‘নাম বললে নিউজ করবেন, জীবনের নিরাপত্তা কে দেবে’
ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণি। এ ঘটনার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়েছেন। আজ রোববার রাতে এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মীদের বিস্তারিত জানাতে নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করছেন পরীমণি।
এদিকে তাকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টাকারীর নাম জানাতে চাইলে রোববার রাতে পরীমণি বলেন, ‘আমি নাম বললে আপনারা নিউজ করবেন কিন্তু আমার জীবনের নিরাপত্তা কে দেবে। আমি সব বলবো, গত চারদিন ধরে বলেছি। আমার শেষ ভরসা আপনারাই। আমি মিডিয়াকে অন রেকর্ড সব বলব দ্রুত সময়ে। আমি এর বিচার চাইবোই।’
রোববার রাত ৮টার দিকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ তুলে পরীমণি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। পরীর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানতে সাংবাদিকদের তার বাসায় যেতে অনুরোধ করেন। পরীমণি বলেন, ‘আমি এভাবে জানাতে জানাতে টায়ার্ড। আমি সবাইকে একবারে বলতে চাই, আমাকে একটু হেল্প করেন। আমাকে মাফ করেন, আর পারতেসি না এভাবে বলতে।’
কান্নারত অবস্থায় পরীমণি বলেন, ‘আপনারা সবাই আমার বাসায় আসেন। আমি সবার সামনে বলতে চাই। বলে অন্তত মরি। আমার নামটা জানাইতে হবে। আমার পুরোটা জানাইতে হবে। আমি বিস্তারিত বলব। সব বলে আমি মরতে চাই। আমি তো ওই মানুষ না যে একা একা অন্যায় সহ্য করে মরে যাব।’
পরীমণি তার ফেসবুক পেজে লিখেন-
বরাবর,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র।
আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আমি এর বিচার চাই।
এই বিচার কই চাইবো আমি? কোথায় চাইবো? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি গত চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্রবন্ধু, আমি কাউকে পাই না মা।
যাদেরকে পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনা বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়!
আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কি বলবে এই গেলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মত (যাদের অনেক নাম এক্ষুণি মনে পড়ে গেল) তাদের মত আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো।
আফসোস ছাড়া কারোর কি করবার থাকবে তখন!
আমি তাদের মত চুপ কি করে থাকতে পারি মা?
আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোনো অন্যায় মেনে নিতে!
আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহূর্ত মাকে খুব দরকার এখন,
মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে , ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্যে দরকার।
আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্যে আপনাকে দরকার মা।
মা আমি বাচঁতে চাই।
আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।
-আমাদের সময়