ফিচার্ড সাহিত্য ও কবিতা

শীতল চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতা

শীতল চট্টোপাধ্যায়এর কবিতা


পলাশ বাসিনী

পুরুলিয়ার পলাশ সূর্যের নিচে দাঁড়িয়ে
ভুলে যাই সূর্যাস্তের বেলা ৷
পলাশ বনে সাঁওতাল মেয়ের নৃত্য মগ্ন পা কথা ,
মাদলের শব্দে অতি প্রাচীন
আদিবাসি ধারার পরম্পরা উচ্চারণকে
ভুল অর্থেও অনুবাদ করি ,
আমার ভাষায় ৷
নৃত্যরতা সাঁওতাল রমনীর হাত ধরে
নাচের তালে – তাল মিলিয়ে
আদিবাসি গন্ধ নিতে -নিতে –
তরুনীর পলাশ হাসিতে স্পর্শিত হতে-হতে ,
নিজেকে হারিয়ে ফেলি আচ্ছন্ন নেশায় ৷
হাত বেড়ায় আটকে আমাকে
চারচাকা গাড়িতে তুলে দিয়ে,
কালো হাতটা ছাড়িয়ে নিলো
সিঁথিতে সিঁদুর টানা পলাশ বাসিনী ৷

——————————————————–

————————————————————————-শেখা

একটা ফুল উপহার চেয়েছিলে বলেই
সেই প্রথম ফুলকে – ফুলের সৌন্দর্যে চেনা ৷
তুমি আমাকে নদীর কাছে নিয়ে গেসলে বলেই
সেই প্রথম আমার নদী চেনা ,
বহমানতায় নারীত্ব নদীকে ভাবতে শেখা ৷
তুমি আমাকে ফসলী মাঠ দেখিয়েছিলে বলেই
সেই প্রথম নারীতে প্রজন্মের – জন্ম ধারাকে
কল্পনা করা ৷
তুমি আমাকে অরণ্য বাউলের গান শুনিয়েছিলে বলেই
সেই অরণ্য বাউল ছায়ায়
প্রথম তোমাকে সুরে চিনতে শেখা ৷
তুমি আমাকে মরুভূমির দিকে নিয়ে যেতে চেয়েও
থেমে গেলে হঠাৎ ,
আমি ফুরিয়ে যাব বলেই ৷

———————————————————————-

স্বতন্ত্র

দুই চোখে আটকানো পৃথিবী আর
দুই ঠোঁটের করুণা ধারার প্রার্থীতে
মানব পুরুষ ৷
রঙিন পালকের খোলা ডানায়
শিস দেয় উনিশের তন্বী ৷
ঠান্ডা নদী বা শান্তির ছায়া ভেবে ,
স্পর্শানুভবের ইচ্ছে বুকে বয়ে
মেঘ – বাজে মৃত্যু ভয় জয় করে
একুশের তরুন হাঁটে ৷
অতি দীর্ঘকাল পেরিয়ে , চলমান হয়ে ,
আগামীতেও হাঁটবে একই ভাবে ৷
হাঁটার থেকে কতটা দূরত্ব যেন
বাকি থেকে যায় ,
তন্বী আর স্পর্শের মাঝখানে ৷
তখনই মনে হয়
স্বতন্ত্র পৃথিবীরূপ নারীকে
ছোঁয়া হয়নি সত্যিই !

সংবাদটি শেয়ার করুন