প্রবাসের সংবাদ ফিচার্ড

ঊনবাঙালের ৩৯ তম সভা সাহিত্যে নৈতিকতার অবস্থান 

 ঊনবাঙালের ৩৯ তম সভা সাহিত্যে নৈতিকতার অবস্থান 
 
নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় ৩৯ তম ঊনবাঙাল সভা। ঊনবাঙালের সভাপতি মুক্তি জহির অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। সভার শুরুতে ছিল ৩০ মিনিটের একটি বিষয়ভিত্তিক আলাপচারিতা। এ-দিনের বিষয় ছিল “সাহিত্যে নৈতিকতার অবস্থান”। নির্ধারিত আলোচক ছিলেন মাহমুদ রেজা চৌধুরী এবং কাজী জহিরুল ইসলাম। আলাপচারিতা সঞ্চালনা করেন কবি ও আবৃত্তি শিল্পী সুমন শামসুদ্দিন। দর্শকদের মধ্য থেকে বন্যা মির্জা, তাসের মাহমুদ এবং ইমাম চৌধুরী আলোচনায় অংশ নেন। প্রাণবন্ত এ-আলোচনায় নৈতিকতার ধারণা, দেশে দেশে এর ভিন্নতা এবং সাহিত্যে এর প্রয়োগ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় উঠে আসে। সঞ্চালক সাহিত্যে পরকিয়া প্রেম বিষয়ক এক প্রশ্নের অবতারণা করলে আলোচনাটি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং দর্শকদের মধ্য থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়ামূলক মন্তব্য উঠে আসে।
 
আগস্ট বাঙালির শোকের মাস। এই মাসে বাংলা ভাষার চারজন প্রধান কবি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন, তারা হলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি শামসুর রাহমান এবং কবি শহীদ কাদরী। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে এই চার কবির কবিতা থেকে আবৃত্তি করার মধ্য দিয়ে ঊনবাঙাল তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এই পর্বটি পরিচালনা করেন মুক্তি জহির নিজেই। তিনি প্রয়াত চার কবির জীবন কীর্তি পড়ে শোনান, পরে আবৃত্তি শিল্পীরা তাদের কবিতা পাঠ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “সাধারণ মেয়ে” কবিতাটি আবৃত্তি করেন বন্যা মির্জা, “হঠাৎ দেখা” আবৃত্তি করেন আহসান হাবীব। কবি কাজী নজরুল ইসলামের “মানুষ” কবিতাটি পড়ে শোনান সুমন শামসুদ্দিন, এবং “নারী” পাঠ করেন মোঃ নজরুল ইসলাম। কবি শামসুর রাহমানের “আসাদের শার্ট” পড়েন ফরিদা ইয়াসমিন সবশেষে শহীদ কাদরীর “তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা” পড়েন নাসিমা আখতার ও “সঙ্গতি” পড়েন মাহফিল আলী। 
 
এ ছাড়া তৃতীয় পর্বে ওয়াহেদ হোসেন এবং বাবু জামান অন্যান্য কবির কবিতা আবৃত্তি করেন। এই পর্বে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ট্রাজেডির ওপর স্বরচিত পুঁথি পাঠ করেন ধুপ শিখা। নিজের লেখা কবিতা ও গদ্যাংশ পড়ে শুনিয়েছেন এইচ বি রিতা, মিয়া এম আসকির, সুলতানা ফিরদৌসী, মোশাররফ হোসেন, সৈয়দ হাশমত আলী, ইমাম চৌধুরী, তাসের মাহমুদ, ফাহমিদা ওয়াদুদ, সৈয়দ কামরুল, সৈয়দ রাব্বী, কাওসার চৌধুরী, মাহমুদ রেজা চৌধুরী প্রমূখ। তৃতীয় পর্বটি সঞ্চালনা করেন ঊনবাঙালের অন্যতম সদস্য ইমাম চৌধুরী। 
 
ঊনবাঙাল সভার সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ এর শেষ পর্ব। এই পর্বে কবি কাজী জহিরুল ইসলাম পঠিত লেখাগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন। তিনি কবিদের কিছুকাল গভীর অভিনিবেশের সঙ্গে ছন্দে কবিতা লিখতে পরামর্শ দেখতেন। অনুষ্ঠানে যারা শুদ্ধ ছন্দের কবিতা উপহার দিয়েছেন তিনি তাদের নাম উল্লেখ করে প্রশংসা করেন এবং অন্যদের তা অনুসরণ করতে বলেন। কবিতায় রহস্যময়তার ঘোর তৈরি করতে বলেন, চিত্রকল্প নির্মাণের পরামর্শ দেন এবং সততার সঙ্গে কবিতার চর্চা করতে বলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি কবিতায় “নিমগ্ন” হওয়া এবং নিজেকে “সমর্পন” করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন