বিশ্ব

নাগোর্নো কারাবাখ যুদ্ধ: দুদিকেরই সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ,আপোষহীন

নাগোর্নো কারাবাখ যুদ্ধ
ছবিঃ আজারবাইজানের গাঞ্জা শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন

নাগোর্নো-কারাবাখ যুদ্ধের ওপর তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে আজারবাইজান বলেছেন যে ঘাঁটি থেকে আর্মেনিয়া বেসামরিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ছিল, তা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আজেরি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নাগোর্নো কারাবাখ এখন আর্মেনীয়রা নিয়ন্ত্রণ করলেও এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আজেরি এলাকা। নাগোর্নো কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দশকের পর দশক ধরে চলা যে সংঘাত গত কয়েকবছর ধরে তুষের আগুনের মত দপদপ করছিল, তা হঠাৎ করে দাউদাউ করে জ্বলে উঠেছে। থামানোর কোনো চেষ্টাই কাজ করছে না।

আজারবাইজানের কথা হলো বিতর্কিত এই ভূখণ্ডের দখল তাদের অসমাপ্ত একটি কাজ। কিন্তু আর্মেনীয়দের দাবি ঐতিহাসিকভাবে শত শত বছর ধরে এই অঞ্চলটি তাদের।

বিবিসির সংবাদদাতা ওরলা গেরিন এবং স্টিভ রোজেনবার্গ গত কয়েকদিন দুই দিকের মানুষের মধ্যে পরস্পরের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ, অবিশ্বাস এবং শত্রুতার মনোভাব এবং দেশপ্রেম প্রত্যক্ষ করেছেন।

শোনা যাক সংবাদদাতাদের নিজের বয়ানে:

ওরলা গেরিন

আজারবাইজানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গাঞ্জার গাছে ঢাকা প্রধান সড়টি সকালের রোদে ঝকঝক করলেও অসংখ্য কাঁচের টুকরায় ঢাকা। পাশের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এমনভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে যে সেটিকে দুমড়ানো মুচড়ানো একটি টিনের ক্যানের মত লাগছে। ঐ ভবনের জানলার কাঁচ, লোহা এবং কাঠের টুকরোয় ভরে গেছে পাশের রাস্তা।

নাগোর্নো কারাবাখের ফ্রন্টলাইন বা রণাঙ্গন থেকে গাঞ্জার দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের মত, কিন্তু যুদ্ধবিরতির মধ্যেই রোববার এই শহরের বাসিন্দারা যুদ্ধের ভয়াবহতার নির্মম স্বাদ পেয়েছেন। ১০০ কিলোমিটার দূরত্বে থেকেও তারা রক্ষা পাননি।

 

আজারবাইজান এই হামলার জন্য আর্মেনিয়াকে দায়ী করেছে। আর্মেনিয়া বলেছে আজারবাইজানও তাদের বেসামরিক এলাকায় হামলা করছে।

গাঞ্জায় দেখা হলো ৬০ বছরের নারী নুশাবে হাইদারোভার সাথে। মাথায় চাদর, পায়ে ঘরে পরার চপ্পল, রাতে শোয়ার পোশাকের ওপর একটি কার্ডিগান চাপানো। তার বাড়িতে হামলার ধাক্কা তিনি কাটিয়ে উঠতে পারছেন না।

“এই এক কাপড়ে আমি দৌড়ে বেরিয়ে এসেছিলাম, কোনোরকমে জান বেঁচেছে। ভয়াবহ ছিল ঐ সময়টা,” তিনি আমাকে বলেন।

ধ্বংসস্তুপ ডিঙ্গিয়ে তার বাড়িতে ঢুকলাম। যে বেডরুমে তার নাতিরা শুয়ে ছিল, সেখানে গেলাম। অল্প জখম হলেও তারা প্রাণে বেঁচে গেছে। কিন্তু দুই প্রতিবেশী দেশের নতুন একটি প্রজন্ম এই দীর্ঘদিনের সংঘাতের প্রথম আঁচড় পেতে শুরু করেছে। যেমনটি পেয়েছিল তাদের পূর্ব প্রজন্ম। ঠিক যেন একই চিত্রের নতুন প্রদর্শন ।

“আর্মেনীয়দের মুখ বুজে (নাগোর্নো কারাবাখ) থেকে চলে যাওয়া উচিৎ। আমরা আমাদের মাতৃভূমিকে মুক্ত দেখতে চাই,” বললেন ঐ নারী।

এখানকার মানুষ কারাবাখকে তাদের দেশ থেকে হারিয়ে যাওয়া একটি ভূখণ্ড হিসাবে দেখে। জাতীয়ভাবে এটি সর্বক্ষণ মানুষকে বলা হয়।

বাইশ বছরের তরুণ ইহতিয়ার রাসুলভ কখনই নিজে নাগোর্নো কারাবাখে পা রাখেননি। সুদর্শন এই আজেরি তরুণ বললেন, সেখানে যাওয়ার জন্য তিনি জীবন দিতেও প্রস্তুত। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে তার সাথে যখন দেখা হয়, তার কিছুক্ষণ আগে তিনি যুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য নাম লিখেয়ে এসেছেন।

“আমার জাতির জন্য, মাতৃভূমির জন্য রক্ত দিতে আমি প্রস্তুত,“ কণ্ঠে আবেগ নিয়ে বলেন ইহতিয়ার। “আমার পিতামহ, বাবা, মা সবাই সেখানে বাস করতেন। আমার বড়ভাই এখন যুদ্ধ করছে।”

৯০এর দশকে নাগোর্নো কারাবাখ যুদ্ধের সময় যে হাজার হাজার আজেরি পরিবার সেখানে থেকে পালিয়ে এসেছিল, ইহতিয়ারের পরিবার তাদেরই একটি। বাকুর একটি দরিদ্র এলাকায় একটি হাউজিং কমপ্লেক্সে পরিবারের সাথে থাকে সে।

ছোটো থেকেই পরিবারের গুরুজনদের কাছ থেকে সে কারাবাখের গল্প শুনছে, আর্মেনিয়ার সাথে যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা শুনেছে, জন্মভূমি থেকে পরিবারের পালানোর করুণ কাহিনি শুনছে, আর্মেনিয়ার সাথে তাদের জাতির ঐতিহাসিক শত্রুতার কথা শুনেছে। ইহতিয়ারের মতো নতুন একটি আজেরি প্রজন্মের অনেকেরই একই কাহিনি।

ইহতিয়ারের স্পষ্ট কথা, “কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ। আজেরিরা সেখানে জোর করে ঢুকে নানা সর্বনাশ করেছে। আমি চোখে দেখিনি, কিন্তু আমি অনেক শুনেছি।” তিনি বলেন, আজেরি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ যা বলছেন, তাতে তার আস্থা রয়েছে। রাষ্ট্রের কঠোর নিয়ন্ত্রণে থাকা এই দেশে এমন বিশ্বাসের কথা অনেকের মুখেই শোনা যাবে।

 

নাগোর্নো কারাবাখের লড়াই

আলাপের সময় ইহতিয়ারের একজন প্রতিবেশী হঠাৎ দৌড়ে এসে আগেরবারের যুদ্ধের সময় পাওয়া তার পরিচয় পত্র দেখালেন। মধ্যবয়সী আসেফ আকবরদিয়েভর মাথায় এখন টাক পড়ে গেলেও খুবই চনমনে স্বভাবের তিনি। নাগোর্নো কারাবাখ নিয়ে আগের বারের যুদ্ধে তিনি লড়াই করেছিলেন।

তিনি আমাকে বললেন, “আমার বয়স এখন ৫১। তারপরও আমি দেশের জন্য যুদ্ধে প্রাণ দিতে প্রস্তুত। আমি আমার ছেলেকে যুদ্ধে পাঠিয়েছি। সে এখন সীমান্তে লড়াই করছে। আমার পরিবারের প্রতিটি সদস্যও যদি মারা যায়, দেশের এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বো না।”

রণাঙ্গনে আজেরি গ্রাম টারটারেও একজন বৃদ্ধা নারীর কণ্ঠেও একই কথা শুনেছি।

 

মাথার ওপর এবং চারদিকে যখন গোলার শব্দ, তখনও আইবেনিজ জাফারাভা বাড়ি ছেড়ে যেতে নারাজ। তাকে তার পরিবারের সাথে পেয়েছিলাম মাটির নিচে একটি আশ্রয়ে। কোলে ছয়মাসের নাতি ফারিজ। “২৮ বছর ধরে ধরে আমরা এর অপেক্ষায় ছিলাম,” মুখে কিছুটা হাসি নিয়ে তিনি আমাকে বললেন। “যা হচ্ছে তা নিয়ে আমরা উচ্ছ্বসিত। আমার ছেলে এবং মেয়ে যুদ্ধ করছে। আমরা এই শেল্টারে বসে বিজয়ের অপেক্ষা করছি। তারপর আমরা আমাদের ফেলে আসা ভূমিতে ফিরে যাবো।”

রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছিল তা যে টিকবে তেমন আশা কেউই করেনি। অনেকেই যুদ্ধ বিরতি চায়না। আজেরি সৈন্যরা ইতোমধ্যেই নাগোর্নো কারাবাখ সংলগ্ন কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিতে পরেছে। এখানকার মানুষ চায় প্রেসিডেন্ট যেন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

 

স্টিভেন রোজেনবার্গ

নাগোর্নো কারাবাখের প্রধান শহর স্টেপানাকার্টের কাছে পাহাড়ের ওপর তার বাড়িতে আমাকে আমন্ত্রণ জানালেন আসোট আগিয়ানিয়ান। গোলার আঘাতে বিধ্বস্ত তার বাড়ির কিছুটা অংশ এখনও অবশিষ্ট রয়েছে। এখনো বাড়ি ছাড়েননি তিনি। বসার ঘরের মেঝেতে কাঁচের টুকরো এবং সিলিংয়ের ভেঙ্গে পড়া কংক্রিটের টুকরো পড়ে আছে। নতুন কেনা সোফা ছিঁড়ে ফেটে গেছে। রান্নাঘর আর বাথরুম পুরোই বিধ্বস্ত।

অসোটের বাড়িতে দূরপাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছিল, এবং তার বিশ্বাস আজারবাইজান থেকে এটি ছোড়া হয়েছে। বিস্ফোরিত ক্ষেপণাস্ত্রের কিছু টুকরো তার বাগানে চোখে পড়লো।

তিনি বললেন, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর এই ক্ষেপণাস্ত্র তার বাড়িতে আঘাত করে। ভাগ্য ভালো সে সময় তিনি এবং তার ছেলে মাটির নিচে সেলারে ছিলেন। ফলে প্রাণে বেঁচে গেছেন। কিন্তু যে বাড়ি তিনি নিজের হাতে বানিয়েছিলেন তা তছনছ হয়ে গেছে।

আর্মেনীয় এবং আজেরিরা কি কখন একসাথে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে? আমার এই প্রশ্নে অসোট মাথা ঝাঁকিয়ে তিনি বললেন, “কখনই না।”

 

স্টেপানাকার্ট শহরে এখন দিনের ভেতর কয়েকবার বিমান হামলার আগাম সতর্ক দিতে সাইরেন বাজে। মানুষজন তখন দৌড়ে মাটির নিচে ঘরে বা ট্রেঞ্চে আশ্রয় নেন। বোমা থেকে বাঁচতে তাদের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের বেসমেন্টে আশ্রয় নেওয়ার সময় কানা-ফাটানো একটি শব্দ পান সের্গেই আভানিসিয়ান।
স্পেনাকার্টের কাছে এক আর্মেনীয় গ্রামের বাসিন্দা আসোট আগিয়ানিয়ান বিবিসিকে দেখাচ্ছেন কিভাবে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে তার বাড়ি মারাত্মকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
ছবির ক্যাপশান,

স্পেনাকার্টের কাছে এক আর্মেনীয় গ্রামের বাসিন্দা আসোট আগিয়ানিয়ান বিবিসিকে দেখাচ্ছেন কিভাবে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে তার বাড়ি মারাত্মকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।

“পুরো ভবনটি কেঁপে উঠেছিল,” বলেন সের্গেই। পরে উপরে উঠে দেখেন তার বাড়ির কয়েক মিটার দূরেই বিশাল একটি গর্ত। সামনের বাড়িটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। এত জোর ছিল সেই বিস্ফোরণ যে রাস্তার অ্যাসফল্ট উঠে তা বাতাসে উড়ে অনেক দূরে দূরে গিয়ে পড়েছে।

সের্গেই অভিযোগ করেন তুরস্ক এই সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছে। তুরস্ককে পাল্টা জবাব দিতে, নাগোর্নো কারাবাখের অনেকেই চাইছেন রাশিয়া যেন সরাসরি তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। তবে সের্গেই মনে করেন, সেটা হয়ত হবেনা।

“আমি ভ্লাদিমির পুতিনকে খুব সম্মান করতাম, কিন্তু তিনি বহুদিন আগেই আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন,“ বলেন সের্গেই। “তিনি এখন তুরস্কের সাথে ব্যবসা করেন। তিনি তুরস্কে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানাচ্ছেন। পুতিন যেটা ভুলে যাচ্ছেন তা হলো আমরা যদি ধ্বংস হয়ে যাই, তাহলে পুরো ককেশাস এবং রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল তুরস্কের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। আমরা মরলে, সেই সাথে রাশিয়াও মরবে।“

আর্মেনীয়রা নাগোর্নো কারাবাখের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী। তারা এই অঞ্চলকে বলে আর্তসাখ। তাদের দাবি কয়েক প্রজন্ম ধরে এটি আর্মেনিয়ার অংশ। শুধু এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্যই নয়, কারাবাখের সাথে পুরো আর্মেনীয় জাতিগোষ্ঠীর ধর্মীয় এবং জাতিগত আবেগের সম্পর্ক রয়েছে।

স্টেপানাকার্টের একটি ক্যাফেতে আমার সাথে দেখা হয় আরা শানরিয়ানের। আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত আরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলসের বাসিন্দা। নাগোর্নো কারাবাখে হামলা হয়েছে শুনে সমর্থন জানাতে তড়িঘড়ি করে তিনি আমেরিকা থেকে ছুটে এসেছেন।

“আমাকে আসতে হয়েছে,” তিনি বললেন, “আমার মাতৃভূমি, আমার জনগণের জন্য যতটুক করতে পারি, তা করতে প্রস্তুত।”

যত মানুষের সাথে আমার এখানে কথা হয়েছে, তারা সবাই আবেগে ভাসছেন। আপোষের কথা তারা যেন শুনতেই রাজি নন।

“আর্তসাখে এত আগ্রাসন হয়েছে যে এই জায়গাটি দাবি করার সমস্ত নৈতিক অধিকার আজারবাইজান হারিয়েছে,” রবার্ট আভেতিসিয়ান বললেন। নাগোর্নো কারাবাখ প্রশাসন তাকে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ করেছে।

আমি তাকে বললাম দুই পক্ষই সহিংসতা করছে। গাঞ্জাতে বহু বেসামরিক লোক মারা গেছে যে হামলার জন্য আজারবাইজান আর্মেনিয়াকে দায়ী করেছে। উত্তরে রবার্ট বললেন, “ঐ একই দিনে স্টেপানাকার্টে পাঁচটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে যাতে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে।”

“তার কয়েকদিন আগে শহরের বিভিন্ন জায়গায় একশর মত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। আমরা কখনই বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করছি না। গাঞ্জায় সামরিক স্থাপনা ছিল’।’

কিন্তু গাঞ্জায় যে আবাসিক ভবনে হামলা হয়েছে, সেটিতো কোনো সামরিক স্থাপনা ছিলনা – আমার এ কথায় তার উত্তর ছিল, “অমি সেটা ঠিক জানিনা, আমি যেটা বলছি তা হলো আমরা কখনই ইচ্ছা করে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করছি না।”

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা

বাঅ/এমএ


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন