জাতিসংঘ প্রবাসের সংবাদ ফিচার্ড

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি।

নিউইয়র্ক, ৩১ আগস্ট ২০২২: “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদ এবং এর যে কোনো ধরন এর মোকাবিলায় জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করে চলেছে বাংলাদেশ সরকার” -আজ জাতিসংঘ সদরদপ্তরে গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেইয়াকা সনকো এবং জাতিসংঘের সন্ত্রাস দমন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ভ্লাদিমির ভরনকভ এর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকসমূহে একথা বলেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি।

তৃতীয় জাতিসংঘ পুলিশ সামিটের সাইডলাইনে আয়োজিত এসকল বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ সদরদপ্তর ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুইমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, সন্ত্রাস দমন, দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে চলমান ও ভবিষ্যত সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সাফল্য ও অনুকরণীয় ভূমিকা ও অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি গাম্বিয়ার শান্তিরক্ষী বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। শান্তিরক্ষী মোতায়েন পূর্ববর্তী প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যাতে গাম্বিয়াকে সহযোগিতা প্রদান করে সে অনুরোধ জানান তিনি। গাম্বিয়ার শান্তিরক্ষীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে মর্মে আশ্বাস প্রদান করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের অবদানের কথা তুলে ধরেন। গাম্বিয়ার পুলিশ বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ সহায়তা সম্প্রসারণে বাংলাদেশের পুলিশের সক্ষমতা সম্পর্কে গাম্বিয়ান প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন আইজিপি বেনজীর আহমেদ।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিপসট) এর প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্পর্কে গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশেষ করে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়েরের জন্য গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, মানবিক কারণে বাংলাদেশ সাময়িকভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, এ আশ্রয় আরও দীর্ঘায়িত করা অসম্ভব। তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন অত্যন্ত জরুরি।

বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে ফলপ্রসু আলোচনা করেন মন্ত্রীদ্বয়।

গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়ার মধ্যে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ পুনর্ব্যক্ত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান যে বাংলাদেশ এ বিষয়ে গাম্বিয়াকে যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্য উল্লেখ করে গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গাম্বিয়ায় কারাগারের পরিবেশ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় এ বৈঠকে। উভয় প্রতিনিধিদল বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে আরও পারস্পরিক সহযোগিতার সুযোগ অন্বেষণে দ্বিপাক্ষিক সফরের বিষয়ে সম্মত হন।

জাতিসংঘের সন্ত্রাস দমন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল (ইউএসজি) এর সাথে বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত সন্ত্রাস দমন বিষয়ক বিভিন্ন উদ্যোগ ও নীতিসমূহ তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভবিষ্যতে এক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘের এই অফিসের সাথে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবেন মর্মেও উল্লেখ করেন তিনি। ইউএসজি সন্ত্রাস দমন এবং সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন নীতি, উদ্যোগ এবং সফলতার প্রশংসা করেন। তিনি ২০২৩ সালের জুনে অনুষ্ঠিতব্য সন্ত্রাস-বিরোধী সংস্থাসমূহের প্রধানদের আসন্ন উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান এবং সেখানে বাংলাদেশের এ সংক্রান্ত উত্তম অনুশীলন ও সাফল্যগাঁথা তুলে ধরার অনুরোধ জানান। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল সন্ত্রাসে অর্থায়ন, পারমাণবিক সন্ত্রাসবাদ, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কারিগরি সহায়তাসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রসারিত করতে জাতিসংঘ প্রস্তত রয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ উদ্যানে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু বেঞ্চ ও রোপনকৃত বৃক্ষ পরিদর্শন করেন। এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত এবং বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ।

 

এসএস/সিএ

 


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন