দেশের সংবাদ

বরিশালের হাসপাতালে করোনা চিকিৎসাধীন ২ জনের মৃত্যু

করোনা ভাইরাসে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকের মৃত্যু দেশে করোনায় মৃত্যু

 

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শেবাচিমে মারা যাওয়াদের মধ্যে একজন নারী ও একজন পুরুষ।

এদের মধ্যে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩নং ওয়ার্ডের পুরানপাড়া এলাকার নিরু বেগমকে (৪৫) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তির কিছুক্ষণ পর মারা যান। নিরু বেগম পুরানপাড়া এলাকার মো. দুলালের স্ত্রী। তিনি ২ সন্তানের জননী ছিলেন। হাসপাতালে মারা যাওয়ার পরপরই স্বজনরা তার মৃত দেহ বাসায় নিয়ে যান।

রবিবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে করোনা ইউনিটে মারা যাওয়া অপর রোগী জাকির হোসেন (৪০) পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। হাসপাতাল সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পটুয়াখালী হাসপাতাল থেকে তাকে শেবাচিমে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে রবিবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, হাসপাতালে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ কোনো কিট নেই। তবুও রোগীর লক্ষণ দেখে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করা দু’জন রোগীরই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রোগীর মৃত্যুর পর বিষয়টি রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে পটুয়াখালী জেলার কালিকাপুর এলাকার বাদরবাড়ি সংলগ্ন নিজ বাসায় আব্দুর রশিদ (৬৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মোনায়েম জানান, শনিবার বিকেলে ঐ ব্যক্তির মৃত্যু হলে তার করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আব্দুর রশিদ ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে। সে পেশায় ভ্যান চালন ছিলেন এবং পটুয়াখালী কালিকাপুর এলাকায় মেয়ের কাছে বেড়াতে এসেছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

 

টানা দুইদিন দেশে করোনা আক্রান্ত নেই

২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আর কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। এছাড়া কোনো মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়নি।

রবিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এনিয়ে টানা দুইদিনে করোনায় কোনো আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়নি।

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরসহ ল্যাবগুলোতে ১০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে কারও শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়নি।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রয়েছেন ৪৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ জন।

আর এখন পর্যন্ত মারা গিয়েছেন পাঁচজন।

 

কোন প্রকার গুজবে কান দিবেন না : ওবায়দুল কাদের

obaidul-quader

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কোন ধরনের গুজবে কান না দিতে দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রবিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অতীত ইতিহাস থেকে লক্ষ্য করা যায়, এদেশের জনগণ সবসময় ধৈর্য্য ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করেছে। কোন দুর্যোগের কাছেই তারা পরাজিত হয়নি। আপনারা কোন প্রকার গুজবে কান দিবেন না।’

তিনি বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সমাজের ধনী ও বিত্তবানদের আহ্বান জানাই, মানবিক বিপর্যয়ের এই দিনে আপনারা যার যার অবস্থান থেকে জনগণের পাশে দাঁড়ান সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশের জনগণের সুখ-দুঃখ আবেগকে ধারণ করেই রাজনীতি করে। বৈশ্বিক এই সংকট মোকাবেলায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিকভাবে সকল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। গ্রহণ করছেন স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও কর্মসূচি। যতদিন এই সংকট থাকবে শেখ হাসিনার সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ততোদিন জনগণের পাশে থাকবে এবং সরকারের গৃহীত কার্যক্রম সারাদেশে অব্যাহত থাকবে।

 

খুলনায় করোনা ইউনিটে থাকা রোগীর মৃত্যু

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে থাকা এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার সকাল সোয়া ৯টায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত সুলতান শেখ (৭২) নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বাসিন্দা। গত শুক্রবার তাকে খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে রাখা হয়।

খুমেক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (মেডিসিন) ও করোনা ইউনিটের ফোকাল পারসন ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, সুলতান শেখ করোনা ইউনিটে ভর্তি থাকলেও তিনি যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

বিষয়টি ঢাকায় জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। সে কারণে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, মৃত সুলতান শেখ যক্ষ্মা রোগী ছিলেন। তার সঙ্গে করোনা ভাইরাসের কোনো সম্পর্ক নেই।

 

মানিকগঞ্জে ‘করোনায়’ নারীর মৃত্যু

মানিকগঞ্জে ‘করোনাভাইরাসে’ নারী মারা গেছেন। নিহত ওই নারীর নাম সুচিত্রা সরকার (২৬)। হরিরামপুর উপজেলার বড়ইছড়া গ্রামের মোদী দোকানদার নিতাই সরকারেরর স্ত্রী সুচিত্রা সরকার একজন গৃহিণী।

আজ (রবিবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মুন্নু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই হাসপাতালে উপ-পরিচালক এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। নিহত সুচিত্রা সরকার ৭দিন ধরে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট এবং ২দিন ধরে পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত ছিল। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ৭দিন আগে ওই নারীর শ্বশুর মারা যান। তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অনেক লোক সমাগম হয়েছিল। সেইখানে আসা কোন ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি আক্রান্ত হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এব্যাপারে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কিনা- তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নমুনা সংগ্রহ করা হযেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য এবং তাদের নিকটতম প্রতিবেশীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালকে বিশেষ নজরদারিতে এবং রোগীর সংস্পর্শে আশা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। পরীক্ষায় করোনা ভাইরাস শনাক্ত হলে, নিহত ওই ব্যক্তির পুরো গ্রামকেই লকডাউন করা হবে বলে জানান তিনি।

সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক

 

বাঅ/এমএ



সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + 3 =