সোশ্যাল মিডিয়া

আন্ডারকাভার সাংবাদিকতা

 

আন্ডারকাভার সাংবাদিকতা ।। ছবিতে যে লোকটাকে দেখছেন তার নাম ব্রেনডেন কেনেডি। আমাজনের হয়ে তাদের প্যাকেট, ভারি ভারি বাক্স গ্রাহকদের দরোজায় পৌঁছে দিতে গিয়েছেন তিনি। না, তিনি আমাজনের সরাসরি কর্মী নন। যাকে বলে আমাজন থার্ড পার্টি কন্ট্রাক্টরদের নিয়োগ দেয় অনলাইনে পা্ওয়া অর্ডার অনুসারে পণ্য সামগ্রী গ্রাহকের দরোজায় পৌঁছে দিতে। এমনি একটি থার্ড পার্টি কন্ট্রাক্টরের হয়ে ডেলিভারি ম্যানের কাজ করেন ব্রেনডেন কেনেডি।

ব্রেনডেন কেনেডি কি আসলেই আমাজনের ডেলিভারি ম্যান? তিনি আসলে কানাডার প্রভাবশালী পত্রিকা টরন্টো স্টারের অনুসন্ধানী সাংবাদিক। রিপোর্টিং এর মাল মশলা সংগ্রহ করতে তিনি আমাজনের ডেলিভারি ম্যানের কাজ নিয়েছেন। যাকে বলে ‘আন্ডার কাভার সাংবাদিকতা।’

‘আন্ডার কাভার কপস’ টার্মটি আমাদের খুবই পরিচিত, ছদ্মবেশি পুলিশ কিংবা গোয়েন্দার কথা আমরা জানি। কিন্তু ‘ছদ্মবেশি সাংবাদিকতা?’ হ্যাঁ, টরন্টোর মূলধারার সাংবাদিকতায় এটা নতুন কিছু নয়।এর আগে আরেক রিপোর্টার ন্যানির কাজ নিয়ে বিত্তশালীদের পরিবারে ফিলিপাইনো ন্যানিদের নিপীড়নের কাহিনী ফাঁস করেছিলেন টরন্টো স্টারের আরেক আন্ডার কাভার নারী সাংবাদিক।

আর সংবাদ পড়তে হলেঃ শুভ বড়দিন

ব্রেনেডেন কেনেডির লক্ষ্য কি ছিলো? কানাডিয়ানদের দৈনন্দিন জীবনে আমাজন এখন অপরিহার্য হয়ে ওঠেছে। তরুণ থেকে বৃদ্ধ সববয়সী ক্রেতাই এখন আমাজনের উপর নির্ভর করছেন। পণ্যের দাম, বিনামূল্যে ঘরের দরোজায় পণ্য পৌঁছে যা্ওয়া, কে না পছন্দ করবে। এখন আবার অনলাইনে অর্ডার দেয়ার পর দিনে দিনেই কোনো ক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে।

টরন্টো স্টারের লক্ষ্য কোনো অপরাধ খোঁজা নয়। আমাজন নাগরিকদের ক্রয় অভ্যাসে যে পরিবর্তন ঘটাচ্ছে তাতে ভবিষ্যতের চাকুরি বাজার, রিটেইলারদের ভাগ্যে কি অপেক্ষা করছে তা নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় টরন্টো স্টার। তার আগে বুঝতে চায়- বিনা পয়সায় এতো দ্রুততায় আমাজন পণ্য কিভাবে গ্রাহকের দরজায় পৌঁছে দেয়। ব্রেনডেনের লক্ষ্য ছিলো সেটাই জানা। রীতিমতো আবেদন করে, ইন্টারভিউ দিয়ে চাকুরিটি পেয়েছিলেন ব্রেনডেন। ক্লিন পুলিশ রিপোর্ট এবং ড্রাইভিং রিপোর্ট জমা দিতে হয়েছে তাকে।

তিনি শুধু নিজের মিডল নেমটা খানিক বদলে দিয়েছেন। নতুন একটা ইমেইল এবং সেলফোন ব্যবহার করেছেন চাকুরির আবেদনে। চাকুরী হ্ওয়ার পর অন্য একজন ডেলিভারি ম্যানের সাথে ঘুরে ঘুরে কাজও শিখেছেন। তারপর স্কারবোরো এলাকায় গ্রাহকদের দরোজায় দরজায় পৌঁছে দিয়েছেন আমাজনের পণ্যসামগ্রীর ভারি ভারি বাক্সগুলো। চাকুরিটা ছেড়ে দিয়ে টরন্টো স্টারের জন্য রিপোর্টটা না লেখা পর্যন্ত কেউ জানতেও পারেনি টরন্টো স্টারের ডাক সাইটে অনুসন্ধানী সাংবাদিক ব্রেনডেন কেনেডি তার দরজায় ডেলিভারি ম্যান হয়ে বেল টিপছেন।

লেখক: সাংবাদিক ও সম্পাদক, নতুন দেশ ডটকম

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 − three =