকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত হয়ে তারা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ( ১২ মার্চের বিশ্ব করোনা সংবাদ! ২)
করোনায় প্রাণ হারালেন ইতালির খ্যাতিমান চিকিৎসক
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ইতালির এক খ্যাতিমান চিকিৎসক। উত্তর ইতালিয় ভেরেসের মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ছিলেন তিনি। রবার্তো স্টেলা নামের ওই চিকিৎসকের বয়স ছিল ৬৭ বছর। করোনায় আক্রান্তের কারণে তার শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা হয়।
রবার্তো স্টেলা ইতালির একজন খ্যাতিমান চিকিৎসক ছিলেন। ভেরেস নামক শহরের মেয়র তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন। তার মৃত্যুতে ইতালির ডক্টরস ও জেনারেল প্রাক্টিশনার্স ফেডারেশন শোক জানিয়েছে। তারা মনে করেন, করোনার কারণে ইতালির যেসব চিকিৎসক ও নার্সরা বিপদের মুখোমুখি হচ্ছেন; তাদের বিষয়ে সরকার খেয়াল রাখবে সরকার।
করোনাভাইরাস ইতালিতে মারণ থাবা বসিয়েই চলেছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস চীনের পর ভয়ঙ্কর হিসেবে দেখা দিয়েছে ইউরোপের এই দেশটিতে। এরই মধ্যে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে দেশটি। সেখানে মৃত্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২৭ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১৯৬ জন। ইতালিতে একদিনেই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩১৪ জন। চিকিৎসাধীন আছেন ১০ হাজার ৫৯০ জন।
করোনা আতঙ্কে অস্ট্রেলিয়ায় কনসার্ট বাতিল মাইলির
অস্ট্রেলিয়ায় শুটিং করতে গিয়ে করোনাভইরাসে আক্রান্ত হন হলিউড তারকা টম হ্যাঙ্কস ও তার স্ত্রী রিটা উইলসন। এবার করোনা আতঙ্কে পপ তারকা মাইলি সাইরাস তার অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করেছেন। জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার দাবানলে যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তার অর্থ সংগ্রহের জন্যই তিনদিন ব্যাপী এই রিলিফ কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, ১৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মেলবোর্নে পারফর্ম করার কথা ছিল ২৭ বছর বয়সী এই পপ সেনসেশনের। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় এই কনসার্ট বাতিল করলেন আয়োজকরা। এ প্রসঙ্গে মাইলি সাইরাস এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায় খুবই খারাপ লাগছে আমার। কিন্তু আমার ব্যান্ড এবং ক্রু-এর স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’
এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় ১০০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। এদিকে বৃহস্পতিবার জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় শুটিং করতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেতা টম হ্যাংকস এবং তার স্ত্রী রিটা।
অন্যদিকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যারা কনসার্টের টিকিট কেটেছিলেন তাদের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেয়া হবে। তবে কেউ যদি চান তাহলে অস্ট্রেলিয়া বন্যপ্রাণী এবং প্রকৃতি রিকভারি ফান্ডে ইচ্ছেমতো টাকা দান করতে পারবেন।
সৌদিতে করোনা ৪৫ জনের; ইইউসহ আরো ১২ দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বিমান চলাচল ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে সৌদি আরব। দেশটিতে আরো ২৪ জন নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৪৫ জন এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হলো।
এই প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং অন্য ১২টি দেশে বিমান চলাচল এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এসপিএ জানিয়েছে, আক্রান্ত দেশগুলো থেকে সৌদি নাগরিক ও বাসিন্দাদের ফিরে আসতে ৭২ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জর্ডানের সাথে সমস্ত স্থলপথে যাত্রীদের চলাচলের বিষয়টি স্থগিত করা হয়েছে। তবে বাণিজ্যিক এবং পণ্যসম্ভার পরিবহনের বিষয়টি এখনও অনুমোদিত রয়েছে।
এর আগে সৌদি আরব প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলোসহ প্রায় ১৯ টি দেশে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছিল।
সৌদি আরব জানিয়েছে, সৌদিতে প্রবেশের স্থানগুলোতে স্বাস্থ্য তথ্য এবং ভ্রমণের বিবরণ প্রকাশ না করলে ৫ লাখ রিয়াল জরিমানা করা হবে।
সূত্র : আসরাক আল আওসাত ( ১২ মার্চের বিশ্ব করোনা সংবাদ! ৩ )
করোনাভাইরাস : ইতালির অবস্থা ভয়াবহ, ব্যবসা বন্ধে প্রবাসীরা বিপাকে
পুরো ইউরোপজুড়েই করোনাভাইরাস আতংক বিরাজমান । ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় ইতালিতে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস । প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রবাসীরা বিপাকে পড়েছেন।
ইতালীর প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কস্তে গতকাল এক বিবৃতিতে ঘোষণা দিয়েছেন বৃহস্পতিবার হতে ফার্মেসি, খাবারের দোকান ও কিছু পণ্য পরিবহন গাড়ি ছাড়া সমস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নাইটক্লাব ১৪ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে। রেড জোন এলাকাগুলোতে যানবাহন চলাচল ও জনসাধারণের চলাফেরার সতর্ক দৃষ্টি রাখছে প্রশাসন।
শুধু তাই নয়, জরুরি কারণ ছাড়া বাসার বাইরে না যেতে ও বয়স্কদের বাসায় থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এমনকি কেউ কারো বাসায় যেতে পারবেনা।
গণপরিবহনে যাতায়াতে সবাইকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বলা হয়েছে। চালকের পেছন হতে প্রথম চার সিটে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে।
এদিকে রোম শহরে একজন ও ভেনিসে দুজন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।
ইতালির বিভিন্ন শহর হতে বিভিন্ন দেশের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। সবার মাঝে আতংক বিরাজ করছে। মার্কেটগুলোতে খাদ্য সামগ্রী কেনাকাটায় ব্যাপক ভিড় হয়েছে।
গতকাল এমিরেটসের শেষ ফ্লাইটটি ভেনিস এয়ারপোর্ট থেকে ৩ টা ২৫ মিনিটে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এরপর কবে নাগাদ ফ্লাইট চালু হবে তা জানা যায়নি। তবে বাংলাদেশে যাওয়ার সময় ভেনিস এয়ারপোর্টে ২ জন বাংলাদেশি যাত্রীর গায়ে জ্বর থাকায় তাদের আটকে দেয়া হয়।
করোনা ঠেকাতে অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করল শ্রীলংকা
বিদেশি পর্যটকদের জন্যে অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা স্থগিত করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। করোনাভাইসরাসের বিস্তার প্রতিরোধে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শ্রীলংকায় বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ। কাজেই যে সকল বাংলাদেশি শ্রীলংকা ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন তারা যাত্রা স্থগিত করতে হবে। দেশটিতে কভিড-১৯ এ প্রথম আক্রান্তকে শনাক্তের পরই সরকারের পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা আসলো।
শ্রীলংকা সরকারের তথ্য বিভাগ গতকাল এক বিবৃতিতে জানায়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শ্রীলংকা সরকার অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা বাতিল করেছে।
একইসঙ্গে সরকার সকল শ্রীলংকানকে বিদেশে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা কেবল ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইরান থেকে আগত শ্রীলংকানদের জন্যেই গৃহীত হবে না, বরং শ্রীলংকায় আসা সকল বিদেশিদের জন্যেও প্রযোজ্য হবে।
এর আগেও দেশটিতে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে অন অ্যারাইভাল ভিসা বাতিলের চর্চা দেখে গেছে। গত বছরের ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডে’তে গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলার পর একই সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
গতকাল বুধবার শ্রীলংকায় প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। বায়ান্ন বছর বয়সী ওই রোগী ট্যুরিস্ট গাইড হিসেবে কাজ করতেন। সম্প্রতি ইতালি থেকে আগত একদল পর্যটকের গাইড হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
শ্রীলংকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক ইতালিয়ান নারী এবং তার স্বামী করোনায় আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হয়। তাদের অনুরাদাপুরা টিচিং হসপিটালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
সূত্র: কলম্বো পেজ
করোনাভাইরাস
স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ-সমাবেশ স্থগিত
করোনাভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কুচকাওয়াজ ও সব ধরনের সমাবেশ স্থগিত করেছে সরকার।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সংশোধিত জাতীয় কর্মসূচি থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশোধিত কর্মসূচি জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কাছে পাঠানো হয়েছে।
সংশোধিত কর্মসূচিতে জানানো হয়েছে, ২৬ মার্চ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সীমিতসংখ্যক আমন্ত্রিত ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সব রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে সীমিত আকারে পুস্পস্তবক অর্পণের জন্য অনুরোধ করা যেতে পারে। সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন (ওইদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে)। ২৬ মার্চ সারাদেশে জেলা ও উপজেলায় সীমিত উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। তবে কুচকাওয়াজ ও সমাবেশ স্থগিত থাকবে বলে কর্মসূচিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলা ও উপজেলা সদরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার বিষয়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ স্থগিত করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল ও উপহার পাঠানো যেতে পারে।