ফিচার্ড বিশ্ব

সারা বিশ্বে হঠাৎ কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক কেন?

বিশ্বের বড় পাঁচ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের চারটিই বড় আকারে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। ছবি: পেক্সেলস

সারা বিশ্বে হঠাৎ কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক কেন?

মোটা দাগে বললে, ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছে বিশ্বের বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। একাধারে কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ সেটাই। চলমান অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব সুদূর প্রসারী হবে বলেই আশঙ্কা তাদের।

‘বিগ টেক’ হিসেবে পরিচিত পাঁচ মার্কিন প্রতিষ্ঠানের চারটিই এর মধ্যে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। মাইক্রোসফট, টুইটার, মেটা, আমাজনের খবর আমরা দেখেছি। শুক্রবার গুগলের মাতৃপ্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটও সে তালিকায় যুক্ত হয়েছে। বাকি আছে কেবল অ্যাপল। তবে সে প্রসঙ্গে একটু পরে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ২০২২ সালে প্রযুক্তি খাতের দেড় লাখের বেশি কর্মী চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এটা লেঅফস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের হিসাব। আর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চ্যালেঞ্জারের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরজুড়ে এই খাতের ৮০ হাজার ৯৭৮ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয়া হয়, কেবল নভেম্বরেই সংখ্যাটা ছিল ৫২ হাজার ৭৭১।

কোন প্রতিষ্ঠানে কত ছাঁটাই

গেল সপ্তাহেই কর্মীসংখ্যা ৫ শতাংশ কমিয়ে আনবে বলে জানায় মাইক্রোসফট। এতে ১০ হাজার কর্মী চাকরিচ্যুত হচ্ছেন। আমাজনও আরেক দফা ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে, এবার মোট ১৮ হাজার কর্মী চাকরি হারাবে।

এদিকে শুক্রবার ১২ হাজার কর্মীকে বিদায় জানানোর কথা বলেছে গুগলের অ্যালফাবেট। আর ফেসবুকের মাতৃপ্রতিষ্ঠান মেটা গত নভেম্বরেই ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। কর্মী ছাঁটাইয়ের এই ধারা ২০২৩ সালেও চলমান থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কেন কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক

২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী কোভিড লকডাউনের ঘোষণা এলে মানুষ ঘরে থেকে কাজ করতে বাধ্য হয়। এ কাজে সহায়ক সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের চাহিদা বাড়তে শুরু করে। আর প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদন বাড়াতে শুরু করে। ব্যাপক হারে নতুন কর্মীও নিয়োগ দিয়েছে সে সময়। প্রবৃদ্ধির পূর্বানুমান ভুল প্রমাণিত হওয়ায় এখন কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক পরে গেছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে।

অ্যাপল কেন অ্যাপলই

বিগ টেকের অপর চার প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অ্যাপল এখানে ভিন্ন। গত দুই বছরজুড়ে তাদের কর্মী নিয়োগ স্বাভাবিক ছিল। হয়তো সে কারণেই এখন পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণাও দিতে হয়নি।

করোনাকালে অ্যাপল প্রতিযোগীদের চেয়ে কম গতিতেই এগিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মী নিয়োগের ধারা ২০১৬ সাল থেকে একই আছে।

করপোরেট কর্মী থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ অ্যাপলে কর্মী ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার। পরিমাণটা ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় কেবল সাড়ে ৬ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ এক বছরে ১০ হাজার নতুন নিয়োগ হয়েছে অ্যাপলে, যা ২০২০ সালে ছিল কেবল ৭ হাজার।

গত আগস্টে প্রকাশিত ইকোনমিক টাইমসের খবরে তো বলা হয়েছে, কর্মী নিয়োগ কমিয়ে আনতে নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদেরই বরং বিদায় জানাতে শুরু করেছে অ্যাপল। -দৈনিক বাংলা


সংবাদটি শেয়ার করুন