কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি
একদল কাজে, একদল রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলনে :হামলা ও ভাংচুর
প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর শেষে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করবেন এমন আশাবাদে আগের ১২০ টাকা মজুরিতেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল। তবে এই সিদ্ধান্তের পরও আন্দোলনে অনড় মনু-দলই ভ্যালির কমলগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি চা বাগানের চা শ্রমিকরা। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তারা ১৪তম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
সোমবার(২২ আগস্ট) সকাল থেকেই কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর, ফুলবাড়িসহ বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকরা বাগানেই আন্দোলন করেন। পরে শ্রমিকরা কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করেন। উপজেলা পরিষদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে কমলগঞ্জ উপজেলা চৌমুহনীতে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করেন। চা শ্রমিকদের একটি অংশ কাজে যোগ দিলেও, অপর অংশ স্থানীয় প্রশাসন ও নেতাদের আশ্বাসের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। রাতের আধারে চুক্তি চা শ্রমিকরা মানবে না, ৩০০টাকা মজুরি দে-নইলে বুকে গুলি দে, শেখ হাসিনার সরকার ৩০০টাকা দরকার, মালিকের দালালরা হুশিয়ার সাবধান সহ নানা স্লোগানে কমলগঞ্জ উপজেলা চৌমুহনীতে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান করছেন চা শ্রমিকরা। এতে কমলগঞ্জ-মৌলভীবাজার ও শমসেরনগর-শ্রীমঙ্গল সড়কের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে।
চা শ্রমিক নেতারা বলছেন, কাজে ফেরার জন্য তারা এখনো কেন্দ্রীয় কমিটির কোন নির্দেশনা পাননি। এছাড়া ৩০০ টাকা মজুরির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের চা শ্রমিকেরা কাজে ফিরলেও তারা ফিরবেন না। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ফুলবাড়ি চা বাগান, আলীনগর চা বাগানসহ বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। পরে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও ও উপজেলা চৌমুহনায় রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান করেন। এ সময় শ্রমিকেরা ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি ছাড়া কাজে ফিরবেন না বলে জানান।
আলীনগর চা বাগানের নারী চা শ্রমিক নেত্রী বিউটি নায়েক বলেন, ‘আমাদের শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি কাজে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়নি। আমরা কোন নেতার কাছ থেকে শুনতে চাই না। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ৩০০ টাকা মজুরি দাবি করছি। এর কমে হলে আমরা কাজে যাব না। প্রয়োজনে আমরা গুলি খেয়ে মরব, তারপরও ৩০০টাকা ছাড়া কাজে যাবো না।’
চা শ্রমিক গোপাল নুনিয়া, চঞ্চল গোয়ালা, অন্তর নায়েক সহ কয়েকজন চা শ্রমিক বলেন, আমাদের রুটি রুজির সংগ্রাম চলবে। ৩০০টাকা মজুরির দাবি না মানলে আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাবো। আমরা কোন দালালকে ভয় করি না। মালিক পক্ষ এখন পর্যন্ত আমাদের কোন জবাব দেয় নি। আমরা রাজপথ ছাড়ব না। প্রয়োজনে আমাদের গুলি করা হোক, আমরা গুলি খেয়ে মরব তবুও আমাদের দাবি আদায় করব। শেখ হাসিনা আমাদের মা জননী। তিনি যেন আমাদের ৩০০টাকা মজুরির ন্যায্য দাবি মেনে নেন।
এদিকে, উত্তেজিত চা শ্রমিকরা শমসেরনগর চা বাগানে মনু-দলই ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক নির্মল পাইনকার বাড়ি ঘেরাও ও পদ্মছড়া চা বাগানে পঞ্চায়েত সভাপতি কৃষ্ণলাল দেশওয়ারের দোকানে ভাংচুর করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে সে সময় নির্মল পাইনকা বাড়ীতে ছিলেন না।
এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত চা শ্রমিকরা উপজেলা চৌমুহনীতে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান করছেন।
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান