দেশের সংবাদ ফিচার্ড

ইকবালের ‘দোষ স্বীকার’, মোটিভ নিয়ে নানা আলোচনা

পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে অবমাননার ঘটনার মূলহোতা ইকবাল হোসেন

ইকবালের ‘দোষ স্বীকার’, মোটিভ নিয়ে নানা আলোচনা

জাহিদ হাসান, কুমিল্লা থেকে ।। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার দায় স্বীকার করেছে ইকবাল। গতকাল দুপুরে তাকে কক্সবাজার থেকে কুমিল্লায় আনা হয়। কুমিল্লা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল দায় স্বীকার করে। নগরীর নানুয়া দীঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে অবমাননার ঘটনার মূলহোতা ইকবাল হোসেনকে গত বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সুগন্ধা বিচ এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কক্সবাজার থেকে কড়া পুলিশ পাহারায় তাকে কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম. তানভীর আহমেদ উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, আমরা ইকবাল হোসেনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানাবো। পুলিশের অপর একটি সূত্র জানায়, ইকবালকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
ইকবালকে দুপুর ১২টা ৫ মিনিটের দিকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসা হয়।

সেখানে শুধু ফটো সেশনের জন্য তাকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। এ সময় জেলা পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের ঘটনায় সিসি টিভির ফুটেজে ধরা পড়া ব্যক্তিই কক্সবাজারে আটক হওয়া ইকবাল হোসেন বলে নিশ্চিত করেন। দুপুর থেকেই পুলিশ-গোয়েন্দা সংস্থার চৌকস টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। কক্সবাজার জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, কুমিল্লা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার দিনভর ইকবাল কক্সবাজারের সুগন্ধা বীচে এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করে। নোয়াখালী থেকে সুগন্ধা বীচে বেড়াতে যাওয়া তিন যুবক ইকবালকে সন্দেহ করে তারা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। খবর পেয়ে রাতেই কক্সবাজার পৌঁছে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল। কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, কক্সবাজারে গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনই কুমিল্লার পূজামণ্ডপকাণ্ডে সিসি টিভি ফুটেজে ধরা পড়া সেই ইকবাল। তদন্তের স্বার্থে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হবে বলেও তিনি জানান।

পূজামণ্ডপে হামলার সময় আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু: কুমিল্লায় সহিংসতার সময় ইটের আঘাতে আহত দিলীপ কুমার দাস বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। ১৩ই অক্টোবর তিনি নগরীর মনোহরপুর এলাকার রাজ রাজেশ্বরী কালীবাড়ি মন্দিরের ফটকে ইটের আঘাতে আহত হন। দিলীপের বাসা নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানাসংলগ্ন পানপট্টি এলাকায়। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা বিষু লাল দাসের ছেলে। নিহত দিলীপ কুমার দাসের ভাতিজা শান্ত কুমার দাস জানান, দুই দফা অস্ত্রোপচারের পরও তার চাচাকে বাঁচানো যায়নি। গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত হয়। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। সন্ধ্যায় কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম বলেন, ঢাকায় একজন মারা গেছে বলে শুনেছি। তবে অভিযোগ পাইনি।

আলোচনায় সিসিটিভি ফুটেজ: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা জেলা পুলিশের ডিআইও (জেলা গোয়েন্দা কর্মকর্তা) মনির আহম্মদ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ গণমাধ্যমে পাঠান। ১৬ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের ফুটেজ ও এর বর্ণনায় উল্লেখ আছে, ইকবাল প্রায়ই মাজারে যাতায়াত করতো। ঘটনার আগের দিনও ১২ই অক্টোবর দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টা ৪২ মিনিটে তাকে দারোগাবাড়ি মাজারে দেখা গেছে। ফুটেজে দেখা গেছে, মাজারের খেদমতকারী ফয়সল ও হাফেজ হুমায়ুন মসজিদে প্রবেশ করেন। এরপর ইকবাল মসজিদে প্রবেশ করে। ইকবাল তাদের পাশে বসে। এরপর মাজারের উত্তর দিকে চলে যায়। হাফেজ হুমায়ুন ছিলেন সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা। তিনি আগে মাজার থেকে বের হয়ে যান। পরে খাদেম (কালো পোশাক পরা) ফয়সল বের হন। পরে ইকবাল দানবাক্সের ওপর থেকে কোরআন শরীফ নিয়ে মেঝেতে বসে। এরপর কোরআন শরীফ হাতে নিয়ে মাজারের উত্তর পাশের সড়ক দিয়ে চলে যায়।

 

এসএস/সিএ


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

 

সংবাদটি শেয়ার করুন