জাতিসংঘ বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী

জাতিসংঘে জন্মশতবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

জাতিসংঘে

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

নিউইয়র্ক : আজ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২০ উদযাপন করা হয়। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর এই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সকাল দশটায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এরপর জাতির পিতার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত শেষে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে আরও ছিল দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ; স্থায়ী প্রতিনিধির উদ্বোধনী ভাষণ, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অংশগ্রহণে বিশেষ আলোচনা ও সবশেষে কেক কাটার মাধ্যমে আনন্দমূখর এই বিশেষ দিনটি উদযাপন। এছাড়া অনুষ্ঠানটিতে মুজিববর্ষ উপলক্ষে শিশুদের উদ্দেশ্যে লেখা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিঠিটি পাঠ করে শোনান স্থায়ী প্রতিনিধি।

উদ্বোধনী ভাষণে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা”। তিনি জাতির পিতার জীবন ও কর্মের নানা দিক তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে উঠে আসে তরুণ শেখ মুজিব থেকে ধাপে ধাপে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে পরিণত হওয়ার সংগ্রামী ইতিহাস; দূরদর্শী ও অবিসংবাদিত নেতৃত্ব; দরাজ কন্ঠস্বর; গণসমুদ্রে প্রদত্ত ভাষণে জাতির পিতার সম্মোহনী ও ঐন্দ্রজালিক আহবান; স্বাধীনতার পতাকাতলে জাতিকে একত্রিত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অবিস্মরণীয় ঘটনাপঞ্জি।

জাতিসংঘে

জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী জাতিসংঘে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এবছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের সপ্তাহে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ সদরদপ্তরসহ স্থায়ী মিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে আমরা ১৯৩টি দেশের বৈশ্বিক এই প্লাটফর্মে জাতির পিতাকে মর্যাদাপূর্ণ আসনে তুলে ধরার পরিকল্পনা নিয়েছি”।

ইউনিসেফের নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “এমনই একটি সময়ে আমরা এই মহান দায়িত্ব পেয়েছি যখন বিশ্বব্যাপী উদযাপন করা হচ্ছে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী। জাতির পিতা শিশুদের অকৃত্রিমভাবে ভালোবাসতেন এবং তাঁর সাড়ে তিন বছরের সরকারে তিনি শিশুদের কল্যাণে অসংখ্য কাজ করে গেছেন। সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা সারাবিশ্বের শিশুদের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই; আর এটাই হবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর প্রাক্কালে শিশুদের জন্য আমাদের অঙ্গীকার”।

প্রবাসী বাংলাদেশী সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “শিশুদের জন্য জাতির পিতা স্বপ্নময় স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়ে গেছেন। আসুন আমরা প্রবাসে বেড়ে ওঠা শিশুদের মহান এই নেতার জীবন ও কর্ম সমন্ধে জানাই। তাদেরকে বাংলায় ও ইংরেজিতে প্রকাশিত জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং ‘মুজিব গ্রাফিক্স নভেল’ পাঠে অভ্যস্ত করে তুলি”।

স্থায়ী প্রতিনিধি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শ্লোগান “মুজিববর্ষের কূটনীতি, প্রগতি ও সম্প্রীতি” এবং জাতীয় শিশু দিবস ২০২০ এর প্রতিপাদ্য ‘মুজিববর্ষে সোনার বাংলা/ছড়ায় নতুন স্বপ্নাবেশ/শিশুর হাসি আনবে বয়ে/আলোর পরিবেশ” উল্লেখ করে সকলকে শিশুদের আলোকিত জীবন গড়তে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

নভেল করোনা ভাইরাস এর বৈশ্বিক মহামারীর এই সঙ্কটময় প্রেক্ষাপটে স্থানীয় নীতি ও নির্দেশনা, জাতিসংঘ সদরদপ্তরের পরামর্শ ও জাতীয় নির্দেশনা অনুযায়ী জনস্বার্থ রক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অনুষ্ঠানটি সংক্ষিপ্ত আকারে আয়োজন করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি জানান, এই সঙ্কটময় পরিস্থিতি স্বাভবিক হলেই যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানসমূহ উৎসবমূখর পরিবেশে আয়োজন করা হবে। অনুষ্ঠানটির আলোচনা পর্বে মিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।

 

 



 

 

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − six =