ফিচার্ড মত-মতান্তর

রাষ্ট্রের নৈতিকতা সানজিদা’র মত অসুস্থ! ।।। শিতাংশু গুহ

বাংলাদেশের-ভবিষ্যৎ-কি

রাষ্ট্রের নৈতিকতা সানজিদা’র মত অসুস্থ! ।।। শিতাংশু গুহ

এডিসি সানজিদা আফরিন নিপা অসুস্থ, তাঁর স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন জানেনা, জানে নিপা’র সিনিয়র কলিগ রমনা এডিসি হারুন-অর-রশিদ। এঘটনা ধামাচাপা পরে যাচ্ছে। কারণ এটি অভ্যন্তরীণ সমস্যা। তবে কোন ঘটনা সবসময়ের জন্যে ধামাচাপা পরে থাকে না? যেমন ২০১৮’র নির্বাচন। এটি এতকাল ধামাচাপা পরে ছিলো, এখন যত সমস্যা সব কিছুর মুলে ঐ নির্বাচন। সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে, রাষ্ট্রের নৈতিকতা সানজিদা’র মত অসুস্থ। 

সানজিদা বলেছেন, ‘হটাৎ করে আমার বুকে ব্যথা হয়–’। আমাদের বুদ্ধিজীবীদের এখন সানজিদা’র মত বুকে ব্যথা হচ্ছে, তারা ইতস্তত: করছেন, আমেরিকা না শেখ হাসিনা? সানজিদা’র স্বামী আজিজ এডিসি হারুনের চেয়ে প্রভাবশালী, তিনি চাইলে স্ত্রীকে যেকোন ডাক্তার দেখাতে পারতেন, কিন্তু সানজিদা কল দিলেন হারুনকে। ঠিক তেমনি বুদ্ধিজীবিরা দেশকে রাইট ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিতে পারতেন, কিন্তু তারা সবকিছুর মধ্যে ষড়যন্ত্র ও বিএনপি আবিষ্কার করলেন।

বিএনপি ক্ষমতায় আসুক কেউ চায়না, আসবেও না, কিন্তু আমাদের বুদ্ধিজীবীরা গত দেড় দশক সরকারের কাছ থেকে যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন, এখন পৃষ্ঠদেশ রক্ষায় বিএনপি’র বিরোধিতা করা ছাড়া উপায় নেই! তলে তলে অবশ্য তারা অনেকে আপোষ করছেন, নিরপেক্ষ সাজার চেষ্টা করছেন, কারণ আমেরিকান নিষেধাজ্ঞা এলে তো সমস্যা। অন্যকেউ ক্ষমতায় এলে এদের জারিজুরি বের হয়ে যাবে, তাই ‘আওয়ামী লীগ বাঁচাও, নিজে বাঁচো’, তবে আমেরিকাকে হাতে রেখে।

সানজিদা-আজিজ স্বামী-স্ত্রী। আমাদের বিদেশমন্ত্রী একদা বলেছিলেন যে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক স্বামীস্ত্রী’র মত! আমাদের ক্ষেত্রে হারুন হচ্ছেন ‘চীন’, চীনের সাথে পরকীয়া করাই যায়! পরকীয়া খারাপ নয়, বেআইনি নয়, অনৈতিক। ভালবাসা উদ্বৃত্ত থাকলে অন্যকে দেয়াই যায়! পুলিশের কর্মকর্তা বলেছেন, সানজিদা মিডিয়ায় কথা বলতে পারেন না। ক’দিন আগে আইনমন্ত্রী একজন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সম্পর্কে একথা বলেছিলেন, তিনি বরখাস্ত হয়েছেন। পুলিশ-পুলিশ ভাই-ভাই, সানজিদা ও হারুন দু’জনই রংপুরে বদলি হয়েছেন।

চ্যানেল আই-কে সানজিদা বলেছেন, আমার স্বামী ছোট্ট বিষয়ে বিশ্রী সিচুয়েশন তৈরী করে ফেলেছেন। আমেরিকা আসলে তাই করছে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন নামক ছোট্ট বিষয় নিয়ে বাংলাদেশে বিশ্রী সিচুয়েশন তৈরী করে ফেলেছে। আমেরিকার মত বড় দেশ এসব ছোট্ট ছোট্ট বিষয় নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলতো। এরআগে বিএনপি মাগুরা, ১৫ই ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে, তারও আগে জিয়া-এরশাদ ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছেন, আমেরিকা শুধু শুধু ২০১৮’র নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগকে বিব্রত করছে?

সানজিদা পরকীয়া করবেন কিনা সেটি তাঁর বিষয়, তবে পরকীয়া ধরা পড়লে সমস্যা হয়? ভারত আমাদের পরানের বন্ধু, চীনের সাথে আমাদের শুধু লেনদেনের কারবার, একথা তো সবাই শুনেছেন। আমেরিকা এই লেনদেনকে ‘পরকীয়া’ ভাবছে, এতে সমস্যা হচ্ছে। আজিজ তার স্ত্রীকে বিশ্বাস করবেন কিনা সেটি তার বিষয়, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আমেরিকা তেমনি চীন-রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বকে ‘পরকীয়া’ মনে করে চটেছে।

বাংলাদেশ-আমেরিকার সম্পর্ক এখন আদালতে। ভারত বাংলাদেশের উকিল। আমেরিকার উকিল লাগেনা। অনেক মামলায় আপোষ হয়, দুইপক্ষ একমত হলে বিচারক তা মেনে নেন। আশা,   সানজিদা-আজিজ ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সুখে-শান্তিতে সংসার করুন। সামনের নির্বাচনে সকল পক্ষ সন্তুষ্ট হলে বাংলাদেশ ও আমেরিকা বা উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান সম্ভব। নাহলে? সানজিদা-আজিজ বিচ্ছেদ যেমন কাম্য নয়, বাংলাদেশ-আমেরিকা সম্পর্কের উন্নতি ঘটুক, তাই কাম্য। কারণ, নইলে ভুগবে জনগণ। [email protected];


এসএস/সিএ

সংবাদটি শেয়ার করুন