ঐতিহ্যের লড়াই এ আপোষহীন
এসোসিয়েশন অব মন্ট্রিয়ল এর বৈশাখী ছিল তাক…তাক…ধীন…ধীন ……তাক ধীনা ধীন
শরীফ ইকবাল চৌধুরী ।। চরকির মতো ঘুরছিল শিশুরা – হাতেও ছিল চরকি, কিন্তু তারা জানে না , আজ আমাদের বৈশাখী। বহু জানা অজানা – বাংলার ও বাঙালীদের নতুন বছর বরন এর ঐতিহ্যের প্রতিক – গ্রাম বাংলার- তালপাতার পাখা, বাঁশের বাঁশী, লাউয়ের দুগডুগী, দোতারা, রং-বেরং এর আলপনা, ছবি, পাখী ও নববর্ষের পোস্টার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে – কানাডায় জন্ম নেয়া ছোট্র শিশুদের – সমস্ত মেলা জুরে ঘুরে বেড়ানোটি ছিল – সব চাইতে আকর্ষণীয় ও উপচে পরা দর্শকদের মন ও প্রাণ কে কিছুক্ষণের জন্য নিয়ে গিয়েছিল– গ্রামের বট তলায় ……… সেই… বৈশাখী মেলায়।
সাথে ছিল সরগম এর ঢাক-ঢোল, নুপুরের ঝন … ঝন… শব্দ, রাখালি বাঁশীর সুর- তার সাথে ছিল- এসোসিয়েশন এর সকল পুরুষদের বাহারি পাঞ্জাবী ও বঙ্গ ললনাদের চোখ ঝলসানো রংবেরং এর শাড়ী পরে – করতালি দিয়ে – আমাদের প্রানের শিশুদের মন ও প্রাণকে– আনন্দ ও উৎসাহে ভরিয়ে দেয়া।
আগামী প্রজন্মের প্রানের শিশুদের শোভা যাত্রা দিয়ে – বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মন্ট্রিয়ল এর– বাংলা নতুন বছর এর বৈশাখী মেলার শুভ সুচনাছিল খুবই আকর্ষণীয়। সমস্ত মেলা জুড়ে ছিল আনন্দ, উল্লাস, ঘোরাঘুরি, কোলাকুলি, একে অন্যকে আপ্যায়ন, মিষ্টি মুখ, তার সাথে ছিল – পোশাক, খাবার ও জুয়েলারি স্টল। চটপটি, ফুসকা, হালিম, নানান নামের ও স্বাদের পিঠা, এ যেন এক অবর্ণনীয় – বাংলার বৈশাখী মেলা।
আর এই নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের কে– বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা এবং বাংলা নতুন বছর কে বরন করে নেয়ার – এরকম জাঁকজমক আয়োজনটির প্রতিটি পর্বকে পরিচিতি করে – আগামী প্রজন্মকে গড়ে তুলাই ছিল – বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মন্ট্রিয়ল এর স্বার্থকতা।
কানাডার মন্ট্রিয়ল এর বাংলাদেশী অধ্যুষিত – পার্ক এক্সটেনশন এলাকার লুসিয়ান পাজে , হাই স্কুল এর বিশাল অডিটোরিয়াম ও ক্যাফেটারিয়া জুড়ে- গত ৮ মে, শনিবার, দুপুর হতে মধ্য রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়, বৈশাখী মেলা- ১৪২৯ বাংলা।
সুন্দর, পরিছন্ন, শিক্ষণীয় ও আনন্দে ভরপুর এ বৈশাখী মেলার – সাংস্কৃতিক পর্বে- মন্ট্রিয়ল এর শ্রেষ্ঠ সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- সরগম মিউজিক একাডেমীর – ছাত্র ছাত্রীদের অংশ গ্রহনে – বৈশাখীর গান, নাচ উপস্থিত সকলে প্রাণ ভরে উপভোগ করে- এবং করতালির মাধ্যমে ছোট শিশুদের কে উৎসাহিত করে।
মন্ট্রিয়ল এর খ্যাতিমান স্থানীয় শিল্পীদের গাওয়া গান, আবৃতি, নাচ, এরপর– বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মন্ট্রিয়ল, এর কার্যকরী পরিষদ এর সকলকে- মঞ্চে পরিচয় করিয়ে দেন- এসোসিয়েশন এর সাবেক সভাপতি – কমিটির উপদেষ্টা চেয়রাম্যান – বিগত দিনের সফল সংগঠক, উপস্থাপক, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনির। স্বাগত বক্তব্যে- তিনি ঐতিহ্যবাহী এ বৃহৎ সংগঠন এর সফলতা কামনা করেন এবং আগামী দিনগুলোতে আরও সুন্দর ও জাঁকজমক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে বলে- আশা ব্যক্ত করেন।
উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা ও আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জানান এসোসিয়েশন এর সাধারন সম্পাদক – পিয়াস আহমেদ সাকিল, – যাদের অংশ গ্রহনে ও অক্লান্ত পরিশ্রমে এ বৃহৎ মেলাটি পূর্ণতা পেয়েছে এবং যাদের আর্থিক সাহায্য ও উপদেশ এর ফলে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মন্ট্রিয়লের সর্ববৃহৎ আয়োজন – সফলতায় ভরপুর এবং মন্ট্রিয়ল এর প্রবাসীদের অংশ গ্রহনে আনন্দে ভরপুর ছিল, – তাদের সকলকে – আন্তরিক ধন্যবাদ জানান- সকলের প্রিয় এসোসিয়েশনের সভাপতি- হাফিজুর রহমান।
মুল সাংস্কৃতিক পর্বে- দর্শক মাতিয়ে গান গেয়ে, কোমর দুলিয়ে, বৈশাখী মঞ্চকে মাতিয়ে রাখেন- আমেরিকা হতে আগত শিল্পী- ক্লোজ আপ ওয়ান তারকা- শশী এবং সংগীত শিল্পী শাহ মাহবুব।
মন্ট্রিয়ল এর সুপরিচিত সংগঠক, আবৃতিকার, উপস্থাপক শামসাদ রানা ও কণ্ঠ শিল্পী সাফিনা করিম এর উপস্থাপনায়- এবং সরগম মিউজিক একাডেমীর পরিচালক- ডরিন মলি গোমেজ ও রনজিৎ মজুমদার এর পরিচালনায়- সুচনা পর্ব, নাচ, গান এবং প্রধান সাংস্কৃতিক পর্বগুলো ছিল খুবই – আনন্দের এবং উপভোগের।
প্রবাসী বাংলাদেশীদের আনন্দ, উল্লাস ও কমিউনিটির সকলের অংশ গ্রহনে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মন্ট্রিয়ল এর বর্ষ বরন অনুষ্ঠানটি, বর্ষ সেরা অনুষ্ঠানে রূপ নেয়।
বৈশাখী মেলার আয়োজনের বিভিন্ন ইভেন্ট ও পর্বের সফলতায় যারা সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বারিয়ে কাজ করেছেন-তারা হলেন- এসোসিয়েশন এর সনামধন্য নিবেদিত কর্মীরা – যথাক্রমে- মেলা ব্যবস্থাপনায়-ছিলেন- রাজ মাহবুব, মিজান রহমান, মোরসালিন নিপু। সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাপনায়- শাহ মোঃ ফায়েক, শোহান খান, জুবায়ের টিপু,। স্টল পরিচালনায় – মাইজুল ইসলাম, বদরুল চৌধুরী, আরিফ মোল্লা।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে- সাংবাদিক আরিফ খন্দকার, রণজিৎ মজুমদার, শাহাদত হোসেন শিল্পী, মোশাররফ হোসেন বাদল, পলাশ হাওলাদার, মাসুম আহমেদ, নাজমুল হাসান সেন্টূ, রাহাত খন্দকার, ইলিয়াস হায়দার, আতাউর রহমান, সোলায়মান উদ্দিন, সাইফুর রহমান, সালেহিন অপু, কবির হালদার, এবং তানবির উদ্দিন।
বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন – ডঃ আব্দুল মোত্তালিব, নবী হোসেন, বজলুর রসীদ বেপারী, হেলাল আহমেদ, আনোয়ার হোসেন আনু, মজিবুর রহমান, দিদার মাহমুদ ভুইয়া, তানভির আহমেদ ।
বৈশাখী মেলার গ্র্যান্ড স্পন্সর এর জন্য এসোসিয়েশনের পক্ষ হতে কৃতজ্ঞা – জানানো হয় – ইউনাইটেড ফাইনান্সিয়াল লিমিটেড এর প্রধান কুমার অভিজিৎ কে।
রাফেল ড্র – লটারির চমক দেখানো পুরস্কার নিয়ে সকলের বাড়ি ফেরাটি ছিল চমকে দেয়ার মতো । বৈশাখী মেলার লটারীর গ্র্যান্ড প্রাইজ ছিল একটি বেডরুম সেট। ইদানীংকালে লটারীর সবচে’ বড় পুরস্কার ছিল এটি। মন্ট্রিয়লের পার্ক এক্সের জ্যাতালোন-কার্বস কর্ণারের আলিবাবা ফার্নিচার স্পন্সর করেছিলো বেডরুম সেটটি। গ্র্যান্ড পুরস্কারটি জিতে নিয়েছেন তরিকুল ইসলাম শিপার-নীশাত রহমান দম্পতি।
প্রথম পুরস্কার ছিল একটি ইন্টারন্যাশনাল এয়ার টিকিট। ফ্লাই অন ট্রাভলসের স্পন্সরের আকর্ষনীয় পুরস্কার এয়ারটিকিটটি জিতে নেয় নাসরিন আক্তার।
এছাড়া হুরপরির মেলা’র স্পন্সরে ৩টি গিফ্ট ভাউচার, আপ্যায়ন রেস্টুরেন্টের সৌজনে গিফ্ট ভাউচার ও সামু ফ্যাশনের শাড়ী জিতে নেন অন্যান্য ভাগ্যবানরা।
এসএস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান