যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পরিবারের বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত
নিউইয়র্ক ১৩ জানুয়ারি: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ পরিবারের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭ টায় নিউইয়র্ক এর জ্যাকসন হাইটসের ইটজি রেস্তোরাঁয় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ কর এর সভাপতিত্বে এবং যুবনেতা শেখ জামাল হোসাইন এর উপস্থাপনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদদের স্বরণে ১ মিনিট নীরবতা, দোয়া ও প্রার্থনা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পূষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সভায় অন্যন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন– যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সর্ব জনাব রমেশ নাথ, এডভোকেট শাহ মোহাম্মদ বখতিয়ার, শরীফ কামরুল আলম হিরা, সাদেকুল বদরুদোজা পান্না, কেন্দ্রীয় যুবনেতা এ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন, শেখ হাসিনা মঞ্চের সভাপতি জালাল উদ্দিন জলিল ও সহ সভাপতি নাদের আলী, কমিউনিটি এ্যাকটিভিষ্ট জাকির হোসেন বাচ্চু, যুক্তরাষ্ট্র কৃষকলীগ নেতা এ,কে চৌধুরী ও যুবনেতা খন্দকার জাহিদুল ইসলাম প্রমূখ ।
সভায় বক্তারা বলেন আজ ১০ জানুয়ারি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। পাকিস্তানের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এইদিন জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন এবং আত্মগোপনে থাকা অপছন্দ করতেন। তিনি তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন, আমি পালিয়ে থাকার রাজনীতিতে পছন্দ ও বিশ্বাস করি না। ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা মানব ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম গণহত্যা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু মেজরিটি পার্টির নেতা, তিনি বিপ্লবী নেতা নন, তিনি কারও ভয়ে পালাতে পারেন না। জনগণকে কামানের নলের মুখে রেখে বঙ্গবন্ধু আত্মগোপনে যেতে সম্মত হননি। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে একজন সংসদীয় গণতন্ত্রের নেতা হিসেবে তিনি তাঁর নিজ বাড়ীতেই অবস্থান করেন। আত্মগোপনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের আর একটি সঠিক সিদ্ধান্ত। তিনি সাংবিধানিক ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পথে ছিলেন বলেই বাংলাদেশের মুক্তি মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন পান। ১০ জানুয়ারি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তিনি ফিরে না এলে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র জমা সহজ ছিল না। ভারতীয় সৈন্যও হয়তো এত তাড়াতাড়ি ফিরে যেত না। অনেক দেশের স্বীকৃতি পেতেও বেগ পেতে হতো। তাঁর প্রত্যাবর্তনের ফলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুসংহত হয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে প্রত্যাবর্তন করে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের শাসনভার হাতে নিয়ে তিনি দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছিলেন, নতুন করে গড়ে উঠবে এ বাংলা, বাংলার মানুষ হাসবে, বাংলার মানুষ খেলবে, বাংলার মানুষ মুক্ত হয়ে বাস করবে, বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত খাবে, এই আমার সাধনা। জাতির পিতা উন্নয়নের পথে দেশকে যখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। দেশ ৫০ বছর পিছিয়ে পড়ল।
আজ দেশ যখন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও দক্ষ নেত্রীত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে এবং বিশ্বে রোল মডেল এবং উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ঠিক সেই সময় দেশের বিরুদ্ধে জামাত-বিএনপি নুতন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাৎ করে, গণতন্ত্রকে হত্যা একনায়কতন্ত্র স্বৈরাচারী কায়দায় ২১ বছর দেশ শোষণ করেছে। তারাই আজ গণতন্ত্রের নামাবলী গায়ে দিয়ে আবার সেই গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার উৎখাৎ এর তথাকথিত আন্দোলনের নামে ষড়যযন্ত্র শুরু করেছে। এরা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশ ও জাতির শত্রু। এই অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার অঙ্গিকারই হোক আজকের দিনের শপথ।
এসএস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক