পাঁচ দেশের শীর্ষনেতা আসছেন, হবে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক
বাংলাদেশ/১৬ মার্চ ২০২১. সিবিএনএ অনলাইন ডেস্ক। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। এ অনুষ্ঠানমালায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দিতে ঢাকা সফরে আসছেন ভারত, ভুটান, নেপাল, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানরা। অনুষ্ঠানের ফাঁকে এসব দেশের সঙ্গে বেশকিছু সমঝোতা স্মারক চুক্তি করবে বাংলাদেশ। উপরোক্ত ৫টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের অংশগ্রহণ নিয়ে গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনা ভাইরাস প্রকোপের মধ্যেই পাঁচ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান বাংলাদেশে আসছেন। এটি প্রদর্শন করে যে, আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা আছে বলেই এসব দেশের শীর্ষনেতারা বাংলাদেশে আসছেন। এটি ভালো সময় না। এ সময়ে তাদের এ সফর একটি ঐতিহাসিক বিষয়।
১০ দিন ব্যাপ্তির অনুষ্ঠান চলাকালে জনসাধারণের চলাচলে কিছুটা অসুবিধা হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এমন সময় সবসময় আসে না। আমরা আশা করি, জনগণ এটি গ্রহণ করবে। আমরা অনুষ্ঠানগুলো এমনভাবে সাজিয়েছি যে, বেশিরভাগ অনুষ্ঠানই ছুটির দিনে, কাজের দিনের সংখ্যা কম।
আগামীকাল বুধবার শুরু হবে ১০ দিনের বর্ণাঢ্য এ আয়োজন। এদিন ঢাকায় আসছেন মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহেন্দ্র রাজাপাকসে আসবেন ১৯ মার্চ। নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভা-ারি আসবেন ২২ মার্চ। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং আসবেন ২৪ মার্চ আর ২৬ মার্চ আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রত্যেকের সফরই দুই দিন ব্যাপ্তির। বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান ভিডিওবার্তা পাঠাবেন। যারা ভিডিওবার্তা পাঠাবেন তাদের মধ্যে রয়েছেন কানাডা, ফ্রান্স, জাপান, চীনের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান। আরও বেশকিছু দেশের নেতারা ভিডিওবার্তা পাঠাবেন, প্রত্যাশা করছে ঢাকা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরে তিস্তা চুক্তি হবে কিনা এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিস্তা চুক্তি অনেক আগে চুড়ান্ত হয়েছে। যারা এরসঙ্গে জড়িত ছিলেন তারা আমাদের জানিয়েছেন যে এর প্রতিটি পাতায় সই করা আছে সচিব পর্যায়ে। কিন্তু চুক্তিটি কি কারনে হয়নি এটি আপনারা জানেন। ভারত সরকার বারবার অঙ্গীকার করেছে তারা এই চুক্তিকে সম্মান করে। এর কোনো ব্যত্যয় হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আলোচনাকালেও তিনি বলেছেন, আমরা এটি সম্মান করবো। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। ভারতের সঙ্গে যখনই আমাদের কোনো বৈঠক হয় তখনই আমরা বিষয়টি তুলি। আগামীকাল দিল্লিতে পানি সম্পদ সচিব পর্যায়ে বৈঠক হবে। নরেন্দ্র মোদি এটি আমাদের সৌভাগ্য একটি দেশের সরকার প্রধান ঢাকা শহরের বাইরে যাচ্ছেন। তিনি সাতক্ষীরার যশোশ্বরী মন্দিরে যাবেন। সেখানে তিনি প্রার্থনা করবেন। টুঙ্গিপাড়া থেকে মোদি যাবেন ওড়াকান্দি। সেখানকার সংসদ সদস্য শেখ সেলিম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির প্রধান ফারুক খান মোদিকে অভ্যর্থনা জানাবেন। মোদি সেখানকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর লোকদের সঙ্গেও আলাপ করবেন।
পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মিয়ানমারকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. মোমেন বলেন, আফগানিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তারা আসতে পারবে কিনা, আমাদের এখনো জানায়নি। আর মিয়ানমারের সরকার প্রধান এখন কে- সেটাই বোঝা মুশকিল। সে কারণে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, প্রতিটি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক হবে। মালদ্বীপের সঙ্গে চারটি, শ্রীলংকার সঙ্গে আরও বেশি সমঝোতা স্মারক হবে। স্মারক চুক্তি হবে নেপাল ও ভারতের সঙ্গেও। এ জন্য আমরা বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে কাজ করছি। কয়েকদিনের মধ্যে এ সবের একটি পরিস্কার ছবি পাওয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিফ অব প্রটোকল আমানুল হক প্রমুখ।-আমাদের সময়