বৃটেনের মুসলিম কমিউনিটি কোভিড-১৯ তথা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া লোকদের মৃতদেহ নিয়ে এক কঠিন ও হৃদয়বিদারক পরিস্থিতিতে রয়েছেন। লাশ দাফন ও কবরস্থান সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। মহামারী শুরুর পর থেকে ১২.৪ মিলিয়ন লোক সংক্রমিত হয়েছেন। তবে টেস্ট এন্ড ট্রেস দ্বারা মাত্র ২.৪ মিলিয়নকে শনাক্ত করা হয়েছে।
ভয়াবহ আকারে ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে মুত্যুহারও বেড়েছে। এখন পর্যন্ত সারা দেশে প্রাণহানির সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে। গড়ে প্রতি ৫ জনের একজন আক্রান্ত বলে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। কেন্টের নতুন রূপের ভাইরাসটি কোভিডের পুরানো স্ট্রেনের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রমণযোগ্য এবং এটি পরিস্থিতি আরও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ করে তুলেছে।
টাওয়ার হ্যামলেটস, বার্কিং এন্ড ডেগেনহাম, নিউহাম, থুরোক, রেডব্রিজ, হ্যাভারিং বারাসহ গ্রেটার লন্ডনে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।
আর এই অঞ্চলেই অধিক পরিমাণ এশিয়ান মানুষের বসবাস। যার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মুসলিম। বিশেষ করে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি মুসলমানদের আবাসিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত।
এই অঞ্চলে গার্ডেন অব পিস ফিউনারেল সার্ভিসসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের জানাজা ও দাফন প্রতিক্রিয়া সম্পন্ন করছে। কিন্তু ভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় তারা সার্ভিস দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। প্রায় প্রতিদিন লাশ দাফনের নতুন নতুন বুকিং নিতে হচ্ছে। এতে তাদের কাজের সিরিয়াল তৈরি হয়েছে। নতুনদের দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
সরকারের ইনফেকশন কন্ট্রোল বিষয়ক প্রটোকলে করোনা ভাইরাসে মৃতদেহ বিশেষ নিয়মে দাফনের উদ্দেশ্যে পরিষ্কার বা গোসল সম্পন্ন করতে হয়। যে কেউ চাইলেই তা করতে পারবে না। এ বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ আবশ্যক। ইনফেকশন কন্ট্রোল ও প্রিভেনশন ট্রেনিং, পিপিই ট্রেনিংসহ বেশ কিছু ফর্মালিটি মেইনটেইন করতে হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ফিউনারেল সার্ভিসে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জনবল সংকটও রয়েছে। ফলে ইতিমধ্যে জমা হওয়া কাজ সম্পন্ন করতে ৫-৭ দিনের অপেক্ষমান তালিকা তথা কিউ লেগেছে। আপরদিকে মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ১-২ জনের স্থলে এখন ৬-৭ জন করে লাশের খবর আসছে। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা সংশ্লিষ্টদের ভাবিয়ে তুলেছে।
আক্রান্তদের নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা সর্বত্র বিরাজমান। শোকে কাতর স্বজনহারা মানুষ করোনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা যাবে কিনা এ নিয়ে দূর্ভাবনা বেড়ে চলেছে। লাশের সারি বাড়তে থাকলে কবরের জায়গা সংকট দেখা দেবে। করোনায় মৃতদের লাশ নিয়ে স্বজনদের অসহায়ত্ব ও নানা মর্মস্পর্শী ঘটনার সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিদিন।
সূত্রঃ দৈনিক মানবজমিন
বাঅ/এমএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন