ফিচার্ড বিশ্ব

কিয়েভে ভৌতিক পরিবেশ, স্থানীয়রাই পাহারা দিচ্ছেন

কিয়েভে ভৌতিক পরিবেশ, স্থানীয়রাই পাহারা দিচ্ছেন

খাঁ খাঁ করছে ইউক্রেনের সুপারমার্কেট চেইনগুলো। কিছুই নেই তাকে। শূন্য তাক দাঁড়িয়ে আছে ভৌতিক পরিবেশে। স্পেন থেকে মাংস, ফ্রান্স থেকে পনির, সুইজারল্যান্ড থেকে চকোলেট আর থাইল্যান্ড থেকে আম গিয়েছে গত সপ্তাহে- যুদ্ধ শুরুর ঠিক আগে। এসবই পড়ে আছে কিয়েভের পেচারস্কি এলাকার একটি সুপারমার্কেট চেইন সিলপো’র তাকে। ফুরিয়ে গেছে সস্তা দামের সব পণ্য। কোনো পাউরুটি, সবজি, তেলজাতীয় কোনো পণ্য, মাংস বা সস কিছুই নেই অবশিষ্ট। সিলপো থেকে খুব বেশি দূরে নয়, এমন একটি ফার্মাসির দরজার কাছে ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন এক ডজন মানুষ।

আগের রাতে কিয়েভে তুষারপাত হয়েছে। এ সময়ে তা গলে যাচ্ছিল। ড্রোন উড়ে যাচ্ছে। তার মধ্য দিয়ে পাখিদের কিচিরমিচির শোনা যাচ্ছে। ওই ফার্মাসির দরজায় দাঁড়িয়ে ৭৯ বছর বয়সী সাবেক একজন অগ্নিনির্বাপণকারী লিওনিদ গোনছারেঙ্কো। তিনি আল জাজিরাকে বলেছেন- ফার্মাসি থেকে একজন করে বের হচ্ছেন। আর একজন প্রবেশ করছেন। লিওনিদের কিছু পিল আর ডায়াবেসিটের ওষুধ প্রয়োজন। হার্টেও সমস্যা আছে। তিনি এসবের ওষুধ কিনতে দীর্ঘ ধৈর্য্য ধরে দাঁড়িয়ে আছেন।

এসব ওষুধের দোকান, সুপারমার্কেট বা মনোহারি দোকানের সামনে কিছু মানুষের ভিড় থাকলেও রাস্তাঘাট রয়েছে একেবারে ফাঁকা। বোমা হামলা থেকে রক্ষা পেতে মেট্রো স্টেশনের আন্ডারগ্রাউন্ডে আশ্রয় নিয়েছে অনেক মানুষ। তারা মাঝেমাঝে বেরিয়ে আসছেন। উঁকি দিচ্ছেন। আবার মাটির পোকাদের মতো ডুব দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছেন আশ্রয়স্থলে। সচেতন, অস্ত্রধারী সামরিক কর্মকর্তারা খাকি পোশাকে এবং মুখে মাস্ক পরে সতর্ক প্রহরায় সেখানে। কে ওই স্টেশনের ভিতরে প্রবেশ করছে, তা শনাক্ত করছেন তারা।

একই রকম আরেকটি গ্রুপের সার্ভিসম্যানরা বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ও ট্রাক থামিয়ে তাদের চেক করছেন। গাড়িচালক এবং পথচারীরা তাদের আইডি কার্ড প্রদর্শন করছেন। ব্যাগ এবং কারের বুট খুলে সব দেখাচ্ছেন তাদের। একজন সার্ভিসম্যান আল জাজিরাকে বলেছেন, এরই মধ্যে কিয়েভের ভিতরে রাশিয়ার স্পাই বা গোয়েন্দারা প্রবেশ করেছে। তারা কৌশলগত স্থাপনা নির্ধারণ করছে। তাদেরকে খুঁজে বের করে আমরা আটক করছি।

কিয়েভের প্রায় প্রতিটি এপার্টমেন্ট ভবনে নিজস্ব চ্যাটরুম খুলেছে। সেখানে খোলা হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ বা ভাইবার। এর মধ্য দিয়ে অধিবাসীরা খবর, বিভিন্ন তথ্য এবং গুজব বিনিময় করছেন। একজন বয়স্ক মানুষ বসে আছেন একটি বেঞ্চের ওপর। একজন আগন্তুক কারো দরজায় নক করছেন। দেখতে বিদেশি এমন এক ব্যক্তি ছবি তুলছেন। সবাইকে দেখেই সন্দেহ হয়। এমন ব্যক্তিকে দেখেই এলাকার বিভিন্ন গ্রুপ দৌড়ে যাচ্ছেন তার বা তাদের কাছে। জানতে চাইছেন তারা সেখানে কি করেন। ওই এলাকার ৫তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে বসবাস করেন ৩৪ বছর বয়সী তেতিয়ানা ডোবুঝানস্কা। তিনি বলেন, এখন এসবই আমাদের নাগরিক দায়িত্ব। আমাদেরকে নজরদারি করতে হচ্ছে।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং কিয়েভভিত্তিক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব কিয়েভ-মোহিলা একাডেমির লেকচারার কাতেরিনা শিনকারুক বলেন, ইউক্রেনে এখন কোনো কিছুই আর স্বাভাবিক নেই। নাটকীয়ভাবে পাল্টে গেছে সব।

 





সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন