বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী লেখালেখি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ

জাতির-জনক-বঙ্গবন্ধু-শেখ-মুজিবুর-রহমান

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ

বিদ্যুৎ ভৌমিক

২০২০ সালের ১৭ মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী । সমগ্র দেশ ও জাতি বিনম্র শ্রদ্ধার সহিত বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী পালন করছে । বাংলাদেশের অভ্যূধ্যয়ে যে মহান মানুষটি তার জীবনের সর্বস্ব উজাড় করে পৃথিবীর ইতিহাসে একটি নতুন দেশ উপহার দিয়েছেন ,সেই স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও  জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করছি। মুজিববর্ষ শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছিল ব্যাপক আকারে। সে অনুযায়ী সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিশাল কর্মযজ্ঞেরও আয়োজনও চলছিল। কিন্তু বাদ সাধে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। বৃহত্তর জনস্বার্থের কথা চিন্তা করেই মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পুনর্বিন্যস্ত হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের জমকালো উদ্বোধন অনুষ্ঠানও। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে এই অনুষ্ঠান আবারও করা হবে । জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে পুরো বর্ষজুড়েই উৎসবমুখর নানা আয়োজন ও কর্মসূচি থাকবে সারাদেশে ও প্রবাসে। গোটা জাতি বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাদের আস্থার প্রতীক স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে ।

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ  তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মায়ের নাম সায়েরা খাতুন।তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন গোপালগঞ্জ দেওয়ানি আদালতের সেরেস্তাদার। মুজিব ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন।  স্কুল জীবন থেকেই মুজিবের মধ্যে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের গুণাবলীর বিকাশ ঘটে । তিনি যখন গোপালগঞ্জ মিশনারী স্কুলের ছাত্র সে সময় একবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ.কে ফজলুল হক ও খাদ্যমন্ত্রী এইচ. এস সোহরাওয়ার্দীর ঐ স্কুল পরিদর্শনে আসেন (১৯৩৯)। শোনা যায়, ঐ অঞ্চলের অনুন্নত অবস্থার প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তরুণ মুজিব বিক্ষোভ সংগঠিত করেন এবং  মুখ্যমন্ত্রীর পথ রোধ করে দাড়িয়েছিলেন । স্কুলের প্রধান শিক্ষক খুব ভয় পেয়েছিলেন । মুখ্যমন্ত্রী এ.কে ফজলুল হক তরুন ও প্রতিবাদী বালক মুজিবের সৎসাহস দেখে খুশীই হয়েছিলেন এবং ১২০০ টাকা মঞ্ছুর করেন । মুখ্যমন্ত্রী এ.কে ফজলুল হক ও খাদ্যমন্ত্রী এইচ. এস সোহরাওয়ার্দীর তখনই বুজতে পেরেছিলন,এ  তরুণ বালকের মধ্যে দেশমাতৃকার ভবিষ্যৎ নেত্যৃত্ব লুকিয়ে ছিল । সত্যিই তাই হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর পিতামাতা লুৎফর-সায়েরা দম্পতির এ উজ্ঞল সন্তানই পরে এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা ও মুক্তির ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন। মধুমতি, বাইগার নদীতে সাঁতার কেটে কেটেছে যার দুরন্ত শৈশব। সময়ের পরিক্রমায় এই খোকাই একদিন হয়ে উঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। টুঙ্গিপাড়ার অন্যায় ও অবিচারের বিরুদদে প্রতিবাদী বালকটি  হয়ে ওঠেন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  ।

পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর দায়িত্ব নেয়ার মতো মহান গুণ হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  শৈশব থেকেই। মুষ্টি ভিক্ষার চাল উঠিয়ে গরিব ছেলেদের বই এবং পরীক্ষার খরচ বহন করা, বস্ত্রহীন পথচারী শিশুকে নিজের নতুন জামা পরাতেন। রাজনৈতিক দীক্ষাও নেন স্কুল জীবনেই। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের সময়ের কথা বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে নিজেই তুলে ধরেছেন- ‘দিন রাত রিলিফের কাজ করে কুল পাই না। লেখাপড়া মোটেই করি না। কলকাতা যাব, পরীক্ষাও নিকটবর্তী। আব্বা একদিন আমাকে ডেকে বললেন, ‘বাবা রাজনীতি কর, আপত্তি করব না। পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছ, এত সুখের কথা। তবে লেখাপড়া না শিখলে মানুষ হতে পারবা না।’ –

ম্যাট্রিক পাশের পর শেখ মুজিব কলকাতায় গিয়ে ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন । সেখান থেকেই তিনি আই.এ ও বি.এ পাশ করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র-সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন । ভারত বিভাগের (১৯৪৭) পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অধ্যয়নের জন্য ভর্তি হন । তবে পড়াশুনা শেষ করতে পারেন নি । কারণ যে মুজিবের শিরা উপশিরায় অন্যায়/অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের  বীজ লুকিয়ে আছে সে কি চুপ থাকতে পারে । বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি দাওয়ার প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ঔদাসীন্যের বিরুদ্ধে তাদের বিক্ষোভ প্রদর্শনে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে ১৯৪৯ সালের প্রথমদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন ভাষা আন্দোলনের প্রথম কারাবন্দীদের একজন (১১ মার্চ ১৯৪৮)।

১৯৫৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ভাষার প্রশ্নে তাঁর প্রদত্ত ভাষণ ছিল উল্লেখযোগ্য । মাতৃভাষায় বক্তব্য রাখার অধিকার দাবি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, “আমরা এখানে বাংলায় কথা বলতে চাই । আমরা অন্য কোনো ভাষা জানি কি জানি না তাতে কিছুই যায় আসে না। যদি মনে হয় আমরা বাংলাতে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি তাহলে ইংরেজিতে কথা বলতে পারা সত্ত্বেও আমরা সবসময় বাংলাতেই কথা বলব । যদি বাংলায় কথা বলতে দেওয়া না হয় তাহলে আমরা পরিষদ থেকে বেরিয়ে যাবো । কিন্তু পরিষদে বাংলায় কথা বলতে দিতে হবে । এটাই আমাদের দাবি।“ ১৯৫৫ সালের ২৫ আগস্ট গণপরিষদে প্রদত্ত আরেক ভাষণে শেখ মুজিব পূর্ববঙ্গের নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান রাখার প্রতিবাদে যে বক্তব্য রাখেন তাও এখানে দেওয়া হল ,‘স্যার, আপনি লক্ষ্য করে থাকবেন যে, তারা পূর্ববঙ্গের স্থলে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ বসাতে চায় । আমরা বহুবার দাবি জানিয়ে এসেছি যে, [পূর্ব] পাকিস্তানের পরিবর্তে আপনাদের পূর্ব [বঙ্গ] ব্যবহার করতে হবে। ‘বঙ্গ’ শব্দটির একটি ইতিহাস আছে, আছে নিজস্ব একটি ঐতিহ্য…’।

১৯৬৬ সালের ৭ জুন স্বাধীনতার মহান স্হপতি ও জাতির জনক রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  বাঙালি জাতির বাঁচার দাবী ও মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষনা করেন । সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর ঘোষিত ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণ-আন্দোলনের সূচনা হয় । ১৯৬৬ সালের ৭ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবীর পক্ষে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে টঙ্গী, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে তৎকালীন স্বৈরাচারী আইউব/মোনায়েম সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ ও ইপিআরের গুলিতে মনু মিয়া, শফিক, শামসুল হকসহ ১১ জন বাঙালি শহীদ হন । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘোষিত ৬ দফা দাবির মুখে পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক ও পাকিস্তানের প্রসিডেন্ট আইয়ুব খান এতই বিচলিত ও ক্রুদ্ধ হয়ে পড়েন যে, তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ৬ দফা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে অস্ত্রের ভাষায় জবাব দেওয়া হবে । বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ৬ দফা একটি আলোকিত মাইলফলক হিসাবে জাতিকে প্রেরনা যোগাবে । ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে তাঁর বিখ্যাত ছয়দফা কর্মসূচী ঘোষণা করেন এবং তিনি এই ছয় দফাকে বাঙালি জাতীর মুক্তি সনদ রূপে আখ্যায়িত করেন । সকল রাজনৈতিক দলের রক্ষণশীল ডান সদস্যরা এ কর্মসূচীকে আতঙ্কের চোখে দেখলেও এটা তরুণ সমাজ বিশেষত ছাত্র, যুবক,কৃষক এবং শ্রমজীবি মানুষের মধ্যে নূতন জাগরণের সৃষ্টি করেছিল । প্রকৃতপক্ষে ছয়-দফা কর্মসূচীর মধ্যেই কার্যত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জন্য স্বাধীনতার অমৃতময় বীজ নিহিত ছিল । বাঙালি জাতির বাচার অধিকারের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এমন  ত্যাগ, বীরত্ব, সাহসীকতার সাথে পালন করেছেন যে, যিনি ২৪ বছরের পাকিস্তানি শাসনামলের প্রায় বারো বছর জেলে কাটিয়েছেন । বারো বছর জেলে এবং দশ বছর কড়া নজরদারীতে থাকার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাছে পাকিস্তানকে নিজের স্বাধীন বাসভূমির পরিবর্তে বরং কারাগার বলেই মনে হতো ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তৎকালীন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের অত্যাচারী ও স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া শেষ পর্যন্ত সমগ্র পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকার করেন এবং নিরস্ত্র বাঙালির ওপর তিনি দমন অভিযান চালান ।  ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রমনার রেসকোর্সের জনসভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে পুরো বাঙালী জাতি মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল । ১৯ মিনিট স্থায়ী এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বজ্রকন্ঠে ঘোষনা করেছেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধুর এই তেজদিপ্ত-বজ্রকন্ঠের ঘোষণার মধ্যেই মূলত নিহিত ছিল আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ । ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের কালো রাতে বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তানী হানাদারবাহিনী সব মূল্যবোধ ও ন্যায়নীতি লঙ্ঘন করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরস্ত্র ও নিরপরাধ বাঙালীর ওপর। সেদিন বঙ্গবন্ধুর এই তেজদিপ্ত-বজ্রকন্ঠের ঘোষণায় সারা দিয়ে‘যার যা আছে তাই নিয়ে’ বাংলাদেশের কৃষক,শ্রমিক ও ছাএ জনতা আমাদের প্রানপিয় মাতৃভূমিকে রক্ষাকরার বলিষঠ চেতনায় উদবুদধ হয়ে স্বা‌ধীনতার মশাল ও অস্ত্র হাতে নিয়ে হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দীর্ঘ নয় মাসের নিরন্তর মুক্তির লড়াইয়ের পর বিজয়ী হয় বাঙালী জাতি। আমরা ছিনিয়ে এনেছি অামাদের মহান স্বাধীনতা, আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ । পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও এ ঐতিহাসিক ভাষণ প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে । তাঁর এই ভাষণকে বিশ্বের ইতিহাসের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণের মধ্যে একটি অন্যতম ভাষণ বলে গণ্য করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের বিভিষিকাময় রাতে স্বাধীন দেশের মহান স্থপতি ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ঘটনাটি ছিলো একাধারে নৃশংস, কাপুরুষোচিত ও বীভৎস – গোটা জাতি হয়েছিলো স্তম্ভিত । বীরত্ব, সাহস ও তেজস্বীতার স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের  ছিলেন ভাস্বর । স্বাধীনতার মহান স্থপতি হিসাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংগালী জাতির জন্য সম্ভাবনার অসীম দিগন্ত উন্মোচন করিয়া গিয়াছেন । কিন্তু আজ বঙ্গবন্ধু নেই। তার সপ্ন এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আজ অাংশিকভাবে পূরণ হয়েছে ।  জাতীসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে ঘোষণা করেছে । বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীরা তাঁরই জেষ্ঠা কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বর্তমান সরকার টানা তৃতীয়বারের মতো দেশ পরিচালনা করছে । আমরা মনে করি, সরকারের সামনে প্রধান কাজটিই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া ।

২০০৪ সালে বিবিসি’র বাংলা রেডিও সার্ভিসের পক্ষ থেকে সারা বিশ্বে যে জরিপ চালানো হয়, তাতে মুজিব সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচিত হন।জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে কিউবার রাষ্ট্রপতি ফিদেল ক্যাস্ত্রো বঙ্গবন্ধুকে আলিঙ্গন করে বলেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি।’
আজ  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর দিনে আমরা পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি এই মহান নেতাকে। বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করি দেশমাতৃকার জন্য তাঁর কাজ,  আত্বত্যাগ, তাঁর সৎসাহস ও সুমহান আদর্শকে ।

আজ কানে বারংরার যেন বেঝে উঠছে-

“যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা যমুনা গৌরী বহমান,

ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান “

বিদ্যুৎ ভৌমিক।। সাবেক অধ্যাপক, লেখক ও সিবিএনএ’র উপদেষ্টা ।। মন্ট্রিয়ল, ক্যানাডা ১৬ মার্চ, ২০২০ খ্রী:

 

 



 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 1 =