প্রাচ্য-প্রতীচীর কোভিডকাল শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা
গত ৩০শে অক্টোবর, শনিবার। কোভিডের বিভিন্ন জটিল কারিগরি বিষয়বস্তু, পটভূমি, অর্থনৈতিক মানবিক প্রেক্ষিত, বাংলাদেশ এবং বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সহজবোধ্য বাংলায় রচিত বইটির মোড়ক উন্মোচন এবং আলোচনা করেন বরেণ্য কবি আসাদ চৌধুরী, কানাডায় বাংলাদেশের মান্যবর হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান, ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শুভ বসু, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক, লেখক তাজুল মোহাম্মদ, রিসার্চ সায়েন্টিস্ট/ফার্মাসিস্ট। সভাপতিত্ব করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন।
বইটির উপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন জাপানের আইচি গাকুইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. কুদরতে খোদা, সাংবাদিক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শামসাদ রানা, সাইবেরিয়ান ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং অধ্যাপক ড.এনএন তরুণ চক্রবর্তী, কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ওয়াইজ আহমেদ, ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহতাব চৌধুরী, যমুনা টিভির সাবেক নির্বাহী মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া এবং এনভারনমেন্ট কানাডা্র বিজ্ঞানী ড. সৈয়দ জাহিদ হোসেন । শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মহামান্য রাষ্ট্রপতির এপিএস নাহিদ পারভিন, হেলথ কানাডার ড. আশিকুর রহমান সহ মন্ট্রিয়লের লেখক, সাংবাদিক, পেশাজীবি, সংগঠক প্রমুখ বিশিষ্টজন।
সময়মত শুরু হওয়া, সুশৃঙ্খল একাডেমিক ধাঁচের এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন স্বনামধন্য সংবাদ পাঠিকা/সাংবাদিক সৈয়দা যোহরা শাম্মী আর মনিপুরী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সেরাম রিপন। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোভিডে আর কোভিড সৃষ্ট চিকিৎসা সেবা জটিলতায় প্রয়াতদের সন্মানে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব, বইটির প্রকাশক (সাহিত্য প্রকাশ) জনাব মফিদুল হকের শুভেচ্ছা বক্তব্য পাঠ করা হয়। আলোচনা শেষে আবৃতি আর গানে ছিলেন মন্ট্রিয়ল অটোয়ার স্বনামধন্য পারফর্মারবৃন্দ।
বিশেষ অতিথি রাষ্ট্রদূত ড. খলিলুর রহমান মন্ট্রিয়লে বসে ড. শোয়েবের বাংলায় কোভিডের উপর এরকম একটি চমৎকার বিজ্ঞানভিত্তিক বই রচনায় ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলাদেশ সরকারের কোভিড ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সফলতা তুলে ধরেন। তিনি ড. শোয়েবকে বাংলাদেশ সরকারের কোভিড ব্যবস্থাপনায় সফলতা ব্যর্থতার দিকগুলো তুলে ধরে আরও লেখার আহবান জানান। ড. খলিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোভিড সেলের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকার সময় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার বিষয়ে কথা বলেন। চীনের সহযোগিতায় বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনে বিষয়ে আলোকপাত করেন।
বিশেষ অতিথি কবি আসাদ চৌধুরী শরৎচন্দ্রের “পা থাকলে হাঁটা যায়, হাত থাকলেই লেখা যায় না” উক্তির উল্ল্যেখ করে বক্তব্য শুরু করেন। কোভিড নিয়ে বাংলায় প্রকাশিত বইটির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বইটির ইংরেজী ভাষ্যের উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন কোভিড নিয়ে কথা বলার যোগ্য ব্যক্তি বেশী নেই, পণ্ডিত আছে অনেক। সংবাদপত্রের কাজ হচ্ছে জটিল বিষয়গুলো সাধারণের উপযোগী করে উপস্থাপন। শোয়েব অণুজীববিদ এবং নিয়মিত সংবাদপত্রে লিখেন ফলে এমন একটি জটিল বিষয়ে সহজবোধ্য একটি বই বের করা সম্ভব হয়েছে। আমি বিজ্ঞানের লোক নই, বইটি পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে খুব জটিল একটি কাজ শোয়েব করে ফেলেছে খুব সহজেই যা ইতিহাসের সাক্ষ্য হয়ে থাকবে।
ড শুভ বসু বলেন অতিমারী কোন রাজনৈতিক সীমানা মানে না, একদেশে হলে অন্য দেশ সহজেই আক্রান্ত হবে এবং বিশ্বায়নের চেহারা নিবে। ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী, কোভিড মহামারী উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্বায়ন ঘটেছে। মহামারী শুধু বিজ্ঞানের বিষয় নয়, অর্থনৈতিক সামাজিক সংকটের বিষয় হয়ে যায়।
তাজুল মোহাম্মদ ড. শোয়েবের লেখার জগতে বিচরণ বিশেষ করে ভ্রমণ কাহিনী বিষয়ে এবং সম্প্রতি কোভিড বিষয়টি উল্ল্যেখ করে বইটি রচনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন বইটি কোভিডকালের প্রামাণ্য দলিল হয়ে থাকবে।
ড. হারুনুর রশিদ রাজা বইটির মধ্যে থাকা বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশে কোভিড নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা বিষয়ে কি কলামে, কি টকশোতে ড. শোয়েবের বিজ্ঞান কেন্দ্রিক লড়াইয়ের বর্ণনা দেন। বাংলা ভাষাভাষীদের জন্যে জটিল কারিগরি বিষয়ে সহজবোধ্য বাংলায় উপস্থাপনার একটি ধারা তৈরির প্রশংসা করেন।
বইটির লেখক ড. শোয়েব তাঁর বক্তব্যে প্রথমে সবাইকে ধন্যবাদ জানান। লেখক বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন প্রচেষ্টার বিষয়ে বলে গিয়ে ভ্যাকসিন নিয়ে বৈশ্বিক রাজনীতির কথা উল্ল্যেখ করে বলেন রাজনীতি এবং বৈজ্ঞানিক জটিলতার কারণে যেখানে জাপান আর কানাডার মত উন্নত দেশও ভ্যাকসিন উৎপাদন এগুতে পারেনি সেখানে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জটিলতা সহজেই অনুমেয়। ড. শোয়েব টিকাদানের সুফলে আর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের পড়ন্ত বেলায় নতুন কোন ভ্যারিয়েন্ট অব কন্সারনের উদ্ভব না হলে কোভিডের অবসান বেশী দূরে নয় বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন স্বাস্থ্য, অর্থনীতি আর শিক্ষা ব্যবস্থার উপর কোভিডের কুপ্রভাবের বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বইটিতে আলোচ্য কোভিড সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের উদাহরণ টেনে ড. শোয়েবকে ধন্যবাদ জানান কোভিড বিষয়ে গনসচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখার জন্যে।
গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠানের ছবিগুলো দেখতে হলে
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান