মোঃ ফরিদ হোসেন
বছরের প্রতিটি দিন এবং রাত কখনো সমান হয়না। কখনো দিন বড় হয় তো আবার কখনো রাত। ছোটবেলায় পাঠ্যবইতে আমরা সবাই পড়েছি যে সবচেয়ে বড় দিন কোনটি আবার সবচেয়ে বড় রাত কোনটি। তবে আবার অনেকেই ভুলে গেছি যে বছরের দীর্ঘতম দিন বা সবচেয়ে বড় দিন কোনটি ।
উত্তর গোলার্ধের দীর্ঘতম দিন হল ২১ জুন। এদিন সূর্য কর্কটক্রান্তি বৃত্তের ওপরে থাকে। একে বলা হয় সূর্যের উত্তরায়ন। বছরের এই দিনেই সূর্যের দিকে বেশি হেলে থাকে উত্তর মেরু। আর দীর্ঘতম দিনের পাশাপাশি এটাই হল সবচেয়ে ছোট রাত। অন্যদিকে আবার দক্ষিণ গোলার্ধে এদিন ঠিক উল্টো অবস্থান। সেখানে ২১ জুন দিন সবচেয়ে ছোট এবং রাত সবচেয়ে বড়।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত হিসেব করলে এই দিনটি গড়ে ১৩ঃ৩০ ঘন্টার হয়।
২১ জুন সবচেয়ে বড় দিন কেন?
ঋতু পরিবর্তনের পাশাপাশি দিন ও রাতের সময়কালও বদলে যায়। বছরের ৩৬৫ দিন কখনো সমান থাকে না। কখনো দিন ছোট হয় এবং রাত বড় হয়, আবার কখনো দিন বড় হয় এবং রাত ছোট হয়। ঠিক এমনভাবেই, বছরে এমন একটি দিন আসে, যাকে সবচেয়ে বড় দিন এবং সবচেয়ে ছোট রাত হিসেবে ধরা হয়। আবার এমন একটি দিন আসে যে দিনটি সবথেকে ছোট এবং রাত বড়। আবার এমনও দিন আসে যে দিন-রাত দুটিই সমান। আমাদের পৃথিবী কত অদ্ভুত।
সৌরজগতের নিয়ম অনুযায়ী পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরার সময় একদিকে একটু হেলে থাকে। ফলে কখনো উত্তর গোলার্ধ সূর্যের কাছে আসে আবার কখনো দক্ষিণ গোলার্ধ। কিন্তু ২১ জুন সূর্যের রশ্মি পৃথিবীতে দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে তাই এই দিনটি বছরের দীর্ঘতম দিন। এই ঘটনাটিকে ‘সামার সলসটিস’ বলা হয়। ২১ জুন উত্তর গোলার্ধ সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি আসে। সূর্যকে ২১ জুন মধ্যগগনে, প্রায় মাথার উপরে দেখা যায়। ২০ থেকে ২৩ জুনের মধ্যে ‘সামার সলসটিস’ হয়ে থাকে।
কর্কট আর মকর নামে দু’টি ক্রান্তি রেখা চলে গেছে পৃথিবীর ওপর দিয়ে। আর ওদের মধ্যে দিন কতটা বড় হবে সেটা ঠিক করে দেয় কর্কটক্রান্তি রেখা। যাকে উত্তরের রেখাও বলা যায়। ২১ জুন সকাল আর সন্ধ্যার সূর্যটা সবথেকে বেশি হেলে থাকে ওই উত্তরেই। আর ঠিক দুপুরবেলা সূর্য থাকে কর্কটক্রান্তি রেখার একেবারে মাঝ বরাবর।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২১ জুন মানুষ নিজের ছায়াও দেখতে পায় না। যখন সূর্য ঠিক কর্কটক্রান্তি রেখার উপর থাকে তখন ছায়া কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। এটি প্রকৃতির এক বিস্ময়কর ঘটনা।
অনলাইন প্রতিবেদন
