ফিচার্ড সাহিত্য ও কবিতা

প্রবীর রঞ্জন মণ্ডল -এর একগুচ্ছ কবিতা

প্রবীর রঞ্জন মণ্ডল র একগুচ্ছ কবিতা


আলোক বিন্দুতে


এই মুহূর্তে আমার শরীরখানা
মেখে নিয়েছে অদ্ভুত এক রাতের আঁধার,
দিকে দিকে সুনসান অন্ধকার নিসপিস করছে
গভীর ভয়েরা ভূতের মতো উঁকি দিচ্ছে 
আমার চোখ মুখ বুকের উপর।
এক্ষুনি এই মুহূর্তে একটা সুখের ঘরের বাতি
মনের মনন জুড়ে বড়ই প্রয়োজন।
কোনো এক দুর্বোধ‍্য সংকেত পাঠিয়ে দিচ্ছে
ইঙ্গিতময় আঙ্গুলের নির্দেশে
আমার শরীর জুড়ে তুফান তুলতে
আর ভুলিয়ে দিতে আমার জীবন
কোনো এক বিস্তীর্ণ আলোময় আলোর ভূবনে।

জীবনের পরতে পরতে খাঁজে খাঁজে
জমে আছে কত স্মৃতি বিস্মৃতির মেদ!
কত খেদ যন্ত্রণা দলা পাকিয়ে আছে
গলার কাছে ;মাথার ভিতরে।
সবকিছুর উপশম দিতে
একটা নিরপেক্ষ আলোর হাতছানি চাই,
চাই অদ্ভুত আঁধার ঠেলে বেরিয়ে এসে
আলোর ভূবনে পা রেখে
সুক্ষ্ম আলোক বিন্দুতে মিশে যেতে।


শতাব্দী পেরোই

একটা পেঁজা পেঁজা তুলো মেঘ
মাঠ জুড়ে এঁকে যাচ্ছে সবুজ বারান্দা
পুবের চৌকাঠে দক্ষিণা বাতাস কিলবিল করছে।
মনের অলিন্দে এসে ঘা মারছে
এই পৃথিবীর যত অপরিত‍্যক্ত কাল ধোঁয়া।
পৃথিবীটা তোমার মতো অনিন্দ‍্য সুন্দর হাসি হাসবে বলে
সারা চরাচরব‍্যপি মেলে দিয়েছে সহস্র চোখ ;
গলা শুকানো শুষ্ক ঢোঁক গিলে লাভ কী বলো?

ভয় পেতে হবেনা এখন আর
যতই যুদ্ধের দামামা বাজুক পৃথিবী জুড়ে
রাষ্ট্র নায়কেরা যতই আস্ফালন করুক
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা কখনোই নেই।
যুদ্ধ করলে এখন ইতিহাস হবে
রাষ্ট্রনায়করা অমর হবে কী কখনো!
তাই ঢের হয়েছে,আর নয়,
চলো,দক্ষিণের দুয়ার খুলে বসে থাকি
সবুজের দিকে তাক করে থাকি চোখ
ঢোঁক গিলতে গিলতে আরও একটা শতাব্দী পেরিয়ে যাই।


মননের মাঝখানে


সাধের ঊনান জুড়ে বায়বীয় স্বাদ
নাকে লেগে ঢুকে যায় বুকের ভিতর
মনের ঘ্রাণে ঢুকে পাক খায় মাথার মাঝে
কোনো কিছু তিক্ত হবার আগে ডুবে যায়
মন আর মননের মাঝে ডুব ফুঁড়ে ওঠে।
সবদিক বর্ম আঁটা ধাপ ধাপ সিঁড়ি
কেটে কেটে উঠে যায় একেবারে মগডাল;
তারপর তাল খুঁজে না পেয়ে নেমে আসে
এক পা, দু’পা করতে করতে নীচে
একেবারে নীচে পাতাল ঘরের পর্দায়।
জর্দায় পান মাখা লাল কেটে কেটে
ছাঁকনিতে একেবারে চিরতরে ডুব মারে
অবশেষে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ছাড়ে

অশরীরী কোনো এক হাভাতে আত্মার মতো।



সংবাদটি শেয়ার করুন