যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এথেন্সে পালিত হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী
যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে গ্রিসের এথেন্সস্হ বাংলাদেশ দূতাবাসে পালিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্মদ কর্তৃক জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে শোক দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত এবং পবিত্র গীতা থেকে পাঠ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ই আগস্টের সকল শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিটের নীরবতা পালনের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূতের সভাপতিত্বে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে দেশবাসী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রেরিত বাণী পাঠ করে শোনান রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ। অনুষ্ঠানে বিশেষ প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়। এ সময় সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক প্রবাসীসহ, দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতার অসামান্য ত্যাগ ও তিতিক্ষার জীবনাদর্শ ও মহতী কর্মের উপর আলোচনায় বক্তাগণ জাতির পিতার ঐতিহাসিক অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বক্তব্য রাখেন। তাঁরা বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার কার্যকর করার দাবিও জানান। তাঁরা শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে Òস্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ই আগস্টের সকল শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রতীক। তিনি বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। স্বাধীনতা উত্তর আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের জন্য স্বীকৃতি আদায়ে তাঁর প্রাজ্ঞ রাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতি তাঁকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিশ্ব নেতার মর্যাদায় আসীন করেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের কাজে আত্মনিয়োগ করেন তখনই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, তাদের এদেশীয় দোসর ও কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যকে কাজে লাগিয়ে ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্টে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে মানব ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করে। তিনি বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। রাষ্ট্রদূত প্রবাসী বাংলাদেশীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করার আহবান জানান। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে নতুন প্রজন্মসহ সকলকে বিশেষ ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয় এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।