শীতল চট্টোপাধ্যায়-এর ক বি তা
ভাবনা মাত্র
কবি, তুমি যদি ভাবনায় বলো
খিদের কষ্ট,
লেখায় লেখো অনাহারে কাটা রাত্রি,
তবে তা উপোসি জীবন না চেনার
ভাবনা মাত্র।
আহার তৃপ্তের কবিতা
অনাহারের বাস্তবে পৌঁছোয়নি কোনোদিনই,
কিংবা , কলম শিখণ্ডী করে
আহারের- নেই অভাবে সরিয়ে রাখে নিজেকে।
সন্তানের খাবার বায়নায়
মা যখন মিছি -মিছি খাবার খোঁজে রান্না ঘরে,
খালি কৌটোর নিরাশ মরুতে
মা যখন নিজেতেই উপলব্ধি করে
অন্নদাতার অসাম্য পক্ষপাতিত্ব,
ক্ষুধার্ত শিশুকে একটু খাবার দিয়ে
কবিতাকে তখন সত্যি কবিতা করেননি
কখনোই তিনি।
ব্যাখ্যাতীত
দু’দিকে ধান জমির মাঝ দিয়ে
মরা সাপের মতো কালো রাস্তা
আঁকা-বাঁকায় মাঠ-পাড়া পেরিয়ে
দূরের দিগন্ত তলে
ঘন সবুজ ধান উঠোনে পৌঁছে গেছে।
সকালের ধান পাতায় জাগা শিশিরে
প্রথম সূর্যালোক ছুঁয়ে
স্বর্ণ আলোকিত সারা মাঠ,
যেন ঈশ্বর তাঁর অকৃপণ দানে
ছড়িয়ে দিয়েছেন স্বর্ণ দানা,
আমার ব’লে ধরে রেখেছে
ধানের পাতা।
শুধু এই ব্যাখ্যাতীত-বিস্ময়কর
আলোটুকুকে দেখলেই-
আপন অন্তরে এক
ঈশ্বর আলোক বিচ্ছুরণ!
মনের প্রবাহে
এই সাগর পার হই আমি
রাত্রি এলে।
সাঁতরে নয়, জল যানে নয়,
ডানায় নয়।
মনের প্রবাহে-প্রবাহিত হয়ে
পেরিয়ে যাই
নীল বিস্তারের ওপর দিয়ে।
কিছু সামুদ্রিক পাখি আমার
সঙ্গী শুধু।
ঢেউ যেখানে শেষ হয়েছে
সেখান থেকেই শুরু হয়েছে
স্বপ্ন দেখার ঢেউ।
জগদ্দল, উত্তর ২৪পরগণা
পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ




