শোবিজে আলোচিত ছয় বিচ্ছেদ
শিমুল আহমেদ ।। আনন্দ-বেদনা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে কেটে যাচ্ছে আরও একটি বছর। ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে বিদায় নিচ্ছে ২০২০। তবে রয়ে যাবে কিছু ঘটনা। কেউ পছন্দের মানুষের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন চলতি বছর। আবার কারো সংসারে বেজেছে বিচ্ছেদের সুর। শোবিজ অঙ্গনের আলোচিত কিছু বিচ্ছেদ নিয়েই এই আয়োজন…
শাবনূর-অনিকের বিবাহ বিচ্ছেদ
‘বনিবনা হচ্ছে না’ এমন কারণ দেখিয়ে চিত্রনায়িকা শাবনূর ও স্বামী অনিকের প্রায় আট বছরের সংসার জীবন ভেঙে যায়। চলতি বছর ২৬ জানুয়ারি স্বামীকে তালাক দেন শাবনূর। নিজের স্বাক্ষরিত নোটিশটি তিনি তার অ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদের মাধ্যমে স্বামীকে পাঠান।
ওই সময় শাবনূর বলেন, ‘সন্তান জন্মের পর অনীক পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করত না। অনেকবার বলার পরও তার দায়িত্ব আর আচরণগত পরিবর্তন আসেনি। তাই ভাবলাম, এভাবে থাকার চেয়ে না থাকাটাই ভালো।’
২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিক মাহমুদ হৃদয়ের সঙ্গে আংটি বদল করেন শাবনূর। এরপর ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিয়ে করেন তারা। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আইজান নিহান নামে এক পুত্রসন্তানের মা হন শাবনূর। পুত্রকে নিয়ে বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন।
ভেঙে যায় পরীর ৩ টাকার বিয়ে
চলতি বছর ১০ মার্চ হুট করেই বিয়ে পিঁড়িতে বসেন হালের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমনি। বর নাট্য নির্মাতা কামরুজ্জামান রনিকে মাত্র ৩ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন এ নায়িকা। সিনেমার কাজের সুবাদেই তাদের পরিচয়, বন্ধুত্ব ও অবশেষে বিয়ে। মাস কয়েকের মাথায় জানা যায়, স্বামীর সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই পরীর। আর স্বামীর প্রসঙ্গ আসলেই কথা এড়িয়ে যান এই চিত্রনায়িকা। এ প্রসঙ্গ সাফ জানিয়ে দেন, স্বামীর বিষয়ে কোন কথা বলবেন না তিনি।
অপূর্ব-নাজিয়ার ৯ বছরের সংসারেও ভাঙন
জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও নাজিয়া হাসান অদিতির সংসার ভাঙনের খবর প্রকাশ্যে আসে চলতি বছর ১৭ মে। নিজেদের মধ্যে ‘বনিবনা হচ্ছে না’ কারণ দেখিয়ে ৯ বছরের দাম্পত্যজীবনের ইতি টানেন তারা। নিজের ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়ে বিচ্ছেদের খবর প্রথম জানান অদিতি। সেখানে তিনি অপূর্বের প্রশংসা করে তাকে দোষারোপ না করার জন্য ভক্তদের অনুরোধ জানান।
নাজিয়ার ওই স্ট্যাটাসের ৪ ঘণ্টা পর অপূর্বও ফেসবুকে একই ধরনের একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে নাজিয়ার মতোই অপূর্বও তার সাবেক স্ত্রীর প্রশংসা করেন। শুধু তাই নয়, তার সাফল্যের পেছনে নাজিয়ার ভূমিকার কথা উল্লেখ্যও করেন এই অভিনেতা। ২০১১ সালের ২১ ডিসেম্বর নাজিয়া হাসান অদিতিকে বিয়ে করেছিলেন অপূর্ব। তাদের সংসারে জায়ান ফারুক আয়াশ নামে এক পুত্র সন্তানও রয়েছে।
নির্যাতনের স্বীকার হয়ে বিচ্ছেদ নেন চিত্রনায়িকা মুনমুন
স্বামীর কাছ থেকে নিয়মিত নির্যাতন ও স্বার্থপরতার শিকার হয়ে অবশেষে চলতি বছর ২ আগস্ট স্বামীকে তালাক দেন চিত্রনায়িকা মুনমুন। দশ বছর আগে, প্রেম করে মীর মোশাররফ হোসেন রোবেনকে বিয়ে করেন ‘রানি কেন ডাকাত’ খ্যাত এই চিত্রনায়িকা।
বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে ওই সময় মুনমুন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘১০ বছরের মধ্যে আমাদের চার বছর সেপারেশন হয়েছে। একটা সময় আবার মিলেও গেছি। সে আমার কাছ থেকে টাকা পয়সা নিতো। তাকে আমি অনেক অর্থকড়ি দিয়েছি। তারপরও সে আমাকে মারধর করতো। কোন কাজ করত না। নিজের ভালোটা বুঝতে চাইতো। অথচ আমাদের এক সন্তান, তাকে নিয়ে কোন মনোযোগ ছিল না। শারীরিক নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই যাচ্ছিল। যার কারণে আমি তাকে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেই।’
ফারিয়া-অপুর বৈবাহিক জীবনের অবসান
তিন বছর প্রেম শেষে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে হারুন অর রশীদ অপুর সঙ্গে আংটি বদল করেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার। আর পরের বছর জমকালো আয়োজনে মধ্যদিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন এ অভিনেত্রী। কিন্তু বেশি দিন টেকেনি তাদের এই সংসার। চলতি বছল ২৭ নভেম্বর বিচ্ছেদ পত্রে সই করেন অপু-ফারিয়া। আর ২৮ নভেম্বর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফারিয়া।
বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে ফারিয়া বলেন, ‘এই বিচ্ছেদের পেছনে উল্লেখযোগ্য কারণ নেই। একে অপরের প্রতি কোন অভিযোগও নেই। দুজনেই চেয়েছি নিজেদের মতো ভালো থাকতে। তাই আলাদা হয়ে গেছি। আমি আর অপু অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করেছি একসঙ্গে থাকতে! কিন্তু বিষয়টা একটা পর্যায়ে খুব কঠিন হয়ে যায়। চলতি বছরের শুরুতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা আর একসঙ্গে থাকতে চাই না। দুজনেরই সমস্যা হচ্ছিল। তাই বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়েছি।’
পাল্টাপাল্টি মামলা, বিচ্ছেদের পথে তমা মির্জা
গত বছর মে মাসে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ী হিশাম চিশতির সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন নায়িকা তমা মির্জা। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় এসে আলাদা থাকতে শুরু করেন তারা। সম্প্রতি একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও করেছেন। মামলায় হিশাম চিশতি উল্লেখ করেছেন, পাওনা টাকা চাওয়ায় তাকে হত্যার চেষ্টা করেন তমা ও তার পরিবার।
অন্যদিকে তমা স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন যৌতুক, নির্যাতন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। এরপর তমা মির্জা জানান, খুব শিগগিরই তিনি হিশাম চিশতিকে তালাকের কাগজপত্র পাঠাবেন। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তিনি তার আইনজীবীর সঙ্গে কথাও বলেছেন। ডিভোর্সের কাগজপত্রও তৈরি হয়ে গেছে। তার সঙ্গে আর সংসার করা সম্ভব না।
-সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন