বোয়িং ৭৪৭ নিয়ে আকাশে দাপিয়ে বেড়ান, ‘ডাম্ব ব্লন্ড’-এর সংজ্ঞা বদলে দিয়েছেন এই সুন্দরী
বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়স্বজনদের জন্য ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট খোলামাত্রই তার উড়ান শুরু। ত়ড়িৎগতিতে ভক্তসংখ্যা ছাড়িয়ে যায় এক লক্ষ ১১ হাজারের কোঠা। তবে কিম ডি ক্লপ আর পাঁচটা ইনস্টা-ব্যবহারকারীর থেকে সামান্য আলাদা।
তিনি প্রচলিত অর্থে চোখধাঁধানো সুন্দরী। একঢাল সোনালি চুলের কিম অবশ্য প্রচলিত নানা ধ্যানধারণাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছেন। ইংরেজি শব্দবন্ধ ‘ডাম্ব ব্লন্ড’ অর্থাৎ ‘সুন্দরী মানেই বুদ্ধিহীন’— এই ধারণাকেই ভেঙে খানখান করে দিয়েছেন কিম।
বয়স ২৭। তবে এই বয়সেই বোয়িং ৭৪৭ বিমানের চালক কিম। সেই বিমান নিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছেন আমেরিকা থেকে চিনের শহরের পর শহর।
ইনস্টাগ্রামে কিমের জনপ্রিয়তা দেখে তাঁকে স্পনসর করতে এগিয়ে এসেছে অভিজাত ঘড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘ব্রাইটুলিং’। শুধু তা-ই নয়, কিমের পছন্দের একটি ঘড়িও তাঁকে উপহার দিয়েছে তারা। ভারতীয় মুদ্রায় যার দাম আট লক্ষ টাকারও বেশি। তবে শর্ত— মাসে অন্তত এক বার ইনস্টাগ্রামের পোস্টে ওই ঘড়ি দেখাতে হবে।
কিমের উড়ান শুরু হল কবে? বেলজিয়ামের এই সুন্দরী বলেন, ‘‘১৯ বছর বয়সে ঠিক করেছিলাম, পাইলট হব!’’ তখন থেকেই সে পথে দৌড় শুরু।
কিমের উড়ান শুরু হল কবে? বেলজিয়ামের এই সুন্দরী বলেন, ‘‘১৯ বছর বয়সে ঠিক করেছিলাম, পাইলট হব!’’ তখন থেকেই সে পথে দৌড় শুরু।
বছর দুয়েক ধরে ‘ব্লু এয়ার’-এর বিমান উড়ানোর পর ২০১৭ সালে সে সংস্থার কাজ ছেড়ে দেন কিম। এর পরের যাত্রা ‘নরওয়েজিয়ান’-এ। নরওয়ের ওই সংস্থায় পা রেখেই তাঁর ইনস্টাগ্রামে বিমানচালকের পোশাকে নিজস্বীর নীচে লিখে দেন ক্যাপশন— ‘নতুন জীবন, নতুন স্টাইল’! ১০ হাজারের বেশি ভক্ত সে ছবি পছন্দ করেছিলেন।
নতুন সংস্থায় যোগ দেওয়ার পর কিমের বসতি বদলও হয়েছিল। এ বার তাঁর যাত্রা ছিল স্পেনের বন্দর শহর আলিকান্তে। কিম জানিয়েছেন, বেলজিয়ামের তুলনায় সেখানকার জিনিসপত্রের দাম বেশ কম। ফলে বিমানবন্দরের কাছেই একটি বাড়ি কিনে ফেলেন তিনি।
কাকতালীয় ভাবে, নতুন বাড়ি কেনার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর জীবনে এসেছিলেন উইলিয়াম। কিম জানিয়েছেন, ‘নরওয়েজিয়ান’-এ তাঁর কো-পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলেন উইলিয়াম। কিছু দিনের মধ্যেই তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তা প্রেমে পরিণত হতে সময় লাগেনি। ডেটিংও শুরু করেন তাঁরা। কয়েক দিন পর কিমের সঙ্গে থাকতেও শুরু করেন উইলিয়াম
‘নরওয়েজিয়ান’-এ তিন বছর কাজ করার সময় কিমকে মাসের ১০ দিন বিমান ওড়াতে হত। আলিকান্তে থেকে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার যে কোনও শহর ছিল তাঁর গন্তব্য। নিজের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে সন্ধ্যায় উইলিয়ামের সঙ্গে সময় কাটাতেও পারতেন কিম। মাসের বাকি ২০ দিন সাঁতার কেটে আর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা মেরেই দিন কাটাতেন তিনি।
করোনাকালে আরও অনেকের মতো কিমের জীবনও স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে ২০১৯ সালে অতিমারির সময় দু’জনেই মালবাহী বিমানের চালক হিসেবে কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। কিম এবং উইলিয়াম দু’জনেই বেলজিয়ামের ‘চ্যালেঞ্জ এয়ারলাইন্স’-এ যোগদান করেন।
২০১৯ সাল থেকে বোয়িং ৭৪৭-৪০০ বিমান ওড়াতে শুরু করেন কিম। অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে এই বিমানটি ‘আকাশের রানি’ বলে পরিচিত। প্রথম দিকে ৪০০ টন ওজনের এই ভারী বিমান ওড়াতে সামান্য ভয় থাকলেও ধীরে ধীরে তাতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন কিম। তিনি বলেন, ‘‘গোড়ার দিকে এই বিমান ওড়াতে একটু ভয় লাগছিল। তবে পরে মানিয়ে নিয়েছিলাম।’’
বিমানচালক হিসেবে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, হিউস্টন থেকে শুরু করে চিনের উহানেও উড়ে গিয়েছেন কিম। তবে কিম জানিয়েছেন, অচেনা কারও সঙ্গে পরিচয় হলে তাঁদের অনেকের মুখেই প্রথম প্রশ্নই— ‘‘আপনি কি বিমানসেবিকা?’’ বিমানচালক হিসেবে এখনও যে মহিলাকে দেখতে অভ্যস্ত নয় সমাজের বড় অংশ, তা মনে করেন কিম। তবে তাঁর উত্তর প্রায়শই এক হয়, ‘‘মহিলা হিসেবে এই ক্ষেত্রে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত!’’
-আনন্দবাজার থেকে।
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান