ফিচার্ড সাহিত্য ও কবিতা

আবুল কাসিম ||| পুলক বড়ুয়া 

আবুল কাসিম ||| পুলক বড়ুয়া


একফালি রোদ
একফালি হাওয়া
এক চিলতে জমি
একটুকরো মাটি
একটুকরো ভিটে
বালিয়াড়ি
ধুলোবালি
চর আর তীর
থিতু হয়ে আছে একটি পারাপার
জোয়ার ভাটার নদী, ইছামতি

উড়ে উড়ে দেখি না
রাইখালি বাজারে উঠে আসতে
পায়ে পায়ে দেখি না
রাইখালি বাজারে হাঁটু ভেঙে বসে থাকতে
শুধু তার স্থবির চিত্র
শুধু তার মৌন হর্ষ
শুধু তার মৌন হাসি
লুঙ্গি আর শার্ট সাঁটা
আমার চোখের ফ্রেমে
সুদূর-দৃষ্টির দেয়ালে টানানো এখন
বিস্মৃত-চারণমুখ আবুল কাসিম

ভোরের কুয়াশা থেকে রোদ্দুরের মতো উদিত
নিঃশব্দ তারাবাতির মতো ফিনকি দিয়ে ওঠা
আনাজের ওপর ঝরে না
আবুল কাসিমের কুশল
কত সস্তায় দেখি না যা চাই দিতে
একাত্তরে হাটবারে সন্ধ্যায়
চেরাগের টিমটিমে আলোয় চড়ে ধীরে ধীরে
যাকে আমাদের বাড়িমুখো
বাবাকে সদাইপাতি দিতে এগুতে দেখতাম
আগাপাশতলা সেই মানুষকে দেখি না
পা থেকে মাথা অব্দি সেই তামাটে মানুষটি খালি
মাটির ওপরে দেখি না কোথাও
আপাদমস্তক সেই শরীর
সহজ সরল তনুমন

দেখলেই বলতেন, ‘ক্যান আছ’,
সেই শিহরিত প্রশ্নবোধক শূন্যচিহ্ন
ঝরে বিস্ময়বোধক চিহ্নের মতোন আঁখিজল

কর্ণফুলী ওরফে বড় খাল যার তরিতরকারি
যেকোনো মানুষের চেয়ে সুপ্রিয়, এমত সুস্বাদু
সেইসব মানুষ ও শস্যের চেয়ে
প্রভূত প্রিয়ভাজনেষু
আমাদের একজনই আবুল কাসিম
বেঁটেখাট নির্জন মানুষ
ছোটখাটো একটি নীরব মানুষ

কোনোদিন শুনব না আর তার
‘অ ডাকতর’ বলে দিলখোলা আত্মার হাঁক
ঘাটার আগায় উঠত বেজে
মুক্ত প্রাণের সুপ্ত ধ্বনি
উদাত্ত অবিনাশী তার-কন্ঠস্বর
ধীরে সুস্থে এগুচ্ছেন
বাড়ির সকাশে দিচ্ছেন বাবাকে ডাক
স্বভাবসুলভ চেনা-ধাঁচে
জানি, আসছেন, তিনি এদিকেই
জানি, আসবেন, প্রিয়তর, প্রিয়তম অধিকার !
সংবাদটি শেয়ার করুন