সাহিত্য ও কবিতা

সে পালিয়ে |||| পুলক বড়ুয়া

সে পালিয়ে |||| পুলক বড়ুয়া

সে পালিয়ে |||| পুলক বড়ুয়া


বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র প্রসব করেছে
          এক মৃতশিশু;
কিন্তু, সে এমন ক্যানো—
       শুয়োরের মতো, বদখত,
অতএব, না, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র প্রসব করেছে
              এক মহাজানোয়ার,
সামান্য সৌজন্যতাটকুও
         সে জানে না, কথাবার্তাও শেখেনি
তাকে নিয়ে ভীষণ মুশকিল—
   এতদিনেও মানুষ হল না,
তার আচার-আচরণ আগের মতোই—
       শেষ চার বছরের মতোই
সে আরও চার বছর থাকতে চায়
           আগামী চার বছর
আসছে সর্বশেষ চার বছর
    শেষদান আশা করছে;

করোনা ভাইরাস নিয়ে মশকরা করতে করতে
    সে এমন অসভ্য, সভ্য দুনিয়ার গাড়ল …
         সে নিজেও রেহাই পেল না,
বর্ণবাদী দাঙ্গার ভিজে বেড়াল সে
          অভিবাসী দেশ থেকে
         অভিবাসন হঠাতে চায়,
কিছু কিছু মানচিত্রকে
      কালো তালিকাভুক্ত করতে চায়
জলবায়ু পরিবর্তনকে পিটপিট করে
            খাটো চোখে দ্যাখে
আন্তর্জাতিক জলবায়ু চুক্তি থেকে
                 চম্পট দেয়
স্বাদেশিক রাজনৈতিক পালাবদলকে
      স্বাগত না-জানিয়ে বুড়ো আঙুল দেখায়
তাকে পাগলা গারদের প্রেসিডেন্ট হলে
       মানাত কী যে , মরি মরি, দারুণ দ্যাখাত …
আমি তার সচেতন-ভক্ত হয়ে যেতাম;
         ব্যাটা, আস্ত একটা উজবুক …
উদারতার বদলে শুধু কট্টরপন্থী নয়, সংকীর্ণ নয়—
            এতই হাড়কিপ্টে যে
খোদ রক্ষণশীলেরাও তার সঙ্গে নেই;
           দুনিয়ার সবচে’ ক্ষমতাধর মসনদে বসে
তাকে ঘিরে ডাইনেস্টি কায়েম করতে চায়
         তার সে স্বপ্ন গুড়ে বালি;
আসলে, ব্যবসায়ীরা গদিতে সুন্দর : যেই হোন;
অই যে চাঁদ সওদাগর—সফল সওদাগর তিনি;
বাণিজ্যে বসত করে লক্ষী, সমুদ্রে ভাসান তরী;
       তার প্রেমের তরণীতে প্রাণের লক্ষী
                  হয়ে যায় বিষলক্ষ্যার ছুরি !

আমি ‘ শুয়োরের ঘোঁত ঘোঁত ‘ শুনতে পাচ্ছি,
             তার বিদঘুটে গন্ধ পাচ্ছি;
দাঁতাল বুনো জানোয়ার বধের আওয়াজ পাচ্ছি,
              উৎসব দ্যাখতে পাচ্ছি !

সে কী তড়পাচ্ছে, ধড়ফড় করছে
   সে কী লাফাচ্ছে—কল্লাকাটা মুরগীর মতো;

একটু পর সব শেষ হয়ে যাবে
  এই কী তার সর্বশেষ লম্ফঝম্ফ, এই বেলা;

দুনিয়ার সবচে’ ক্ষমতাধর গণতন্ত্র
    এক মৃতশিশু উপহার দিলেও
           আর যাই হোক
আমি তার উৎসের অপমৃত্যু চাই না;
       আমি প্রসূতির এই বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের—
                 জননীর—জয় চাই;

             বাবার কাছে শুনেছি,
আমাদের গ্রামে নাকি একবার এক
      প্রেতাত্মার আবির্ভাব হয়েছিল
            আর রাত হলে শুয়োর হয়ে নামতো;

সেরকম না-হয় এক
     মানবেতর প্রাণি দাপিয়ে বেড়াল
             উৎপাত করে গ্যালো;

পৃথিবী তো আর প্রেতলোক নয়
    মানবমানবীর আগমনে
        নরনারীর উত্থানে
           মানুষের জাগরণে
             মানবের জয়গানে

যে তিমিরে সে সে তিমিরে
         লুকিয়ে যাবে, পালিয়ে যাবে
দূর হয়ে যাবে, দূরে যাবে, মিশে যাবে, মুছে যাবে !

০৫.১১—০৭.১১.২০২০





সংবাদটি শেয়ার করুন