প্রবাসের সংবাদ

বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডি.সি.তে মুজিববর্ষ উদযাপিত

মুজিববর্ষ উদযাপিত

বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডি.সি.তে মুজিববর্ষ উদযাপিত

ওয়াশিংটন ডি.সি.: ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ যথাযোগ্য মর্যাদা, দেশপ্রেম, গভীর কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। ১৯২০ সালে আজকের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি সারা বিশ্বের নির্যাতিত, বঞ্চিত মানুষের অগ্রনায়ক বঙ্গবন্ধু মুজিব গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন অকুতোভয়, অসিম সাহসী ও মানবদরদী। প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এই বিশ্বনেতার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের মূললক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও অশিক্ষার অন্ধকার থেকে মুক্ত করে উন্নত জীবন নিশ্চিত করা।
ব্যক্তিজীবনের সকল সুখ স্বাচ্ছন্দ পরিত্যাগ করে নিজের জীবন বাজি রেখে তিনি ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দান করেন এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। এজন্য তাঁকে বৃটিশ ও পাকিস্তান কারাগারে ৩০৫৬ দিন অন্তরীন রাখা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকচক্র বাঙালি জাতির এই মহান নেতাকে তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করে। দিনটি উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস বিভিন্ন কর্মসূচী প্রণয়ন করে। করোনা ভাইরাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং ওয়াশিংটন ডি.সি.’র নির্দেশনা অনুসরণ করে শিশুদের অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা স্থগিত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। বাণীগুলো পাঠ করেন যথাক্রমে দূতাসের ডিফেন্স অ্যাটাসে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈনুল হাসান, মিনিস্টার (প্রেস) শামিম আহমদ, মিনিস্টার (ইকনোমিক) মো: মাহাদী হাসান এবং মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডি.সি.তে মুজিববর্ষ উদ্যাপিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র “বঙ্গবন্ধু আমাদের হৃদয়ে” প্রদর্শিত হয়। রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, নির্যাতিত বাঙালির জন্য স্বতন্ত্র আবাসভূমির জন্য বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠ আজো সারা বিশ্বে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে এবং চূড়ান্তভাবে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন।

যদিও এই মহান বিপ্লবী নেতা ৪৫ বৎসর আগে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন কিন্তু তাঁর কণ্ঠস্বর এবং আদর্শ এখন আরো বেশী শক্তিশালী। তাঁর দর্শন এবং জীবনাদর্শ আজোও জীবন্ত এবং প্রাসঙ্গিক।রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাবার অসমাপ্ত কাজ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয়। পরিশেষে, বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ই আগস্টে নিহত তাঁর পরিবারের সদস্যদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব এবং চ্যান্সারী প্রধান মো: মাহমুদুর ইসলাম।
সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × two =