ফিচার্ড বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা লেখালেখি

শব্দগুচ্ছ ।। মে ২০২৩ সংখ্যা ।।। বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা

ব্দগুচ্ছ ।। মে ২০২৩ সংখ্যা ।।। বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা

জয় মানবসময় ।।।মুহম্মদ নূরুল হুদা
মুহূর্তের সঙ্গে মুহূর্তের
যে বিরামহীন সংক্রান্তি
তারই নাম কি অনন্ত?
তেমনি এক অনন্ত
সংক্রান্তির লগ্নে
ক্ষুদ্রতম রশ্মিবীজ হয়ে
সূর্য এসে ঠিকরে পড়লো
দুর্বার ডগায়।
অবাক চোখে তাকায়
সম্রাট বিক্রমাদিত্য:
তখন খৃস্টপূর্ব ৫৭ অব্দ।
এই উপমহাদেশের দশদিগন্ত জুড়ে
বেজে উঠলো শঙ্খ-শিঙ্গা- ঢাক।
সেই তো তোমার প্রথম সনাক্তি,
হে বৈশাখ, হে পহেলা বৈশাখ।
অনন্তর ৫৯৩ খৃস্টাব্দ।
তোমাকে নিয়ে তৈরি হলো
এই বঙ্গীয় ভূখণ্ডের অন্য এক মানসাঙ্ক।
সেবার তোমাকে দৃষ্টিবন্দি করলো
রাঢ় বঙ্গ হরিকেল সমতটের গণপতি
মহারাজ শশাঙ্ক।
সেই থেকে অদ্যাবধি
তোমার আনুষ্ঠানিক যাত্রার আর বিরাম নেই।
তোমার অদৃশ্য পা-ডানা চলছে তো চলছেই।
তবে
১৫৫৬ সালে ময়ূরসিংসহাসনে বসেই
কোষাগারের দিকে লুব্ধ চোখে তাকালো
মোগলসম্রাট মহামতি  আকবর।
তার সঙ্গে যুক্ত হলো জ্যোতির্বিদ
আমীর ফতেউল্লাহ খাঁ সিরাজীর
কুশলী অন্তর।
প্রজাহিতৈষণার সঙ্গে
শাসকের খাজনা আদায়।
শুরু হলো বাংলা সনের নতুন দায়।
বর্ষশেষ ও বর্ষশুরুর লগ্নে
হালখাতার পাশে পুণ্যাহ।
আমানি-র ঊর্বরতা আর
গ্রীষ্মের দাবদাহ।
বৈশাখী মেলায় সব সম্প্রদায়ের
নান্দনিক বন্ধনের
সমন্বিত প্রবাহ।
নববর্ষে নবহর্ষে মুখরিত
গণবাঙালির মিলনের গণঢাক।
নীলিমায় পাখপাখালির পরিযায়ী ঝাঁক।
আসে বৈশাখ, এলো বৈশাখ।
অনন্তর
গঙ্গাপদ্মাযমুনার মিলন স্রোতের রেখায় রেখায়
বাংলাদেশে গণবাঙালির বিবর্তনের ডাক শোনা যায়:
”স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়?”
ভাষাসংস্কৃতির স্বাতন্ত্রসন্ধানী ভাষাযোদ্ধা বাঙালি
স্বাধিকারের পথ ধরে প্রমুক্তির স্বাদ পায়।
সময় বদলে যায়,
বদলে যায় হিসেবের পাল্লা।
১৯৬৬ সালে বর্ষপঞ্জির
নবপর্যায়ের সংস্কারক
বহুভাষিক বহুসাংস্কৃতিক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
গণমানুষের গণসময় এ-পথেই যেন ভাগ্যবদল চায় ।
তাই কি ১৯৬৭ সালে বাংলার গণশিল্পীরা তোমাকে
কণ্ঠে নিলো রমনার বটমূলে আর অশ্বত্থতলায়?
সেই থেকে রাজা ও পণ্ডিতের পাঁজিপুঁজি ছেড়ে
বাঙালির লোকজ নববর্ষ যায়
বিশ্বব্যাপী সর্বমানবের মঙ্গলযাত্রায়।
ভাষা, সংস্কৃতি থেকে রাজনীতি,
অনন্তর মুক্তিকামী বাঙালির
অভিন্ন রাষ্ট্রনীতি।
জাতিপিতা মুজিবের ডাকে একাত্তরে
মুক্তিযোদ্ধা বাঙালিজাতি যায়
জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের মূল ঠিকানায়।
সেই থেকে দিয়ে সাতসমুদ্র পাড়ি
পহেলা বৈশাখ স্বাধীনতার প্রমুক্তসোয়ারি
লাল-সবুজের পালের নৌকায়।
হালখাতা, পুণ্যাহ, আমানির সমতলে
তুমি যদিও বাঙালির ইলিশপান্তায়,
তুমি ক্রমে ক্রমে মূ্র্ত ও বিমূর্ত বাংলার অখণ্ড জলেস্থলে,
তার আকাশগঙ্গায়, তার বিশ্বমোহনায়;
তুমি লালন-রবীন্দ্র-নজরুলের একতারায় দোতারায়
তুমি নতুন প্রজন্মের কবিদের বদলপ্রবণ চেতনায়
ক্ষণে ক্ষণে তাকাও অবাক;
তুমি সতত স্বতশ্চল হে বৈশাখ, হে বহতা বৈশাখ।
মূর্ত থেকে বিমূর্তের বাঁকে
বাজাও, বাজাও তোমার অনন্তের ঢাক।
কিংবদন্তিলীন মুক্তবাঙালির সপ্তডিঙা মধুকর
তুমি তার সোনার তরীতে দিগ্বিজয়ী চাঁদসদাগর,
তুমি আজ বিশ্ববাঙালির অনন্তলীন সময়বাড়ি,
দেশে দেশে কালে কালে নও কারো পর,
তুমি জীবাজীবে প্রাণ-বিশ্ব, তুমি তার ঘরচরাচর।
দৈর্ঘ্য নেই প্রস্থ নেই
সময়ের কোনো গতি-যতি নেই
মানববোধের ইন্দ্রজালে
ছুটছে তো ছুটছেই।
যাও ছুটে যাও
মুহূর্ত থেকে মুহূর্তে যাও
বাজাও বাজাও
তোমার বহমানতার ঢাক;
হে বৈশাখ, হে অনন্ত বৈশাখ।
অন্ত থেকে অনন্তে যাও
অঙ্গ থেকে অনঙ্গে
হে বৈশাখ, তুমি খণ্ডকে অখণ্ড করেছো
মহামানবের এ মহাবঙ্গে।
জয় অনঙ্গের জয়
জয় অখণ্ডের জয়
জয় মানবসময়
জয় মানবসময়
জয় মানবসময়
[৩০.১২.১৪২৭-০১.০১.১৪২৮]


একটি সমান বিশ্ব একটি সক্ষম বিশ্ব ।। মৌ মধুবন্তী

বিশ্ব নারী দিবসের থীম কালার বেগুনী রং বটে
তাই বলে নারীরা বেগুনী রঙের এগপ্লান্ট  নয়
পৃথিবীর অতিবেগুনী রশ্মির মত
নারীরা একেকটি তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ
নারিদের প্রতিটি বলা একেকটি তরঙ্গবাহী
ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণ, নারীদের
প্রতিটি চলা কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান
নারীদের রঙের কোন সীমারেখা নেই
কিছু দৃশ্যমান কিছু অদৃষ্টের লিখনের মত
অস্পষ্ট, বর্ণহীন,তাই নারীরা মা এবং
ম-বর্গের সকল ধারা বুকে নিয়ে
তার শিশুকর মুখে তুলে দেয় স্তনভর্তি দুধের নিপল
সেখানেই তো রাসায়নিক যোগ ঘটে মা ও শিশুর
মায়ায়,  ভালোবাসায় ও আত্মার বন্ধনে।
কিন্তু কোথায় সে তরঙ্গদোলা তার ক্রিয়া-বিক্রিয়া হারায়
কোথায় চলে যে যায় সে অতি বেগুনী রশ্মির গল্পগুচ্ছ
শিশুগুলো পুরুষ হয়ে দোলায় ময়ুরের পুচ্ছ
জীবনের টিস্যু আর রক্তকণায় জেগে থাকে শুধু
কাম আর কামনার আগুন, মা হয়ে যায় অপ্সৃয়মান
এক ছায়ামুর্তি। এ বেদনা প্রতিটি মায়ের বুকে ।


বন্ধু আমার ||| শানা হক

আমাকে মনে পরবে পাঠশালার কিছু মূহুর্তে,
খেলার মাঠে আন্দোলনে সংগ্রামের বাহুবন্ধনে।
আমাকে মনে পরবে বিতর্কে প্রতিরোধে,
প্রতিবাদে দাবী আদায়ের মিছিলে।
আমাকে মনে পরবে ক্যান্টিনের আড্ডায়,
ক্যাম্পাস মোড়ে দোকানে চায়ের চুমুতে।
আমাকে মনে পরবে চাঁদনী রাতে,
মাঠের কোণে তুমি আমি গল্পে সুখটানে।
আমাকে মনে পরবে স্মৃতির ফ্রেমে,
তোমার প্রার্থনায় পূজায় আরাধনায়;

প্রিয় বন্ধু আমার।
সমাবর্তনের ছবিতে ঘটনায় ভিডিওতে।
আমাকে মনে পরবে তোমার কষ্টে আনন্দে,
হৃদয়ে জমা ভালবাসার চৌকোঠায়।
আমাকে মনে পড়বে গল্প উপন্যাস কবিতায়,

মোনালিসা, নজরুল ও  সুকান্তের আনন্দ বেদনায়।
আমাকে মনে পড়বে তিলে তিলে পুঞ্জীভূত,
তোমার স্মৃতির সকল ঘটনায়।
আমাকে হয়ত ভুলে যাবে,
জীবনের প্রয়োজনে কাজের চাপে ব্যস্ততায়।
এ কবিতাটি তোমাকে মনে করাবে,
আমার সাথে তোমার কিছুক্ষণ মিনিট ঘণ্টা।
আনন্দে, উচ্ছ্বা্‌স, বেদনা-বিচ্ছেদের আবেগে,
অজান্তেই তোমার দুচোখ অশ্রুতে ভরে উঠবে।
বন্ধুটিকে মনে রেখো দোয়া করো,


১৭ই মে ১৯৮১ ||| ইউসুফ রেজা

স্বদেশের মাটিতে তিনি পা দিলেন ছ’বছর পরে
পিতার মৃত্যুর পর বহুদিন থাকতে হলো লুকিয়ে লুকিয়ে
কুর্মিটোলায় নেমেই তাঁর দুই চোখে জল গ্রীষ্মনিবাসে
এভাবেই জাতির জনক ফিরেছিল শত্রুর কারাগার থেকে।
লক্ষ লক্ষ লোক সেই দিনও এসেছিল হরিষে বিষাদে
দ্বিগুণ জনতা আজ তেজগাঁও ফার্মগেট খামারবাড়িতে
বোয়িং বিমান থেকে নেমেই সে মানুষের ঢল দেখে অভিভূতপ্রায়
এই সব জনতার কিছুই কি ছিলনা সে কালোরাত্রিতে
শংকা আর ভয় তবু ছায়ার মতন পিছু তাড়াতেই থাকে
বোন স্বামী সন্তান বিদেশে। নিজের জীবন তিনি বাজী রেখে এসেছে স্বদেশে
পিতৃদত্ত প্রাণ ছাড়া কিছু তার নেই হারাবার
বললেন মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে চললে জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়।
জৈষ্ঠ্যঝড়ের রাত্রি হত্যাকারী সেনারাও এখনও পোশাক পরে আছে
হননকারীকে তবু বিচারের আওতায় আনতেই হবে।
দীর্ঘ পথ ধীরে ধীরে পার হয়ে অবশেষে পৌঁছলেন ধানমন্ডিতে
সশস্র পাহারাদার নিরুত্তাপ সরু চোখে আসলো এগিয়ে
আবার এসেছ তুমি বত্রিশ নম্বরের অভিজ্ঞ বাড়িতে
তোমাকে না নিঃশেষে হত্যা করা হয়েছিল পঁচাত্তর সালে?


আহত বেদনা ||| জালাল কবির

একটি পাতিলেবুর ঘ্রাণ
আমারে দিয়েছে সবুজ সজীব প্রাণ।
আষাঢ়ের সন্ধ্যার মত
তোমার কাঁদনে বেলফুল ঝরে,
ক্ষীণ হয় চোখের পাতা।
নীল দরিয়ার ঢেউ যেন হায়
ফেনিল স্বপ্নে জাগায় মর্ম ব্যথা।
আমার হরিণ হৃদয়,
খুজে ফেরী লেবরীর ফুল।
উড়াই চাহনি প্রিয়তম তুমি
দ্বাদশীর চাঁদে, কেঁদে কেঁদে
কেন তুমি এতই ব্যাকুল?
হাসনা-হেনা ঝরে গেছে
তবু রাত হয় না তো ভোর,
বল বল প্রিয়তম কোন দুঃখে
তুমি আজ এতই সুদুর


সাঁতার জানি না আমি…|||  শেখ জলিল

তুমি ধন্যি বুনো সহচরি
জলে নেমে হয়ে যাও পরি
আমি ভয় পাই হাঁটু জলে
কখন জানি ডুবি অতলে
সাঁতার জানি না আমি!

কী উন্মত্ত এই দিবাযামী
মন্থনে মন্থনে ভরা ঢেউ
মালা চকোরি পিছে ফেউ
স্বপ্নে পরির উত্থান দেখি
সত্যিই জোয়ার নাকি মেকি?

নিকানো সৈকতে লেখালেখি
কবে তার সমাপ্তি জানে না
বেলাভূম সীমানা মানে না
চাঁদ ও চকোরে আনাগোনা
এ কী বাস্তব নাকি কল্পনা!

বুনো সঙ্গীত হয় নি শোনা
দ্বিধার সংকটে বাড়ে ঢেউ
আশেপাশে দেখছে কি কেউ
হাঁটু জলে হাঁটে জলপরি
ভাবছি ভুলে হাতটা ধরি।


আত্মজ ||| ঋতুশ্রী ঘোষ

তোমার বুকের আঁচলে রাখনি ঢেকে
ক্ষুধার্ত যন্ত্রনায় দাওনি প্রত্যাশিত শীতল চুম্বন ,
সহস্র আর্ত চিৎকারে উপেক্ষিত গর্ভজাতককে
দিয়েছ নীলাম্বর করতল।
আত্মজার বিশ্বাস ভেঙ্গেছ পরোপকারের মুর্ছনায়।
যদি আত্মস্থ একবার বলতে –
আমিই তোমার প্রথম, একমাত্র ও মূল অধীশ্বর
তবে এত পথ পার হওয়ার পর
আজ বলতে হতনা
তুমিই আমার…, তুমিই সর্বশ্রেষ্ঠ… …

যখন তোমাকে আমার
খুব প্রয়োজন ছিল অহর্নিশি ,
তখনি অবাধ্য কৈশোরে প্রাণ ভরে বলতাম
‘তুমি আমার মা’।
আজ এত দূরে
তোমার বুকের গন্ধ নিতে
খুব ইচ্ছে হয় –
বিনিদ্র অহংকারী নিঝুম নিশীথে।


মহান শ্রমিক দিবসের জন্ম কথা ||| মোয়াজ্জেম খান মনসুর

নির্যাতিত নিপীড়িত অবহেলিত মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন পৃথিবীতে কোথাও কখনো সহজ মসৃন বা রক্তপাতহীন  হয়নি। AFL (আমেরিকান ফেডারেসন অফ  লেবার) উদ্দ্যোগে  আমেরিকার শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালের ৪ঠা মে  শ্রমিকরা  তাদের আট ঘন্টা  কর্ম দিবস দাবীর  ধারাবাহিক চলমান অন্দোলন  এবং আগের দিন ৩ মে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে Heymarket  Square এক  প্রতিবাদ  সভায় জমায়েত হয়। শ্রমিকদের লাইন থেকে  পুলিশের প্রতি বোমা নিক্ষেপ এবং বিস্ফোরনে এবং পুলিশি আক্রমনে নিহত হয় ১০-১২ জন। আমারিকার ইতিহাসে এটা  Heymarket tregedy হিসাবে ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়।

মেহনতি শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের অন্দোলনকে স্বিকৃতি ও সন্মান  করে পৃথিবীব্যপী  পহেলা মে শ্রমিক  দিবস বা May Day পালন করা হয়।  May Day আন্দোলনের আলোর মিছিল  আমেরিকা থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে  ইউরোপসহ  পৃথিবীর বিভিন্ন বন্দরে নোংগর করে।

নির্যাতিত মেহনতি  শ্রমিকদল জেগে উঠে উত্তাল সমুদ্রের মতন । তাদের অধিকার আদায়ের বজ্রকন্ঠের শ্লোগানে -শ্লোগানে  কাপেঁ উঠে  পৃথিবীর  আকাশ বাতাস। First International Congress of Socialist Parties of Europe  ১৪ জুলাই ১৮৮৯ পহেলা মে’কে  প্রথম May Day ঘোষনা করে।

অ১৯০০ শতাব্দীর দিকে আমেরিকার ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনে জাগরনে সরব হয়ে উঠে। আমেরিকায় শিল্প বিপ্লবের ছোঁয়া লাগায় শ্রমিকদের কর্ম সংস্থানের পথ সীমিত হওয়ায়,অমানুষিক পরিশ্রম ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত শ্রমিকরা  অধিকার আদায়ের জন্য সরব হয়ে উঠেছিল।  শিকাগো শহর ছিল আন্দোলনের অন্যতম উত্তাল জনপদ। কারখানার  অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শ্রমিকদের দৈনিক পনের ঘন্টা অমানুষিক পরিশ্রমের কাজের বিরুদ্ধে তারা গর্জে উঠেছিল।শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল  থেকে ৪ মে পর্যন্ত বিভিন্ন স্কোয়ারে – রাস্তায় শ্রমিকরা ১৯ বার মিটিং মিছিলে জমায়েত হয়েছিল। ১৮৮৬ সালের মে মাসের প্রথম দিনে ট্রেড ইউনিয়ান,এনারকিস্ট,সোসালিস্টদের উদ্যোগে শিকাগো সিটি সেন্টারে শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা কাজের দাবীতে ন্যাশনাল মুভমেন্ট ডাকা হয়। দাবী আদায়ের লক্ষ্যে প্রায় তিরিশ হাজার শ্রমিক সিটি সেন্টারে জমায়েত হয়।  ৩রা মে McCormic Reaper Plant  কারখানার নিপিড়িত শ্রমিকদের ধর্মঘট আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালায় । এতে দুইজন শ্রমিক নিহত হয় এবং চারজন আহত হয়। সে কারনে  ৪ মে  সন্ধ্যায়  শিকাগো ট্রেড ইউনিয়ানিস্ট ,সোসালিস্ট,এনারকিস্ট এবং সাধারন শ্রমিকদের  এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন ছিল শিকাগোর HeyMarket Square .শ্রমিকদের একমাত্র দাবী দৈনিক আট ঘন্টা কাজ।  শ্রমিকদের সভা ছিল শান্তিপূর্ণ কিন্তু হটাৎ করে একজন বক্তা শ্রমিকদের পুলিশ আক্রমন করার জন্য উত্তেজিত ও  উসকানি দেয়। ফলে শ্রমিকদের পিকেটিংলাইন থেকে  রায়টপুলিশের  দিকে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে সাতজন পুলিশ নিহত এবং সত্তর জন আহত হয়, ফলে পুলিশ  পাল্টা গুলি চালালে সাত আট জন শ্রমিক নিহত হয়।

আজ থেকে প্রায় দেড়শ বছর আগে আমেরিকার শিকাগো শহরে নির্যাতিত শ্রমিকরা আধিকার আদায়ের লক্ষ্যে জীবন বাজি রেখে আন্দোলন  সংগ্রাম শুচনা করেছিলেন  এবং সংঘটকরা জীবন উৎসর্গ করেছেন ফাসিঁ কাসঠে । তাদের দেখানো পথ বেয়ে বেয়ে আজ পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমিকদের সপ্তাহ ৪০ ঘন্টা কাজ, বাৎসরিক ছুটি, বাৎসরিক নির্ধারিত অসুস্থতার দিন , চিকিৎসা খরচ এবং সরকারি ছুটির দিনে বেতনসহ বিভিন্ন সুবিধা পাবার সুযোগ সৃস্টি  হয়েছে। পৃথিবীর ৮০ দেশে মে ডে পালন করা হয়। প্রাক্তন সভিয়েত ইউনিয়ান ও পূর্ব ইউরোপে (সোসালিস্ট )এই দিনটি বিশেষ  ভাবে পালন করে।  শ্রমিক দিবস শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দিন

1 May Day আজ আমাদের পৃথিবীতে মেহনতি  শ্রমিকদের এক মহান  দিবস। দুনিয়ার মেহনতি মজদুর মানুষের অধিকার দিবস।

প্রথম মহাযুদ্ধের সময় আমেরিকাতে মিল, মাইন এবং বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের  সপ্তাহে ছয় দিনে ৪৮ ঘন্টা কাজের নিয়ম  চালু হয়। ইউরোপে ১৯২০ সালের দিকে সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা স্টেন্ডার্ড আওয়ারে রুপ নেয়। আমেরিকাতে ১৯৩৮ সালে Fair  labor Standards Acts আইনের অধীনে শ্রমিকদের সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা কাজ নির্ধারন করা হয়।  ফ্রান্সে Popular Front সরকার ১৯৩৬ সালে ৪০ ঘন্টা কাজের নিয়ম  চালু করে। বেশির ভাগ ইউরোপিয়ান দেশে সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা প্রথা  শুরু হয় ১৯৭০ । অস্ট্রেলিয়াতে চল্লিশ ঘন্টা শুরু হয় ১৯৪৮ সালে এবং  কানাডাতে শুরু হয় ১৯৬০ সালে।

HayMarket Square বোমা বিস্ফরণ মামলার  বিচারপতি Joseph E Gery  আদেশে Albert Parsons,George  Engel, Adolph Fischer and August  Spices  চারজন কট্টর  বিদ্রোহী সোসালিস্টদের  ফাঁসি হয় এবং জেলের ভিতর   মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত  আসামী Louis Lingg আত্নহত্যা করেন। এই বোমা মামলার বিচার একপেশে পক্ষপাতদুস্ট ও Miscarrige of justice বলে আমেরিকা এবং বিভিন দেশে প্রচন্ড অসন্তোষ এবং আলোড়ন তোলে। ফলে ইলিনয় গভর্নর John Perter ১৮৯৬ সালের ২৬শে জুন চারজনের মৃত্যুদন্ড মৌকুফ করেন।  এবং আটজনের পনের বছর জেল হয়। এখানে উল্লেক্ষযোগ্য  লেবার ইউনিয়ানের অধিকাংশ সংঘটক ও নেতারা ছিলেন জার্মান ইমিগ্রেন্ট। এই দিবসটি অমর করে  গেছেন যারা তাদের নাম ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ  থাকলেও মানুষের  মনের আড়াল হয়ে গেছে।

তাদের ঐতিহাসিক অগ্নিঝরা সংগ্রাম প্রতিবাদ প্রতিরোধের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। জয় হওক  দুনিয়ার মেহনতি মজদুর  মানুষের। শ্রমিক দিবস অমর হোক।


 My Wishes Were Realized ||| Muhammad Shanazar from Pakistan 

The whole night my heart went on
Telling me a tale,
I couldn’t sleep,
My existence seemed dancing.
On the stage, wreathed with flowers,
I remained engrossed
In sweet thoughts,
My body pined away
Like a smoldering piece of wood,
In the fire that my heart flamed.
What a night it was!

My wishes were realized,
I was there
And in front of me was the whole universe
Disclosing the secrets.
I Am Unconcerned
The sea has lost itself into the shores.
But
I don’t know what happened to the river,
And
Who knows why lights have hidden,
Perhaps
The star of fate is sleeping.

I am afraid
For the farms give forth
Nothing else but poison
For someone who has sown the corn of cruelty,
And
A piece of cloud that dove to overshadow,
Went away washing the whole world,
Now
I am unconcerned whether it happens or not,
For
Whatever is to happen, it happens at last.



Seeta Maya Rai – Seeta Maya Rai, an author of ‘Seasons and Senses’ is from Dorokha Lumbay belonging to Samtse District, Thimphu, Bhutan. From her early days in school and till now, she has written more than a hundred poems, some of which are published and featured in many anthologies such as Bhutan at her Best, Bharat Vision, World Poetry Tree and many more. She is also a recipient of many international writing awards like the ‘Order of Shakespeare Medal’ and ‘Rabindranath Tagore Memorial Literary Honour’ from  Motivational Stripes, one of the world’s active writers’ forums. She loves reading and writing poetries.


An Ode to the Women ||| Seeta Maya Ra

An active, adorable and accountable,
What not, she’s an epitome of being humble
Going through all the difficulties,
She brings comfort to the families.

Behind every man, there’s a woman
She serves as a servant with pain
How smart she’s, she never unfolds it
Unless she reaches the final breath.

Oh god! She is available everywhere
Office, home and for kids so dear,
Never complains about whom she is
And where she’s; rather lives in bliss.

To the world, she is a fierce lioness.
To her kids, a cushion of happiness.
To the world; she is a roaring dragon.
To her husband, the source of joy and fun.

With a winsome heart and soul
She lives for her kids and her man’s goal,
Never hurts her in any case of life

As she’s the heavenly god alive.



de Laras (Indonesia) – whose full name is Diadjeng Laraswati Hanindyani, is a published author, novelist, poetess, blogger at www.laraswati.com, doodler and shibori artisan from Indonesia. She has published many anthologies at home (123 anthology books) and abroad. She also writes 11 solo books about poems, children’s storybooks and travel stories. Black coffee lover and universe lover.


Lost Behind the Mist ||| -de Laras

Tinkling sound called me from a distance
A voice that shakes the heart
Tickling soul to approach
The longing that never existed
Sounds we’ve heard together
Sitting on an old bench enjoying the sunset
I’m not leaving you, I said,
But you go first
Promised to meet at the foot of the hill
Down the rocky road to get there
Dressed in red you waved your hand
My breath roars to reach you
Miss you without any reason
I’m running after you
I’m looking for you in the morning mist
Mist covers sight
My eyes are on you
You’re waiting for me there
I hear your voice calling me
The path that I took was steep and rocky
I ran and fell
You’re tired of waiting and looking away
You don’t mind my old steps that chase you
You’ve gone from my sight
The fog blocks me, you’re gone
My tears broke together with the wet twilight mist
I miss you
I screamed until I fell to my knees

 



এসএস/সিএ
সংবাদটি শেয়ার করুন