স্বাধীনতার ৫০ বছরে ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ : ফরেন পলিসি সাময়িকীতে কলাম
বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ফরেন পলিসিতে এই কলামটি লিখেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখক ও গবেষক সি রাজা মোহন। এখানে তিনি বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের উন্নতি। দেশটি এখন বিশ্ব রাজনীতির পরিমণ্ডলে শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে, এ রকমটাই বলেছেন তিনি এই লেখায়। লেখক ব্যক্তিগতভাবে ন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের পরিচালক। তিনি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা বোর্ডের সাবেক সদস্য।
পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণার ৫০ বছর পূর্তি উৎসব পালন করছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করায় দেশটি এখন বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। অর্থনৈতিক উন্নতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক অভিকর্ষের কেন্দ্রে পরিণত হওয়া এবং এক সময় অভেদ্য সীমান্ত দিয়ে বিভক্ত উপমহাদেশের পূর্বপ্রান্তীয় অংশের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কিত হওয়া বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব এখনও জোরালোভাবে উচ্চারিত নয়। বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় মুক্তির দ্বারপ্রান্তে। এই মুক্তির মাধ্যমে দেশটির তুলনামূলক বিচ্ছিন্নতার অবসান হবে এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঢাকার ভূমিকা ক্রমশ জোরালো হবে।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভের পর বিশ্ব নবজাতক এই দেশটিকে খুব একটা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। ভাবটা এরকম ছিলো, নিজের চেষ্টায় বাঁচলে বাঁচো। কয়েক দশক ধরে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যপীড়িত দেশ হিসেবে পরিচিত ছিলো বাংলাদেশ। ক্ষুধা, বঞ্চনা, রোগ-শোক দুর্ভিক্ষের অপর নাম ছিলো বাংলাদেশ। তবে গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার উচ্চ প্রবৃদ্ধি দেশটির অর্থনীতিকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। ২০২৬ সাল নাগাদ বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, দেশটি ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির ৩০টি দেশের মধ্যে ঢুকে যাবে। দারিদ্র্য বিমোচন, গড় আয়ু, শিক্ষার প্রসার ও নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ সাফল্য দেখানোয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এখন বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেবলই ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বকে তুলে ধরছে না। দীর্ঘদিন ধরেই দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি মানে প্রথমেই সামনে চলে আসে ভারত ও পাকিস্তানের নাম। ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যমের ধারা ভাষ্যকার, বুদ্ধিজীবী মহল বহুদিন ধরেই কাশ্মীর, সন্ত্রাসবাদ, পরমাণু অস্ত্র এবং আফগানিস্তানের মতো ইস্যুগুলোতে খুবই ক্ষীণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচানার প্রাধান্য নিবদ্ধ রেখেছে ভারত ও পাকিস্তানের ওপর।
উপমহাদেশের অন্য দেশগুলোর নির্লিপ্ততা নিজ নিজ অবস্থানে দেশগুলোর কৌশলগত অগ্রগতির দিক নির্দেশনা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে শ্রীলংকা এবং মালদ্বীপ। দেশ দুটি ভারত মহাসাগরের কেন্দ্রে অবস্থিত। ভারত, চীন জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশ্বের বৃহৎ নৌশক্তিগুলোর আগ্রহ রয়েছে শ্রীলংকা ও মালদ্বীপকে ঘিরে। অন্যদিকে হিমালয়ের কোল জুড়ে রয়েছে নেপাল ও ভুটান। ভূ-রাজনৈতিক প্রধান্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ভারত ও চীনের মাঝখানে অবস্থিত এই দেশদুটি গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব আদৌ এর আয়তনের ওপর নির্ভরশীল নয়। ১৭ কোটি মানুষ এদেশে বসবাস করে, সংখ্যার বিচারে যা বিশ্বে অষ্টম। প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যাও এখন ৮০ লাখ। প্রবাসে বাংলাদেশির সংখ্যা যে শুধু উপসাগরীয় দেশগুলোতে বাড়ছে, তা নয়, বিশ্বের ইংরেজিভাষী দেশগুলোতেও বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে।
বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনায় উত্তরের দেশ নেপাল ও ভুটান, উত্তরপূর্বে চীন এবং দক্ষিণপূর্ব দিকে মিয়ানমার- সব মিলিয়ে সবার সঙ্গে আকর্ষণীয় এক অংশীদারিত্ব।
উপমহাদেশে ভারতের ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে কৌশলগত সম্পর্কোন্নয়ন, রাজনীতি, এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক। এই অঞ্চল বাদেও বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ঢাকার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
বাংলাদেশ এখন রপ্তানিমুখী একটি জাতি। দেশটি ২০১৯ সালে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বস্ত্রসামগ্রী রপ্তানি করেছে। তৈরি পোশাকশিল্পে বিশ্বে দেশটির অবস্থান এখন দ্বিতীয়। ১৫০টি দেশে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করে।
সাবেক পূর্ব পাকিস্তান বা আজকের বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকেই ভৌগলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তন হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর মাত্র ২৫ বছরের মধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এটাই প্রমাণ করে যে শুধু ধর্মের ভিত্তি একটি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে না। যদিও বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলাম ধর্মের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তারপরও ধর্ম পালনে সংযম প্রদর্শন এবং বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার পর দেশের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা ইসলামী আন্দোলন দমনে সাফল্য প্রদর্শন অ-পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনেতিক প্রতিপালন হতে পারে বাংলাদেশ।
অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জিত না হলে বাংলাদেশের বিশেষ অবস্থান বা রাজনেতিক চরিত্র নিয়ে খুব বেশি একটা উচ্চকিত হওয়ার মতো কিছু ঘটতো না। ভারত ও পাকিস্তনের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনেতিক সাফল্য বোঝার জন্য আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে।
প্রথমত, বার্ষিক জিডিপির বিবেচনায় ২০১৯ সালে পাকিস্তানের ২৭৯ বিলিয়ন ডলারকে পেছনে ফেলে ৩০৩ বিলিয়ন ডলারের অবস্থান অর্জন করে উপমহাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয় বাংলাদেশ। দুই দেশের এই ব্যবধান আরো বাড়বে এ কারণে যে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী ছিলো এবং পাকিস্তানকে রুগ্ন অর্থনীতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) গত বছর ঘোষণা দেয় যে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ২০২০ সালে সামান্য কিছু ডলারের ব্যবধানে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে। মহামারির কারণে ভারতের অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ায় এ ঘটনা ঘটলেও এটি বাংলাদেশের অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধির সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দেয়। এর মাধ্যমে এই ইঙ্গিত প্রকাশ পায় যে, বাংলাদেশ এখন উপমহাদেশের এক কোণে পড়ে থাকা কেবল মাত্র একটা ক্ষুদ্র দেশ নয়।
ভারত-পাকিস্তানের বৈরিতার কারণে উপমহাদেশের উন্নয়ন এবং ভৌগলিক গুরুত্ব সব সময় ঢাকা পড়ে আছে বলে মন্তব্য করা ‘আধুনিক বিলাপে’ পরিণত হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান বাণিজ্য বা অন্য কোনো ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে না বা অগ্রসর হয় না। দেশ দুটির মধ্যে দূরত্বের কারণে সার্কও আজ অকার্যকর। কিন্তু এর মানে এই নয় যে এর ফলে এই অঞ্চলের অন্যরা উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে থাকবে।
পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়ন করছে। মানসম্মত শিক্ষা, দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা এবং পূর্বমুখী অর্থনীতির অভিকর্ষের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে আজ বাংলাদেশ। সার্কের অকার্যকরিতা এই পরির্তনকে দ্রুততর করেছে। ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত হতে পাকিস্তানের অনীহার ফলে এই উপ-অঞ্চলে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এখন বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপালকে সঙ্গে নিয়ে মিয়াননমার ও থইল্যান্ডকে ঘিরে বৃহত্তর আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতায় রূপ লাভ করছে।
মানচিত্রের দিকে তাকালে এ বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান ও আজকের বাংলাদেশের মধ্যে ছিলো সেতুবন্ধ। ভারতের মূল ভূখণ্ড ও দেশটির প্রত্যন্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশ এখনও সেতুবন্ধ। সংকীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ তথাকথিত ‘চিকেন নেক’ দিয়ে নিজ দেশের ওই অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। দেশ ভাগের সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যাওয়া পুরনো রেলপথ ও নৌপথ এখন আবার চালু করার কাজ চলছে।
এখানে শিক্ষনীয় যে, দেশ ভাগের পর থেকে ইসলামাবাদ ও ঢাকা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ভৌগলিক অবস্থান সম্পর্কে নিজেদের ভাবনাকে কিভাবে কাজে লাগিয়েছে। পাকিস্তানের কৌশলবিদরা মনোনিবেশ করেছেন নিজেদের রাষ্ট্রীয় অবস্থানকে সন্নিবেশ করার পেছনে। অন্যদিকে বাংলাদেশ গুরুত্বারোপ করেছে এর ভৌগলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে অর্থনেতিকে উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে।
বিশাল বাজারের দেশ ভারতের অর্থনৈতিক সহযোগিতার আহ্বান পাকিস্তান সচেতনভাবেই প্রত্যাখ্যান করেছেন। কাশ্মীর সংকট সমাধানের সঙ্গে পাকিস্তান জুড়ে দেয় ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের ইস্যুটি। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে থাকা বিরাট সীমান্তকে অর্থনীতির জন্য সম্ভাবনায় পরিণত করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে দেশটি ভারতের সঙ্গে বিরাজমান অমীমাংসিত দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানে অগ্রগতি অর্জন করেছে।
এই কিছুদিন আগ পর্যন্ত পুরো ভারতবেষ্টিত হওয়াকে বাংলাদেশের জন্য ঝামেলা মনে করা হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক দশকে ভারতের সঙ্গে ঝামেলাযুক্ত সম্পর্ককে বাংলাদেশ উন্নয়নমূলক অংশীদারিত্বে পরিণত করেছে। ঢাকা এখন নিজেকে স্থলবেষ্টিত মনে করে না, বরং সড়ক ও রেলপথে ভারত ও এই অঞ্চলের অন্য দেশের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। বাংলাদেশ ও ভারতের সহযোগিতা বৃদ্ধির ফলে উপমহাদেশে দেশভাগের নেতিবাচক পরিণতি অন্তত পূর্বদিকে কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে।
বাংলাদেশ ও ভারত এখনও অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যায় জর্জরিত। উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখনও নানা চড়াই-উৎরাই পার করছে। আন্তসীমান্ত যোগাযোগ এবং সংখ্যালঘুদের অবস্থান উভয় দেশের রাজনীতিতেই এখনও উদ্বেগ সৃষ্টি করে। তবে আন্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এই উদ্বেগুলোর অনেকটিকে আলাদা করতে সক্ষম হয়েছে। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বাংলাদেশকে দৃষ্টিভঙ্গি দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে, বিশেষ করে সমুদ্রের দিকে।
বঙ্গোপসাগরের উপকূলে হওয়ায় বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সমুদ্র সম্পর্কে বিশেষ সুবিধা পেতে চলছে। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র বিরোধ সাফল্যের সঙ্গে মিটিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। দেশটি ভালোভাবে কার্ড চালতে পারলে দ্রুত বিকাশমান ইন্দো-প্যাসেফিক সমুদ্র সক্ষমতায় যুক্ত হতে পারবে। ইন্দো-প্যাসেফিক সমুদ্র প্রতিযোগিতায় ঢাকাকে অবশ্যই শুরু করতে হবে বঙ্গোপসাগর দিয়ে। এই অঞ্চল নিয়ে ভারত, চীন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে।
ভারত এখন ঢাকা ও নেপিডোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়ানোর কাজ করছে। তবে মিয়ানমারের কায়াকপুয়া দ্বীপে চীনের পাইপলাইন এবং ভারত মহাসাগরের উত্তর পূর্বাঞ্চলে বেইজিংয়ের নৌশক্তি বৃদ্ধিতে নড়েচড়ে বসেছে দিল্লি।
বেইজিংয়ের সঙ্গে ঢাকারও নিরাপত্তা সহযোগিতা আছে। চীনের সাবমেরিন ও ফাইটার আছে বাংলাদেশের কাছে। এ পর্যায়ে ভারত চেষ্টা করবে সোমরিক খাতে চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমানোর। যদিও সামরিক খাতে চীনের মতো বিশাল বিনিয়োগ ভারত করতে পারবে না, তবে ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্তভাবে বাড়াচ্ছে দিল্লি। কোয়াড সদস্যদের মধ্যে জাপান বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।
বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করার চিরায়ত কৌশল থেকে এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও সরে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি স্টিফেন বিগান গত অক্টোবরে ঢাকা সফরের সময় ঘোষণা করেন, ওয়াশিংটন ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলে বাংলাদেশকে একটি প্রধান অংশীদার বলে বিবেচনা করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডো বাইডেন চীনের সঙ্গে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলেছেন। এ অবস্থায় অনুমান করা যায় যে, কোয়াডের সদস্য দেশগুলো- অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যায়ে বাংলাদেশের জন্য এককভাবে এবং সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা জোরদার করবে।
বাংলাদেশ ভালো করেই জানে, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে জোরালো সম্পর্ক ভারত ও চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কমাবে। ভূ-রাজনৈতিক দাবার বোর্ডে পারঙ্গম হতে বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে সকল প্রচেষ্টা জোরদার করছে, সুবিধা গ্রহণ করছে বর্হিস্থ পারিপাশ্বিক অবস্থা থেকে। এশিয়ার অনেক দেশের মতো বাংলাদেশ অন্ধভাবে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে আলিঙ্গন করেনি। তবে একাধিক অংশীদারিত্বের সন্ধানের চেষ্টা করেছে দেশটি। বাংলাদেশের সামনে সমুদ্র প্রতিযোগিতায় এখন একই সুযোগ হাজির হয়েছে, চীন এবং কোয়াড।
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান