ফিচার্ড মত-মতান্তর

“শিক্ষিত” শব্দের মর্মার্থ ||| প্রজ্ঞা চৌধুরী প্রাপ্তি 

“শিক্ষিত” শব্দের মর্মার্থ ||| প্রজ্ঞা চৌধুরী প্রাপ্তি 

” শিক্ষিত “-কেউ কখনো বিবেচনা করে দেখছেন এই  “শিক্ষিত ” শব্দের প্রকৃত অর্থ কী?আসলে “শিক্ষিত ” শব্দটাই এমন যে এর মর্মার্থ অনুধাবনে সম্ভবত অনেকেই  দোদুল্যমান হবেন কারণ এর অর্থ যে কেবলমাত্র So called -“LITERATE” তা মোটেও নয় কিন্তু মনুষ্যকূল বহুলাংশে এটাকেই সত্য বলে মনে করেন। আর এটাকে সত্য বলে মনে করাকে এ সময়ে খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু বলাও যায় না। বর্তমান রোগ -শোক, দুঃখ-দারিদ্র্য সংকুল  পরিবেশে প্রাণবন্ত জীবন যাপন করাটাই একটি বৃহৎ কাঠিন কাজ।

বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষ শুধু সুখ সাচ্ছন্দ্যের পশ্চাৎ অনুসরণ করতেই ব্যকুল। আর প্রকৃতপক্ষে সুখ -সাচ্ছন্দ্য পেতে হলে অর্থের প্রয়োজন। উন্নত বিশ্বে সম্মানের সাথে অর্থ উপার্জনের এক এবং অদ্বিতীয় মাধ্যম হলো শিক্ষা। তাই উন্নত বিশ্বের প্রত্যেক পিতামাতাই তাঁদের সন্তান -সন্ততিকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য বিদ্যালয়ে প্রেরণ করেন। আমি বোধ করি, কেবল উন্নত বিশ্বের সন্তান -সন্ততিই নয়, বরং দারীদ্র পীড়িত দেশের গ্রামেগঞ্জে বসবাসরত শিশু -কিশোরদেরকেও শিক্ষার যথাসম্ভব সুযোগ প্রদান করা উচিত। কারণ এরাই উন্নয়নশীল বিশ্বের ভবিষ্যৎ। এখন কথা হচ্ছে,  কিছুসংখ্যক শিক্ষিত পাঠ্যবইয়ের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হতেই এতোটা ক্লান্ত হয়ে পড়েন যে, শিষ্টাচার, শালিনতা, সহষ্ণুতা নামক যে গোটিকতেক শিক্ষার অস্তিত্ব পৃথিবীতে অদ্যাবদি বর্তমান তা তারা বিস্মৃত হন। আর এ কারণেই প্রকৃত শিক্ষা তাদের অগোচরে রয়ে যায়। প্রাতিষ্টানিক শিক্ষার মোহে আকৃষ্ট হয়ে নিজের নৈতিকতা বিসর্জন দেওয়া মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয় কারণ একজন বুদ্ধিমান বা বুদ্ধিমতি ব্যক্তি সর্বদাই সৎ চরিত্র সমৃদ্ধ হবার পন্থা অনুসরণ করার চেষ্টা করেন। মানুষ হচ্ছে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চারিত্রিক গুনাবলি দ্বারা অর্জন করে থাকে। চরিত্র মানব জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ। মানুষের জীবনের কাজ-কর্মে, চিন্তা -ভাবনায়, ওঠা-বসায়,আচার-আচরণে অর্থাৎ মানুষের সমগ্র জীবন পরিচালনায় পুত পবিত্র ভাব ধারাকেই বলে সৎ চরিত্র। সৎ চরিত্র সর্বদা মানুষকে ন্যায়ের পথে ধাবিত করে। শিষ্টাচার, সত্যনিষ্ঠা,নৈতিকতা, গুরুজনের প্রতি ভক্তি- শ্রদ্ধা, ন্যায়পরায়নতা, আত্মসংযম ইত্যাদি চরিত্রবান লোকের বৈশিষ্ট্য।যিনি চরিত্রবান তিনি কখনো সত্য থেকে স্খলিত হন না,অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না,ক্রোধে আত্মহারা হন না,কখনো কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন না।তিনি সবসময়ই মানুষকে ভালোবাসার চোখে দেখেন। আর এসব শিক্ষা অর্জন করার যথার্থ সময় শিশুকাল। সঠিক কাজ সঠিক সময়ে সম্পাদন না করতে পারলে জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এমনকি অসময়ে অতি পরিশ্রমের মাধ্যমেও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল লাভ করা সম্ভব হয় না কারণ বিদ্যা যদি হয় ঝিনুক তবে নৈতিকতা তার অন্তরস্থিত মুক্তা কাজেই শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যার্জনের মধ্যে শিক্ষা সীমাবদ্ধ আছে বলে আমি মনে করি না। যাঁরা শিষ্টাচার এবং নৈতিকতা সমৃদ্ধ জীবন যাপন করে থাকেন এবং যাঁরা পরশ্রীকাতরতাহীন মানসিকতা পোষণ করেন তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক সনদের  সংখ্যাস্বল্পতা থাকলেও তাঁরাই প্রকৃত শিক্ষিত বলে আমি দৃঢ় চিত্তে বিশ্বাস করি।

১৯/১২/২০২১ ইংরেজি।

 





সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন