গণস্বাস্থ্যের কিট নিয়ে ভাবনা
বিশিষ্ট সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজার সঞ্চালনায় ডঃ বিজন কুমার শীলের সাক্ষাৎকারের ভিডিও আর প্রিন্টিং ভার্সন দুটোই শুনা এবং পড়ার সুযোগ হয়েছে। ডঃ বিজনের মত বড় মাপের বিজ্ঞানী যিনি সম্মুখ সারির কোভিড যোদ্ধা হিসেবে দিনরাত ল্যাবে ব্যস্ত রয়েছেন মানবতার কল্যাণে আমাদের হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা আর শ্রদ্ধা উনার জন্যে। সাক্ষাৎকারে বহু বিষয়ে কিছু প্রশ্নের জ্ঞানগর্ভ উত্তর/বিশ্লেষণে আমরা সমৃদ্ধ হয়েছি। কিছু কিছু বিষয়ে আমার অস্বস্তিও লেগেছে। সমালোচনা নয়, আলোচনার জায়গা থেকে কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে কয়েকটি পয়েন্টে ভাবছি।
প্রথমত সাক্ষাৎকারের টাইটেলটি “আমরা যা আজ ভাবছি, পশ্চিমা বিশ্ব তা আগামীকাল ভাবছে”, ভাল লাগেনি। আমি আমার অনেক লেখায় বহুবার বলেছি বিজ্ঞান সাংবাদিকতায় আমাদের দুর্দশার কথা। যিনি রিপোর্ট করছেন তাঁর স্বাধীনতা আছে টাইটেল নির্বাচনে, যেটি ভাল মনে করেছেন গ্রহণ করেছেন। তবে আমার কাছে টাইটেলটিকে পাতলা অর্থাৎ বিষয়ের চেয়ে অনেক হাল্কা মনে হয়েছে। একজন কবি, কিংবা রাজনৈতিক নেতা দেশপ্রেম বা আবেগের প্রকাশে এভাবে ভাবতে পারেন, কিন্তু একজন বিজ্ঞানী তো বিজ্ঞান বিষয়ে এভাবে কথা বলবেন না, বিশেষ করে কোভিড যুদ্ধের মত বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি নির্ভর বিষয়ে এই মুহূর্তে যেখানে মানব সভ্যতা লাইফ সায়েন্সের অর্জিত জ্ঞানের সবটুকু ঢেলে দিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা করেছে SARS-CoV-2 এর লাগাম টেনে ধরতে। ইউরোপ আমেরিকা, জাপান সহ ফার ইস্টের দেশগুলোর চেয়ে বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশেষ করে কোভিড প্রযুক্তিতে আমরা বিশ্বে সবার আগে আগে, পাইওনিয়ার এবং স্বপ্নদ্রষ্টা এরকম বুঝানো কি ছেলেমানুষি হয়ে গেল না?
RTPCR টেস্ট নিয়ে ডঃ বিজন কথা বলেছেন। বিভিন্ন বিজ্ঞান সাময়িকী বা জার্নালে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায় RTPCR এ ভুলের পরিমান ২-৩০%।স্যাম্পল ব্যবস্থাপনায় ভুল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ডঃ বিজন এবং সঞ্চালক হাইএন্ড ৩০% এর উপর জোড় দিয়েই কথা বলেছেন। কোভিড সংকট কয়েক মাস ধরে বিশ্বব্যাপী “ল অব ডিমিনিশিং রিটার্ন” এর সুত্র অনুসারে পিকে উঠে এখন নীচের দিকে নামছে অর্থাৎ অনেক দেশেই এটি এখন যৌবনকাল পেরিয়ে এসেছে। গত কয়েক মাসের লড়াইয়ে কোভিড নির্ণয়ে বিশ্বব্যাপী এই RTPCR টেস্ট হচ্ছে মূল অস্ত্র এবং এটি স্যাম্পল নেওয়া, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণের নানা ত্রুটি পার হয়ে কোটি মানুষের টেস্ট করে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ডে দাড়িয়ে আছে। এন্টিজেন টেস্টের RTPCR এর স্বীকৃত পদ্ধতির বিপরীতে গণস্বাস্থ্যের স্যালাইভা থেকে এন্টিজেন টেস্টটির তুলনা করার সময় এখনো আসেনি, তুলনা করলে সেটি হবে ভীষণ প্রিম্যাচুউর। বরং গণস্বাস্থ্যের এন্টিবডি টেস্ট নিয়ে বেশী আলোচনা হওয়া উচিত ছিল। এই কিট উদ্ভাবনের প্রথম দিকে সবাই জেনে এসেছে এটি সেরোলজিক্যাল টেস্ট কিট। পরে হঠাৎ করেই আবার এন্টিজেন টেস্টের কথা বলা হল। আরটিপিসিআর টেস্টের ১২৫ ডলারের বিপরীতে গণস্বাস্থ্যের কিট ৩ ডলারের কিন্তু এই সুবিধে এখন পর্যন্ত বিশ্ব তো দূরের কথা বাংলাদেশও পায়নি। কেন পায় নি, কারণগুলো নিয়ে বিতর্ক আছে, আর আমরা তা জানি। বিপুল মানুষের টেস্টের ক্ষেত্রে এন্টিবডি টেস্ট খুবই কার্যকরী এবং এই জায়গাটিতে গণস্বাস্থ্যের কিট আশার আলো। গণস্বাস্থ্যের এন্টিবডি কিটের সাথে RTPCR টেস্টের কোন প্রতিযোগিতা নেই; সংক্রমণের একেক সময়ে একেকটি বেশী কার্যকরী। আমাদের সময়ের নির্বাচিত কলামে “কোভিড টেস্টের কুহেলিকা” শীর্ষক কলামে টেস্ট বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছি। কিট বিষয়ে গণস্বাস্থ্যের ক্লেইম এখনো প্রমাণের অপেক্ষায় আছে, পাব্লিকেশনও নেই, ফলে গবেষণা জগতে একটু বিভ্রান্তি আছে। সুনির্দিষ্ট উদ্ভাবনে একজন বিজ্ঞানীর বক্তব্য বিপণন কৌশলের চাইতে ডাটা আর পাব্লিকেশন নির্ভর হবে এটাই তো কাঙ্খিত।
সঞ্চালক প্রশ্ন করেছিলেন কিন্তু বিষয়টি স্পষ্ট হয়নি ২০০৩ সালে সিঙ্গাপুরে ডঃ বিজনের সার্স ডিটেকশনে পিসিআর পদ্ধতির ডিজাইন উদ্ভাবনের সাথে এখনকার আরটিপিসিআর টেস্টে লিঙ্ক আছে কিনা। দর্শকদের আগ্রহ রয়েছে এটি জানতে এবং এটি অবশ্যই হবে আমাদের গর্বের জায়গা। কোভিড সংকটে আন্যালাইটিক্যাল টুলস হিসেবে আরটিপিসিআর রীতিমত সেলিব্রেটি। মার্কিন বিজ্ঞানীর এই পিসিআর টেকনোলজি তো নোবেল বিজয়ী।
গণস্বাস্থ্যের টেস্ট কিট সঠিক ফলাফল দেয় না এটিকে প্রচারণা হিসেবে সঞ্চালকের প্রশ্ন ছিল। কিন্তু সেরোলজিক্যাল বা এন্টিবডির টেস্টের সফলতার হার নিয়ে সংশয় প্রচারণা নয়, বরং উন্নত বিশ্বের গুরুতর কন্সার্ন। হেলথ কানাডা সহ উন্নত বিশ্বের কোন দেশই এই পথে হাঁটেনি। হেলথ কানাডা, ইউএসএফডিএ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এন্টিবডি টেস্টের ক্ষেত্রে একই অবস্থা্নে। কেইস নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এন্টিজেন/নিউক্লিক এসিড নির্ভর টেস্ট (আরটিপিসিআর) অন্যদিকে গবেষণা আর পরিস্থিতি মূল্যায়নে সেরোলজিক্যাল বা এন্টিবডি টেস্টের ক্ষেত্রে সব দেশেরই ঐক্যমত রয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ইমিউনিটি হার বুঝবার জন্যে মিলিয়ন্স কানেডিয়ানদের টেস্টের ঘোষণা দিয়েছেন এবং এই ক্ষেত্রে এন্টিবডি টেস্ট বড় হাতিয়ার হবে। কঠোর বৈজ্ঞানিক রিভিউ করার পর হেলথ কানাডা গত ১২ আর ১৪ই মে দুটো সেরোলজিক্যাল টেস্টের অনুমোদন দিয়েছে। ইমারজেন্সি ইউস অথরাইজেশন এক্টের অধীনে এফডিএ ক্লিনিক্যাল গবেষণাগারে ১২টি সেরোলজিক্যাল টেস্টের অনুমোদন দিয়েছে। প্রায় ১০০টির উপর টেস্ট কোম্পানি এফডিএ কে জানিয়েছে যে উনারা এন্টিবডি টেস্টে কোভিড-১৯ ডিটেক্ট করতে চান। বিশ্বের বহু দেশে এন্টিবডি টেস্ট কিট প্রস্তুত। বিশ্বব্যাপী এন্টিবডি টেস্টের উপচে পড়া আত্মপ্রকাশের মধ্য থেকে সত্যিকারের অর্থে কার্যকরী টেস্ট কিট পাবার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ, সিডিসি এবং এনআইএইচের মত প্রতিষ্ঠান মান নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে, নতুবা শত শত এন্টিবডি টেস্ট কিটের অরাজকতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কানাডার স্পারটান কোম্পানির পোর্টেবল ডিএনএ ডিভাইস দিয়ে এন্টিজেন টেস্ট সরকারীভাবে সাড়া ফেললেও পরে দেখা গেল ল্যাব সেটআপের বাইরে সমস্যা হচ্ছে, সরকার সাথে সাথেই এই টেস্ট বন্ধ করে দেয়। কোভিড টেস্টে নিউক্লিক এসিড বা সেরোলজিক্যাল উভয় পথে নানা রকম জটিলতা রয়েছে, তাই ক্লেইমের সরব অবস্থানের পাশাপাশি পারফর্মেন্সের প্রমান তো দিতে হবে। এই সব ক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বে মিডিয়ার আচরণ ভীষণ দায়িত্বশীল। অনুজীববিদ্যার সাথে সংশ্লিষ্ট বহু বাংলাদেশী অভিবাসী বিশেষজ্ঞ দ্বিধাগ্রস্ত এই ভেবে গণস্বাস্থ্য বিভিন্ন স্তরে কোভিড টেস্টের অপ্রত্যাশিত জটিলতাগুলো আমলে নিচ্ছে কিনা।
স্যালাইভা টেস্ট, জাপান, প্যাটেন্ট ইত্যাদি অনেক বিষয়ে কথা হয়েছে এই সাক্ষাৎকারটিতে। স্যালাইভা টেস্ট বিষয়ে প্যাটেন্ট এপ্লিকেশন করা হয়েছে মাত্র, একসেপ্ট হতে সময় লাগে, চ্যালেঞ্জও হতে পারে। একসেপ্ট হলেও বৈশ্বিক কোভিড সংকটে প্যাটেন্টের নামে মানবতার কল্যাণ ব্লক করে রাখার বিষয়টি বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিবে। স্যালাইভা টেস্ট নিয়ে এত সব তথ্যের মধ্যে গতকাল দেখলাম এন্টিজেন কিটের স্যালাইভা টেস্টের ত্রুটি নিয়ে উদ্বিগ্ন গণস্বাস্থ্য বিএসএমএমইউকে চিঠি দিয়ে এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল টেস্ট বন্ধ করতে বলেছে। তারা বলছেন স্যাম্পল সংগ্রহে সমস্যা। তাহলে আমরা কি অন্য সব ক্ষেত্রের মতই বিজ্ঞান বিষয়ে অতিকথনে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি? গণস্বাস্থ্যের টেস্ট কিট নিয়ে নজীরবিহীন মাত্রার আলোচনা, টকশো, সাক্ষাৎকার হয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার পেশাদারিত্ব দারুণভাবে ব্যাহত হয় যদি প্রতিদিনই টিভি বা সংবাদপত্রে নিউজ হতে থাকে। বিজ্ঞান সাংবাদিকতায় দক্ষতার অভাবে পাঠক/ দর্শকরা বিভ্রান্ত হন “কর্দমাক্ত আকাশ আর মেঘভরা মাঠের মত” অতিকথনে। এই অবস্থায় গণস্বাস্থ্য এখন এন্টিবডি টেস্টে এগিয়ে যেতে চাচ্ছে।
যে কোন গবেষণা প্রোজেক্টে মূলে থাকে সুনির্দিষ্ট একটি টার্গেট। একাধিক টার্গেট বিষয়টিকে জটিল করে ফোকাসলেস করে ফেলে, গবেষকরা এটি ভাল করেই জানেন। বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের প্রাণভোমরা হচ্ছে পিয়ার রিভিউ অর্থাৎ জার্নালে প্রকাশনা বা প্যাটেন্ট । কোন প্রকার পিয়ার রিভিউ ছাড়া গণস্বাস্থ্যের এন্টিজেন এন্টিবডি, রক্ত, স্যালাইভার মত ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে একসাথে এগুতে গিয়ে বিষয়টিকে জটিল করার মর্ম আমি বুঝিনি। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এন্টিবডি টেস্টের ৯০% সফলতা বিশাল বিষয়। সম্প্রতি মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি আর গবেষণায় নামকরা বহুজাতিক কর্পোরেট এবোট যুক্তরাষ্ট্রে এবং পরবর্তীতে ইউরোপে এন্টিবডি টেস্টে ৯৯% এক্যুরেসী দাবী করে বসে। কিন্তু এই দাবী ছিল লক্ষণ প্রকাশের দুই সপ্তাহ পর টেস্ট করা সাবজেক্ট থেকে, ফলে এটি রোগ নির্ণয়ে আরটিপিসিআর এর বিকল্প হতে পারেনি।
উন্নত বিশ্ব থেকে গরীব দেশগুলো চাতক পাখির মত তাকিয়ে আছে গণস্বাস্থ্যের দাবী অনুসারে ভীষণ কার্যকরী টেস্ট কিটের মত একটি যুগান্তরকারী উদ্ভাবনের জন্যে। কোভিড সংকটে সহযোগিতার জন্যে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সরকার, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, রেগুলেটরি এজেন্সি একই সুত্রে গাঁথা, অনেকটা গ্লোবাল ভিলেজের মত। ডঃ বিজন এবং গণস্বাস্থ্যের আন্তর্জাতিক গবেষণা লিঙ্কের তো অভাব নেই। বাংলাদেশ সরকারের সাথে বনিবনা না হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দৃষ্টি আকর্ষণ কেন করা হল না বা গেল না বুঝতে অক্ষম। ইন্টারনেটে ক্লিক করলে দেখা যায় গণস্বাস্থ্যের ৩ ডলারের এই কিট উদ্ভাবন প্রক্রিয়া বিশ্ব গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা পেয়েছে। সেই ক্ষেত্রে গণস্বাস্থ্য কেন রিয়েল টাইম আন্তর্জাতিক পার্টনার পেলনা, ব্যাখ্যা থাকা উচিত। একটি উদাহরণ দেই; চীনাকোম্পানি CanSino Bilogistics এর ভ্যাকসিন AdV5-nCov এর সম্ভাবনার বিষয় কানেডিয়ান বিশেষজ্ঞরা দ্রুত মূল্যায়ন করে কানাডা সরকারকে সফল হবার সম্ভাবনা ব্রিফ করে। কানাডা সরকার দ্রুত চীনা কোম্পানিটির সাথে চুক্তি করে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দেয় হ্যালিফেক্স শহরের ডালহৌসী বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী সেটি ঘোষণা করেছেন। এই ভ্যাক্সিনে চীনাদের ট্রায়ালের প্রাথমিক সাফল্য ল্যান্সেট জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে অর্থাৎ পিয়ার রিভিউড। সফলতার গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত ছাড়া কানাডা সরকার, সংবাদ মাধ্যম গবেষণাকালে নীরব থাকবে এটিই বিজ্ঞান গবেষণার সংস্কৃতি। অতি সম্প্রতি কানাডা সরকারের ভ্যাক্সিন দেবার জন্যে কয়েক কোটি সিরিঞ্জ কেনার আয়োজন ভ্যাক্সিন প্রোজেক্টের নীরব অগ্রগতি হিসেবে অনেকেই দেখছেন। কানাডা চীনের এই পার্টনারশীপের মত গণস্বাস্থ্য কেন এরকম প্রোমাইজিং টেস্ট কিটে কোন উন্নত দেশকে পার্টনার হিসেবে পেলনা এই প্রশ্ন তো উঠতেই পারে। পেলে কারিগরি আর লজিস্টিক বিষয়ে বিশাল হেল্প হত, করোনা সঙ্কট তো বৈশ্বিক সংকট, দেশভিত্তিক নয়।
ডঃ বিজন বাংলাদেশে ৩০-৪০% সংক্রমণের কথা বলেছেন। কোভিড সংক্রমণে ২০ বছরের নীচের গ্রুপ তেমন উল্ল্যেখযোগ্য নয়। বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৪০% ২০ বছরের নীচে। শহর এলাকার সংক্রমণের ইন্টেনসিটি আর গ্রামে এক নয়, ফলে মোট ৩০-৪০% হারটি কিন্তু সংখ্যায় বিশাল, কোটি কোটি এবং এই ক্ষেত্রে আমি আরও ক্যালকুলেটিভ হিসেবের পক্ষে। তবে বাংলাদেশে সংক্রমণের হার অবশ্যই খুব উদ্বেগজনক। বাংলাদেশে মৃত্যু হার কম; এ নিয়ে ডঃ বিজনের আলোচনা খুবই যৌক্তিক। ইমিউনিটির এই সুবিধে, ভাইরাসটির বাংলাদেশী ভার্সনের সিকুয়েন্সিং নিয়ে আমাদের স্থানীয়ভাবে প্রচুর গবেষণা দরকার, সরকারের সুনির্দিষ্ট প্রোজেক্ট দরকার।
গণস্বাস্থ্যের সাথে প্রশাসনের টানাপড়েনে অনেকেই বিরক্ত। এটি এত দীর্ঘায়িত হওয়া উচিত ছিলনা। কিন্তু গণস্বাস্থ্যের নিজেদের দিকেও একটু তাকানো উচিত, বিশেষ করে টেস্ট করার পদ্ধতি নিয়ে অস্থিরতা। বিষয়ভিত্তিক সমালোচনা, চ্যালেঞ্জ আমলে নিয়ে স্থির চিত্তে নির্দিষ্ট ফোকাসে গবেষণাধর্মী মাইন্ডসেট সম্ভবত সবচেয়ে উপকারী বন্ধু। দিনশেষে গণস্বাস্থ্য সফল মানে বাংলাদেশ সফল।
লেখকঃ কলামিস্ট এবং মাইক্রোবিয়াল বায়োটেক বিষয়ে মন্ট্রিয়লে বহুজাতিক কর্পোরেটে ডিরেক্টর পদে কর্মরত।
সি/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন