জাতিসংঘ পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য প্রবাসের সংবাদ ফিচার্ড

জলবায়ু ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে এক ঐতিহাসিক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ

জলবায়ু ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে এক ঐতিহাসিক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ

নিউইয়র্ক, ২৯ মার্চ ২০২৩, আজ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের ক্ষেত্রে দায়ী রাষ্ট্রগুলির আইনগত বাধ্যবাধকতার বিষয়ে পরামর্শমূলক মতামত প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে অনুরোধ করে একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশসহ ১৭-সদস্য বিশিষ্ট কোর গ্রুপ দ্বারা উত্থাপিত এই প্রস্তাবটি জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং ন্যায্যতার পক্ষে সমর্থনকারী দেশগুলির জন্য একটি যুগান্তকারী অর্জন।

কোর গ্রুপের পক্ষে রেজুল্যুশনটি সাধারণ পরিষদে উত্থাপন করে ভানুয়াতুর প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা করার নিমিত্ব এই রেজুল্যুশনে মানবাধিকার আইনসহ বিদ্যমান আন্তর্জাতিক সকল আইন, স্বীকৃত নীতিমালার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দায়ী দেশগুলির আইনি বাধ্যবাধকতার উপর পরামর্শমূলক মতামত প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে অনুরোধ করা হয়। কার্বন নিঃসরণের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে সুরক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনি পরিণতি সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার জন্যও এই রেজুল্যুশনে অনুরোধ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে।

সাধারণ পরিষদে রেজুল্যুশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণের জন্য আয়োজিত উচ্চ অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব প্রদান করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ধ্বংসাত্মক ও অপরিবর্তনীয় হুমকির বিষয়ে স্পষ্ট সতর্কতা সত্ত্বেও মানবতার বেঁচে থাকার জন্য যে মাত্রায় বৈশ্বিক উদ্যোগ প্রয়োজন, তার ধারে কাছেও নেই বিশ্ব সম্প্রদায়। এই রেজুল্যুশন এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কর্তৃক পরামর্শমূলক মতামত ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে  দায়ী দেশগুলির আইনি বাধ্যবাধকতা, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির অধিকার এবং জলবায়ু পরিবর্তন থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করার জন্য মানব সভ্যতাকে আরও সম্যক ধারণা দিয়ে তাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

আদালতের পরামর্শমূলক মতামতের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব তার বক্তব্যে বলেন যে, এই ধরনের পরামর্শমূলক মতামত জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলিকে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় আরো সাহসী এবং শক্তিশালী ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে। রেজুল্যুশনটি সদস্য দেশগুলির পাশাপাশি জলবায়ু কর্মী এবং যুব সমাজসহ আন্তর্জাতিক সুশীল সংস্থাগুলির কাছ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছে।

ভানুয়াতুর আহবানে প্রতিষ্ঠিত কোর গ্রুপটি রেজুল্যুশনের খসড়া প্রণয়ন থেকে প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে গ্রহণ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া জুড়ে অত্যন্ত সক্রিয় ছিল। খসড়া রেজুল্যুশনের উপর তারা জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের অংশ গ্রহণে উন্মুক্ত এবং স্বচ্ছ পদ্ধতিতে একাধিকবার অনানুষ্ঠানিক সভা করেছে। বাংলাদেশ, কোর গ্রুপের সদস্য হিসেবে, খসড়া প্রণয়ন ও নেগোশিয়েশন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি আউটরিচ প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে নিযুক্ত ছিল।

“এটি জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য একটি কালজয়ী মুহূর্ত। আমরা পুরো প্রক্রিয়া জুড়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অসীম আগ্রহ ও সম্পৃক্ততার জন্য কৃতজ্ঞ, যা জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় তাদের গভীর অঙ্গীকারের সাক্ষ্য দেয়”-বলেছেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহিত, যিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের কাছ থেকে সমর্থন অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।

রেজুল্যুশন গৃহীত হওয়ার পর আজ সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র সচিব ভানুয়াতু কর্তৃক আয়োজিত এক সংবর্ধনায় অংশ নেন।

 

 


এস.এস/সিএ


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন