ফিচার্ড মত-মতান্তর

ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লোক থেকে দূরে থাকুন |||| রিয়াজুল হক

ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লোক থেকে দূরে থাকুন |||| রিয়াজুল হক

ভার্সিটির এক ছোট ভাইয়ের সাথে কথা হচ্ছিল। কী একটা প্রসঙ্গ উঠতেই, সে ব্যক্তি বিশেষের ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের কথা বলল। মূলত ডাবল স্ট্যান্ডার্ড মানুষের নেগেটিভ চরিত্রগত একটি দিক। আমরা অনেক সময় মানুষের খারাপ একটি বৈশিষ্ট্যের কথা বলতে গিয়ে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বলে থাকি।

ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বলতে মূলত কি বুঝায়? সহজ বাংলায় ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে দ্বৈত আদর্শ। অর্থাৎ একজন মানুষ একই কাজকে দুই ভাবে দেখে থাকেন। একই কাজের বর্ণনা নিজের বেলায় একরকম, আবার অন্যের বেলায় পুরোপুরি ভিন্নরকম।

ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের কয়েকটি উদাহরণ দিলে বিষয়টা আরও পরিষ্কার হবে।

১। এক মাংস বিক্রেতা যখন নিজে মাংস বিক্রি করে, তখন মাংসে পানি মিশিয়ে ওজন বাড়ায় এবং ক্রেতাদের ঠকিয়ে থাকে। আর নিজের বিক্রি শেষ হয়ে গেলে, তখন সেই একই লোক অন্য মাংস বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বলে থাকে, যারা মাংসে পানি মিশিয়ে বিক্রি করে, তাদের ব্যবসায়িক কোনো নীতি আদর্শ নেই।

২। আপনি যখন চোর ধরেন, তখন ঘোষণা দেন চুরি করা মহাপাপ, চুরি করলে হাত কেটে দেয়া উচিত ইত্যাদি। আবার আপনি যখন সুযোগ পাচ্ছেন, তখন নিজেই চুরি করছেন। চুরি করা যে অন্যায় কিংবা অন্যের বেলায় যে ছবক দিয়েছেন, সেটা নিজে চুরি করার সময় বেমালুম ভুলে গেছেন।

৩।‌ আপনার বোনের সাথে কেউ প্রেম করলে, সে অপরাধ করেছে, অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ। আর আপনি অন্যের বোনের সাথে প্রেম করলে, আপনি একজন মহান প্রেমিক, তখন প্রেম শাশ্বত।

৪। এলাকার একটা মেধাবী ছেলে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকার স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করার সুযোগ পেয়েছে। আপনি জানতে পেরে বললেন যে, এসব লেখাপড়া করে জীবনে কোন পরিবর্তন হবেনা, দেশের কোন উপকারে আসবে না। অথচ আপনি নিজেই দীর্ঘদিন এশিয়ার মধ্যে মধ্যমসারীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

৫। যখন কেউ তার পিতা মাতার সেবা-যত্ন করে না, খোঁজ নেয় না, তখন আপনার মতে সেই সন্তান কুলাঙ্গার। আর আপনি যখন নিজের পিতা মাতার খোঁজ নেন না, তখন কাজের ব্যস্ততা, আর্থিক সমস্যাসহ নানা সমস্যা হাজির করে থাকেন।

মূলত ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লোক মারাত্মক পরশ্রীকাতর হয়ে থাকে‌। এরা নিজেদের প্রয়োজন বিবেচনা করেই একই বিষয়ের বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা দাঁড় করায়। এদের কোন ব্যক্তিত্ব থাকে না। নিজেদের মঙ্গল চাইলে এদের থেকে দূরে থাকুন।

লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।



এসএস/সিএ
সংবাদটি শেয়ার করুন