কমলগঞ্জে সবুজ সমারহের চা বাগানগুলোতে চলছে ফাগুয়া উৎসব
সজীব দেবরায়,মৌলভীবাজার ।। বসন্তের রঙ লেগেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সবুজ সমারহের বিভিন্ন চা বাগানে। বসন্তের রঙ-রূপে নতুন হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। আগাম বৃষ্টিতে চা-বাগানের দৃশ্য সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে। চির সবুজ চা বাগান গুলোর সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত চা শ্রমিকদের শারদীয় দুর্গোৎসবের পর সবচেয়ে বড় উৎসব হলো দোল পূর্নিমার দোল উৎসব। তবে চা শ্রমিকদের ভাষায় এটি রঙের পরব বা ফাগুয়া।
চা শ্রমিকরা কাঁদা ও রঙ খেলার মাধ্যমে ফাগুয়া উৎসব উদযাপন করে থাকেন।
রঙ খেলার অংশ হিসেবে লাল আবির রঙসহ নানা রঙ মাখামাখি করেন চা শ্রমিকরা। বিভিন্ন রঙ গুলে পিচকারি দিয়ে একে অন্যের গায়ে মাখামাখি করেন। প্রাচীনকাল থেকে চা বাগানগুলোতে ফাগুয়া উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এটি চা শ্রমিকদের একটি প্রাণের উৎসব। ফাগুয়া উৎসবে চা বাগান কর্তৃপক্ষ চা শ্রমিকদের সাধারণ ছুটি দিয়ে থাকেন। সব কিছু ভুলে গিয়ে সকল চা শ্রমিক পরিবার এক হয়ে চা বাগানে উৎসবটি পালন করেন। কাঁদা খেলার পর মঙ্গলবার সকাল থেকে কমলগঞ্জের ২২টি চা বাগানে চলছে ফাগুয়া উৎসব। বুধবার রাত পর্যন্ত চলবে এই উৎসবটি।
এদিকে, শমশেরনগর চা বাগানের ফাঁড়ি বাগান কানিহাটিতে ছাত্র, যুবক ও চা শ্রমিক মিলে যৌথভাবে মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ফাগুয়া উৎসব পালন করেছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কানিহাটি অফিস টিলায় পঞ্চায়েত সদস্য গৌরি শংকর মৃধার সভাপতিত্বে ও রাধে শ্যাম বীনের সঞ্চালনায় ফাগুয়া উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য ও মাসিক চা মজদুর পত্রিকার সম্পাদক সীতারাম বীন, সাংবাদিক মুজিবুর রহমান । আলোচনা সভা শেষে কানিহাটি চা বাগানের চা ছাত্র-যুবকরা এসে প্রধান অতিথির গায়ে আবির রঙ দিয়ে উদ্বোধন করে ফাগুয়া উৎসবের। এরপর চা শ্রমিক সন্তানদের অংশ গ্রহনে নিজেদের উৎসবের গান গেয়ে গেয়ে শুরু হয় কাটি নৃত্য। এই ফাঁকে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত চা শ্রমিক সন্তান ছাত্র-ছাত্রী, যুবক ও নারী-পুরুষ চা শ্রমিকরা নেচে গেয়ে একে অন্যের গায়ে রঙ মাখে।
আয়োজকদের পক্ষে রাধে শ্যাম বীণ বলেন, মধ্য রাত পর্যন্ত চলবে রঙ খেলা ও নাচ গান। বুধবার রাতে এ উৎসব সমাপ্ত হবে। কমলগঞ্জের অন্যান্য চা বাগানগুলোতেও নাচ ও গানের মাধ্যমে চলছে ফাগুয়া উৎসব।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাম ভজন কৈরী বলেন, সারা বাংলাদেশের চা বাগানগুলোর মতো কমলগঞ্জের চা বাগানগুলোতেও ফাগুয়া উৎসব পালিত হচ্ছে। চা শ্রমিকদের জীবনটাই দুঃখ কষ্টের। আর যখন দোল পূর্নিমা আসে তখন চা শ্রমিকরা সকল দুঃখ কষ্ট ভুলে গিয়ে রঙ খেলা বা ফাগুয়া উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে উঠেন। এ উৎসব শেষে আবার চা শ্রমিকরা মেনে নিবে তাদের দুঃখ কষ্টের জীবন।
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান