প্রবাসের সংবাদ ফিচার্ড

কবি জহিরুলকে ঘিরে ঢাকায় ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়

কবি জহিরুলকে ঘিরে ঢাকায় ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়

কবি ও ভাষাশিল্পী কাজী জহিরুল ইসলাম জাতিসংঘ সদর দফতরের কর্মসূত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাস করেন। তিনি ছুটিতে ঢাকায় এলে তাকে ঘিরে কবিতাপ্রেমীদের ছোটো-বড়ো নানান আড্ডা জমে ওঠে শহরের এখানে-সেখানে। ২৬ অক্টোবর বিকেলে কাটাবনের কবিতা ক্যাফেতে এক আনুষ্ঠানিক আড্ডার আয়োজন করে প্রকাশনা সংস্থা জলধি। এতে যোগ দেন কবি জাহিদুল হক, কবি আতাহার খান, কবি জাহিদ হায়দার, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, গাজী লতিফ, কবি, অভিনেতা ও নির্মাতা তারেক মাহমুদ, সাংবাদিক দুলাল খান, সংবাদ পাঠক আবিদ আজম, কবি নাহিদা আশরাফী, মীর আব্দুর রাজ্জাক, শওকত আলী তারাসহ অডিটোরিয়াম উপচে পড়া কবির শুভান্যুধ্যায়ীরা। কবির কবিতা থেকে পাঠ করেন দেশের স্বনামধন্য আবৃত্তি শিল্পীরা, কবিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ও সম্মাননা ক্রেস্ট উপহার দেন বিভিন্ন সংগঠন। কাজী জহিরুল ইসলাম শুধু বড়ো মাপের একজন কবিই নন, একজন ভালো বক্তা এবং নৈতিক চর্চায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মানুষ। তার সদা হাস্যোজ্জ্বল ও অমায়িক ব্যবহার তাকে সকলের কাছে ব্যপকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে, তিনি হয়ে উঠেছেন বাঙালিদের প্রিয় কবি। সম্প্রতি কাজী জহিরুল ইসলামের নতুন কবিতার বই “ভোরের হাওয়া” প্রকাশ করেছে জলধি। এই বইটি নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন অনুষ্ঠানে আগত প্রতিষ্ঠিত কবি, লেখকেরা।  কবির প্রকাশিত ৯০টি গ্রন্থের একটি স্বল্পকালীন বইমেলাও হয়ে যায়। ভক্ত, অনুরাগীরা কবির অটোগ্রাফসহ তার রচিত বিভিন্ন বই সংগ্রহ করেন। উল্লেখ্য, কবি কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতা নিউইয়র্কের জন জে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ২০১৮ সালে। এ-বছর বিশ্বখ্যাত শ্রী চিন্ময় সেন্টার তাকে “পিস রান টর্চ বিয়ারার” অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে কবিতার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক চর্চা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার জন্য।

বক্তারা কাজী জহিরুল ইসলামের মধ্যে বাংলা ভাষার একজন প্রধান কবির আবির্ভাব দেখতে পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, বহুদিন এই জনপদ একজন বড়ো কবির প্রতীক্ষা করছিল, আমরা বোধ হয় সেই কবিকে পেয়ে গেছি।

কাজী জহিরুল ইসলাম উপমহাদেশের প্রখ্যাত লেখক খুশবন্ত সিংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আমিও লেখালেখির ক্ষেত্রে তার মতো ৩টি নীতি অনুসরণ করি: মানুষকে তথ্য দেয়া, আনন্দ দেয়া এবং ক্ষেপানো। তিনি নীরদ সি চৌধুরীর কথা উল্লেখ করে বলেন, ভারত সরকার যখন তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে তাকে অনেক টাকার কাজ দিতে চাইলো, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘ভারত সরকার আমার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে, আমি তো ভারত সরকারের ওপর থেকে আমার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেইনি’। এটিই হচ্ছে একজন সৎ লেখকের চারিত্রিক দৃঢ়তা। এই সততাটা আমাদের এখানে বড়ো অভাব। তিনি নিজের জীবনের উল্লেখ করে বলেন, পরিবার হচ্ছে পাওয়ার হাউজ, প্রেমময় দাম্পত্য সম্পর্ক মানুষের শক্তিকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী বই সংগ্রহ করে কবির অটোগ্রাফ নেন, সেল্ফি তোলেন। কবি জহিরুলকে ঘিরে কানায় কানায় পূর্ণ কবিতা ক্যাফেতে তৈরি হয় এক আবেগঘণ পরিবেশ।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন