দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এবং নাগরিক দায়িত্ব!
শিব্বীর আহমেদ: দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০০৬ সালে ছিল ৩.৪৮ বিলিয়ন ডলার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব গ্রহন করার পর দেশের রিজার্ভ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে পৌঁছায়। ২০০৬ সালে বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৩,৬০০ মেগাওয়াট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব গ্রহন করার পর বিদ্যুৎখাতের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। ফলে ২০১৮ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এসে দাঁড়ায় ২০,৪৩০ মেগাওয়াটে। সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে যায়। শহর থেকে গ্রামে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে যাবার ফলে গ্রামের হারিকেন, কেরোসিনের চিমনি যাদুঘরে চলে যায়। অটোরিকশায় ছেয়ে গেছে গ্রামের রাস্তা-ঘাট। ঘরেঘরে বিদ্যুৎ, টেলিভিশন, ফ্যান সবই পৌঁছে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও সঠিক নেতৃত্বে।
মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উচ্চ মধ্যবিত্ত আয়ের দেশে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোলমডেল হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই হয়ে ওঠেন রোলমডেল। বিশ্ব আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করতে শুরু করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বাধা হয়ে আসে ভয়াল করোনা মহামারি আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক সিদ্ধান্ত আর বলিষ্ঠ পদক্ষেপে এখনো বাংলাদেশ তার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে।
অর্থনৈতিক মন্দায় যখন সারাবিশ্ব টালমাটাল। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা এবং মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশ যখন দেউলিয়া হতে বসেছে তখন বাংলাদেশের মত একটা উন্নয়নশীল দেশে এর ঢেউ লাগবেই। রিজার্ভ এসে দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়নের কোঠায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি, যা চাহিদার তুলনায় কম। ফলে লোড শেডিং বাড়ছে। বৈরি আবহাওয়ায় যখন দেশের মানুষের অবস্থা বেহাল ঠিক এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক পদক্ষেপে দেশের অর্থনীতি এখনো সচল রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এখনো অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, যা অনেকের চোখের কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। ফলে শুরু হয়েছে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র।
অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়েই আসছে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখেই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র সরব হয়ে উঠতে শুরু করেছে। যা ইতিমধ্যেই সবার দৃষ্টি গোচর হয়েছে বলেই আমার বিশ্বাস। কিন্তু মনে রাখতে হবে বিদেশিরা যা করে তা তারা তাদের স্বার্থেই করে। এতে দেশের মানুষের উৎসাহিত হবার কোন কারন নাই। কিন্তু দেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের সিদ্ধান্তে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী চক্র মহাখুশি। এরা চায়না দেশ এগিয়ে যাক।
কিন্তু দেশ এবং দেশের মানুষকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যত বাধাই আসুক, দেশের স্বার্থে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সময় এখন দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে আগামীর বিশ্বের জন্য দেশের তরুণ সমাজকে সজাগ থাকতে হবে।
বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৭,৩৬১ মেগা ওয়াট। গত ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ৯টায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে। এদিন বিদ্যুৎ বিভাগের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে আজ রাত (মঙ্গলবার) ৯টায়। এসময় ১৫ হাজার ৬২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এর আগেরদিন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল ১৫ হাজার ৬০৪ মেগাওয়াট।
কিন্তু এ বছর গ্রীষ্ম, সেচ মৌসুম এবং রোজা একসঙ্গে হওয়াতে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইতিহাসের ভয়াবহ দাবদাহ। ফলে অনেক জায়গাতেই অনিচ্ছাকৃত লোডশেডিং হচ্ছে। জনজীবনে স্বস্তি ফেরাতে বিদ্যুৎ বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। অচিরেই হয়ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কিন্তু যতক্ষণ না পর্যন্ত দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হচ্ছে, ততদিন দেশের নাগরিক হিসাবে আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল আচরনে সচেষ্ট থাকতে হবে।