চারদিকে কত অভিযোগ, কত অভিশাপ।
প্রাণটুকু কেড়ে নিতে হায়নাদের কত দৌঁড়-ঝাপ!
অথচ আমার কোন্ অভিযোগ নেই, অভিমান নেই, শত্রু নেই!!
তুমিও কতদূর দেখি নাহ কতকাল..
মনে পড়ে, মেলার মাঠে যখন শকুনের দল’রা তোমার দিকে নোংরা নজরে কথা বলেছিল আমি তখন গর্জে উঠেছিলাম।
তোমার হাত ধরে বলেছিলাম এইটা আমার শহর, আমার দেশ, তদের মত হায়নাদের স্থান এখানে হতে পারে নাহ।
তখন তোমার ভীত চোখ টলমল করছিল!
মৃদু বাতাসে উড়ছিল তোমার চুল আর তোমার গায়ের মিষ্টি গন্ধ।
ভয়ে তুমি আমাকে তোমার সাথেই নিয়ে গেলে।
ন্যায় অধিকার আদায় করতে গিয়ে যখন ক্ষমতাবানদের হাতে মার খেয়েছিলাম।
মুঠোফোনে আমার কন্ঠস্বর শুনে
তখনও তোমার চোখের পানিতে বুক ভিজে যাচ্ছিলো আমার।
হায়নাদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে
দৌঁড়ে এসে লুকিয়েছিলাম তোমার বুকে।
তখনও তোমার চোখে কান্না।
তুমি কেন বুঝো না রাজনীতি’তে কান্না থাকতে নেই!
সেই কান্নাকে শক্তি বানিয়ে মঞ্চ কাঁপাতে হয়।
শ্লোগানে রাস্তায় পূঁজিবাদ আর মৌলবাদী’দের আত্মা কাঁপাতে হয়।
তোমার কান্না আমাকে প্রেমিক বানায়’নি,
লাশ কাঁধে নিয়ে যখন মিছিলে বের হয়েছিলাম
তখনও তুমি আমার বুকে এসে পড়েছ।
রক্তের দাগ আর তোমার কান্না বুকে করেই এগিয়ে গেছি।
উচ্চস্বরে ধ্বনিত্ব করেছি
স্বৈরাচার নিপাত যাক, স্বাধীনতা মুক্তি পাক, গনতন্ত্র মুক্তি পাক।
শেষবার যখন কান্না করবে
আবারো আমার বুক ভিজবে।
তুমি আমার বুকে আঘাত করে বলবে,
“তুমি এত কঠিন! তোমার কী হৃদয় বলতে কিছু নেই”!
তীক্ষ্ণ যন্ত্রনা নিয়েই বুঝেছি, রাজনীতি’তে হৃদয় থাকতে নেই।
সেই কত বছর পর আবার তুমি আমার বুকে এসে পড়লে।
সেই একই রকম রক্ত আর তোমার কান্না।
চারিদিকে শ্লোগান- স্বৈরাচার নিপাৎ যাক! গনতন্ত্র মুক্তি পাক!
তোমার কান্না আবারো শক্তি যোগাচ্ছে।
তোমার কান্না নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে।
মাঠ কাঁপাচ্ছে, ব্রেকিং নিউজ হচ্ছে।
আমার বুকটা আগের মতই পাথরের মত কঠিন।
শুধু লাশের স্থানে নিজের প্রাণহীন এক নিথর দেহ নিয়ে ছুটে চলেছি….
অথচ তুমি’ই পারতে নিজের হাতে রান্না করে খাবিয়ে কপালে চুম্বন দিয়ে শীতল করতে।
সময় বদলেছে, স্বৈরাচারের পরিচয় বদলেছে।
আমার বুকে রক্ত আর তোমার কান্না এখনো লেগে আছে।
জানো তো, রাজনীতি’তে প্রেম নেই, ভালোবাসা নেই! আছে শুধুই যুদ্ধ!
লেখাঃ পিকলু প্রিয়, দোহা, কাতার।