ফিচার্ড বিশ্ব

বাড়ি নয়, যেন রহস্যে ঘেরা ‘মৃত্যুপুরী’!

বাড়ি নয়, যেন রহস্যে ঘেরা ‘মৃত্যুপুরী’!

বাড়িটির উচ্চতা প্রায় ৭০ ফুট। লম্বায় ৫০ ফুট এবং চওড়া প্রায় ৪০ ফুট। গুদামের মতো আয়তনের ওই বাড়িতে রয়েছে একটি বারান্দা। তবে ওই বারান্দায় পৌঁছনোর কোনো সিঁড়ি দেখা যায়নি। বাড়িতে বাইরে থেকে প্রবেশের জন্য রয়েছে একটিমাত্র দরজা। এ ছাড়া কোনো জানালা বা ভেন্টিলেটর দেখতে পাওয়া যায়নি। বাড়ির চার পাশে রয়েছে প্রচুর সিসি ক্যামেরা।

ভারতের ওই বাড়িটি যেন মৃত্যুপুরী। পশ্চিমবঙ্গের কালিয়াচক থানার পুরাতন ১৬ মাইল এলাকায় সেই অদ্ভুতদর্শন নির্মাণই এখন ভাবিয়ে তুলেছে তদন্তকারীদের। ওই ‘মৃত্যুপুরী’ থেকে গত শনিবার উদ্ধার হয়েছে চারজনের পচাগলা মরদেহ।

মহম্মদ আসিফ এবং তার পরিবারের মূল বাড়ির ঠিক পাশেই তৈরি করা হয়েছে রহস্যে ঘেরা সেই বাড়িটি। এর নির্মাণ নিয়ে ভাবনার যথেষ্ট কারণও রয়েছে তদন্তকারীদের।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই গুদামের ভিতরে চৌবাচ্চার আকারের কয়েকটি গর্ত খোঁড়া হয়েছিল। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় আসিফের দাদি, বাবা, মা এবং বোনের পচাগলা মরদেহ। ওই গর্তগুলো ছাড়া বাড়ির বাকি অংশ ফাঁকা বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ওই বাড়িটির মাথার ওপর ছাদ না থাকায় বৃষ্টি এবং নানা কারণে গর্তগুলো বুজে গিয়েছিল। শনিবার সেই মাটি খুঁড়েই মরদেহগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, গুদামের আকারের ওই বাড়িটি মূল বাড়ির পাশে হলেও তাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের জন্য কোনো দরজা ছিল না। তবে পুলিশ দুটি বাড়ির মধ্যে একটি সুড়ঙ্গ আবিষ্কার করেছে। তদন্তকারীদের ধারণা, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বাড়ির সকলকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর ওই সুড়ঙ্গ পথেই তাদের পাশের বাড়িটিতে নিয়ে গিয়েছিল আসিফ। যেন বাইরের কেউ তাকে দেখতে না পায়। সেখানে পরিবারের সকলকে হাত-পা বেঁধে, মুখে লিউকোপ্লাস্ট আটকে ওই গর্তে ফেলে দেন তিনি। গর্তে সে সময় পানি ছিল বলে আসিফ পুলিশ জানিয়েছে। যদিও আসিফের ভাই আরিফের দাবি, তিনি ওই মৃত্যুপুরী থেকে বের হয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন।

পুলিশ মনে করছে, কম্পিউটারে দক্ষ আসিফ এক সময় বিটকয়েনের মাধ্যমে বিপুল টাকা আয় করেছিল। কম বয়সে বেশ ভালো পরিমাণ অর্থ উপায় করে ফেলায় আসিফ তার বাবা এবং মায়ের আস্থা অর্জন করে নিয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাদের ধারণা, বাবা এবং মায়ের আস্থা অর্জন করেই তাদের থেকে টাকা নিয়ে গুদামের আকারের ওই বাড়িটি নির্মাণ করছিল আসিফ। বাড়িটি অন্য কাজে ব্যবহার করাই তার উদ্দেশ্য ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘গুদামের মতো দেখতে ওই বাড়িটির নির্মাণ চলছে। যেভাবে নির্মাণ হচ্ছে, তাতে কিছু একটা রহস্য আছে। ওই বাড়িটা মানুষ থাকার জন্য বানানো হয়নি। ওর (মহম্মদ আসিফ) নিশ্চয় অন্য কোনো ষড়যন্ত্র ছিল।’

কী সেই ষড়যন্ত্র? তা জানতে আসিফকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে পাড়ায় এমন কাণ্ডে হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা।


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন