যাপিত জীবন

রাজ কুমার শীল যখন শিরোনাম!

রাজ কুমার শীল যখন শিরোনাম!
রাজ কুমার শীল

ঢামেকের ছাত্র এখন ভুসি কারখানার ৫০ টাকার শ্রমিক!  রাজ কুমার শীল যখন শিরোনাম!

রাজ কুমার শীল যখন শিরোনাম! সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ জায়গা করে নিয়েছেন। সংবাদটি ভেবে দেখার মতো। খুবই করুণ।  ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজ কুমার শীল। বিরামপুর পৌর শহরের ঘাটপাড় গ্রামের নগিন শীলের ছেলে। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস রাজ কুমার শীল এখন প্রতিবন্ধী। বর্তমানে রাজ কুমার শীল দিন ৫০ টাকায় সেলিম সরকারের ভুসির কারখানায় দিনমজুরের কাজ করছেন।

৭০ বছর বয়সী মায়ের সঙ্গে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য নিজের শিক্ষাজীবনের সার্টিফিকেটগুলো সত্যায়িত করতে যান ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালীর কাছে। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার আরও এক প্রতিবন্ধী ভাই।

ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালীকে রাজ কুমারের মা পার্বতী রানী শীল দুই প্রতিবন্ধী ছেলের ভাতার কাগজ সত্যায়িত করার অনুরোধ করেন।

ডা. বেলায়েত হোসেন কাগজ হাতে নিয়ে রাজ কুমার শীলকে জিজ্ঞাসা করলেন, পড়াশোনা কত দূর করেছেন।

উত্তরে রাজ কুমার শীল বললেন, আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ছাত্র ছিলাম। এটি শুনতেই অবাক হয়ে যান ওই চিকিৎসক।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এমন কথাই জানালেন ডা. বেলায়েত হোসেন। ফেসবুকে প্রচারণায় এভাবে উঠে আসে মেধাবী রাজ কুমার শীলের জীবনের গল্প।

এ বিষয়ে মা পার্বতী শীল বলেন, ছোটবেলা থেকেই রাজ কুমার শীল খুবই মেধাবী– প্রাথমিক ও জুনিয়ার পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়েছিল। ১৯৮০ সালে বিরামপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাস করেছে। এর পর ঢাকা কলেজ থেকে এইসএসসি পাস করার পর ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়।

প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করলেও দ্বিতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষায় ফার্মাকোলজিতে অকৃতকার্য হওয়ার পর দ্বিতীয় বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও ভালো রেজাল্ট করতে না পেরে গুরুতর মানসিক অসুস্থতায় (সিজোফ্রেনিয়া) পড়ে যায়।

এর পর দীর্ঘ ১৪-১৫ বছর ধরে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় রাজ কুমার শীল। এর মধ্যে এক বছর পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছে।

ছেলের এমন দুঃখের কথা বলতে বলতে মা পার্বতী রানীর দুচোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে। পার্বতী রানী গৃহিণী হলেও বাবা নগিনা শীল পেশায় নাপিত। ছেলেদের শিক্ষায় শিক্ষিত করতে দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন। আজ যদি ছেলে রাজ কুমার শীল ডাক্তারি পাস করত সংসারে এত অভাব থাকত না।

ঢামেক ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বর্তমানে ৩০-৫০ টাকা মজুরিতে সেলিম সরকারের ভুসির কারখানায় দিনমজুরের কাজ করছেন রাজ কুমার শীল।

তার আরেক ভাই ঢাকা তিতুমির কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছিলেন, তারও একই রোগ হয়। স্নাতক সম্পন্ন করতে পারেনি সে।

সামর্থ্যবান না হওয়ায় তাদের সাহায্যার্থে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য দরখাস্ত করছেন তাদের মা পার্বতী রানী শীল।

এই অসহায় পরিবারের জন্য মেধাবী রাজ কুমার শীলের মা পার্বতী রানী শীল সমাজের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তিবর্গের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ করেছেন। তিনি ০১৭০৭১৪৪৫৯৭ বিকাশ নাম্বারটি খোলা রেখেছেন।

আরও পড়ুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ                                 

কানাডার সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − one =