জানা অজানা

করোনা : যত কথা ছড়াচ্ছে তা কতটা সত্য

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস

 

করোনা : যত কথা ছড়াচ্ছে তা কতটা সত্য ।।  প্রতিনিয়িত করোনাভাইরাস নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ফলে মানুষ আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। প্রতিরোধে সচেতনতাই সবচেয়ে জরুরি। করোনা নিয়ে ছড়ানো তথ্যগুলো যাচাই করাও জরুরি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) ও যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিডিসি করোনা বিষয়ে কী করবেন, কী করবেন না, তা তুলে ধরেছে। একই সঙ্গে প্রচলিত ধারনাগুলোর বিষয়েও নির্ভরযোগ্য তথ্য দিয়েছে।

গরম পানি পান করলে করোনা হবে না

একটু পরপর পানি, লবণ বা ভিনিগার মিশ্রিত পানি কিংবা গরম পানি পান করলে কিংবা গলা ভেজালে অথবা রসুন মুখে রাখলে করোনা গলা থেকে ফুসফুসে যায় না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের একটি তথ্য ঘুরছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই তথ্যের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

গরমে করোনার সংক্রমণ সম্ভব নয়

গরমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হবে না -এই ধারণাও ভুল। আবহাওয়া ও পরিবেশের তাপমাত্রার সঙ্গে সংক্রমণের কোনো সম্পর্ক নেই। করোনা যেকোন তাপমাত্রায় সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

থার্মাল স্ক্যানারেই ধরা পড়ে শরীরে করোনার অস্বিত্ব

থার্মাল স্ক্যানার কেবল শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করে। এর মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না। কাজেই থার্মাল স্ক্যানারে ধরা না পড়লে করোনা হয়নি -এমন মনে করা ঠিক নয়। সাধারণত উপসর্গ দেখা দিতে ২ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের অন্তত ১৪ দিন কোয়ারেন্নটিনে থাকতে হবে।

করোনার প্রতিষেধক রয়েছে

মানুষের ব্যবহারের জন্য স্বীকৃত ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক তৈরি হতে বেশ সময় লাগে। ২০০৩ সালে ছড়ানো সার্সের প্রতিষেধক তৈরি করতে ২০ মাস এবং আফ্রিকার দেশগুলোয় ছড়ানো ইবোলার প্রতিষেধক তৈরি করতে ৭ বছরের বেশি সময় লেগেছে। করোনার প্রতিষেধক তৈরির জোর চেষ্টা চলছে। তবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষেধক তৈরি হতে কিছুটা সময় লাগবে অবশ্যই।

ফেস মাস্কে করোনা প্রতিরোধ করা যায়

এটিও ভুল ধারণা। সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক পরার পর মুখ ও মাস্কের মধ্যে বেশ খানিকটা ফাঁকা থাকে, যা ড্রপলেট (মুখ নিঃসৃত ক্ষুদ্র তরল কণা) প্রবেশের জন্য যথেষ্ট। এন-৯৫ মাস্ক বাতাসের ৯৫ শতাংশ শূন্য দশমিক ৩ মাইক্রন বা তার চেয়ে বড় কণা আটকাতে পারে। তার মানে এই নয় যে এটি পরলে করোনা প্রতিরোধ করা যাবে। কোভিড-১৯ রোগী এবং রোগীর পরিচর্যাকারী, সেবাদানকারী, হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সদের মাস্ক পরা জরুরি।

সতর্কতা

বারবার হাত ধোওয়া ও হাত নাকে-মুখে-চোখে না লাগানোই সবচেয়ে ভালো প্রতিরোধ। হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে সাবান-পানি সবচেয়ে কার্যকর। করোনাভাইরাসের বাইরের আবরণটি চর্বির। কাজেই ক্ষারযুক্ত যে কোনও সাধারণ সাবান এ ক্ষেত্রে কার্যকর। কারণ, ক্ষারে চর্বির আবরণটি ভেঙে যায়, হাত ভাইরাসমুক্ত হয়। সাবান-জল না থাকলে অ্যান্টিসেপটিক হ্যান্ডওয়াশ বা অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে পারেন।

যেভাবে করোনা ছড়ায়

সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাস, হাঁচি-কাশি কিংবা কথা বলার সময় মুখ থেকে নিঃসৃত তরল কণা বা ড্রপলেটের মাধ্যমে বেরিয়ে এসে যে কোনও বস্তু বা তলে লেগে যায় করোনাভাইরাস। সে জায়গা স্পর্শ করলে হাত থেকে ভাইরাসটি নাক-চোখ-মুখ দিয়ে সুস্থ ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারে। তাই পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। অন্তত তিন ফুট দূরে থাকাটাই শ্রেয়।

 



সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − two =