পীযূষ কান্তি সরকার এর একগুচ্ছ কবিতা
১. আলো – আঁধারির খেলা
রাজযোটক দম্পতির মান – অভিমান
নৈশব্দ্যে অন্তরীন —
বাতাসে অক্সিজেন বৈভবহীন,
অদৃশ্য হাতে কেউ ফাটায়
কাঁদানে গ্যাসের শেল।
চারশো আটানব্বইয়ের ভাগফল
ডিভোর্স আসন্ন মান।
তারপর …
আকাশে চাঁদ উঠুক, না-উঠুক
জ্যোৎস্নায় ভরে যায় চরাচর।
ডালে-ডালে ফুল ফুটুক, না-ফুটুক
বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে সৌরভ।
আলো – আঁধারির নিঃসঙ্গ অন্তরালে
দু’টি ভিন্ন হৃদয় —
একে অপরের উপর আপতিত হয়।
বিন্দু বিন্দু জলকণায় ভরা মেঘ
একটানা বরিষণে মুখরিত হয়ে ওঠে —
ঝির ঝির…ঝির ঝির …ঝির ঝির
২. শেষ দৃশ্যে
জঠরের জ্বালা, হৃদয়ের জ্বালা —
সকল জ্বালার শেষ করে
দেহটা চিতার আগুনে জ্বলে যায়।
হাজার হাজার মুক্তো যেন
মাটিতে ঝরে পড়ে
পলকে হারিয়ে যায়।
শোকস্তব্ধ শ্মশান ঘাটে রয়ে যায়
শুধু ফুল, ফুলের মালা, নীরবতা
আর
ধূপ-চন্দন-কস্তুরির সৌরভ।
তখন সেই শেষ-দৃশ্যে চলে হিসেবনিকেশ —
শিল্পী আর তাঁর শিল্পের
বিজ্ঞানী আর তার আবিস্কারের
কবি আর তাঁর কবিতার
… … … … …
স্রষ্টা আর তাঁর সৃষ্টির।
৩. আবেদন
কৌতূক আর অনুরাগের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে
হাস্যদীপ্ত মুখে প্রশ্ন করেছিলে —
‘ আপনি কখনো কাউকে ভালোবেসেছেন ?’
তোমার এ-প্রশ্ন করার অধিকার নিশ্চয়ই আছে
কিন্তু
পৌরুষের যে ক্ষতস্থান প্রলেপ-সম্ভারে
একটু আচ্ছন্ন ছিল
তোমার অজান্তে তোমারই প্রশ্নবাণ
তাকে আবার জাগিয়ে দিয়ে গেল।
এখন তো মাঝরাত
আমার দীপের শিখা ক্রমশঃ ম্লান হয়ে আসছে
শোনো —
পারো তো একবার এসে
খানিকটা জ্বালানি তার বুকে
ঢেলে দিয়ে যাও।