সৌম্য, আপনার সঙ্গে যতক্ষণ সমাহিত থাকলাম ।
প্রভু, তোমার সকাশে যতক্ষণ থাকলাম ।
মনে হল, সময়টা শান্তি মতো গেল—
মনে হল, এই তো দুনিয়া আমার,
এ পৃথিবীটা, মহাশান্তিধাম; গুরু, এই
শান্তির অপর নাম হতে পারে অবিকল্প তুমি । এই কোমল শক্তির অপর নাম হতে পারে শুধু তুমি।
সাঁই, তোমাকে যে নামেই ডাকি না কেন—তুমি
আমার গহীনে হতে পার কেবল একান্ত স্বস্তি;
মনে হল, শান্তির অপর নাম হতে পারে, পিতা,
নিরাকার মনজুড়ে একজন তুমি । একমাত্র তুমি ।
অই তুমি । এই তুমি । সেই তুমি । শুধু তুমি ।
তুমি শুধু । শূন্য তুমি । পুণ্য তুমি । পূর্ণ তুমি ।
প্রভু, মনে হল, তুমিই আমার মহৎ শান্তির নীড় !
প্রিয়, মনে হয়, তুমিই আমার মহান শান্তির মিড় !
তোমার অপর দুনিয়া—মানেই অন্যদিন ।
তোমার অপার ভুবন—মানেই ইহকাল ।
তুমি কী একটি কমলালেবুর কুমেরু সুমেরু !
তুমি কী একটি দুনিয়ার একই মুদ্রার এপিটওপিট !
দিগন্তে আমার দুঃখগুলি নীলিমার নীল মেঘমালা—উড়ুক্কু পর্বতমালা … মরসুমী বনভূমি, মনোতুমি;
সসীম, অসীম, অনন্ত, অশেষ—অফুরান,
বিচিত্র, অমীমাংসিত তুমি ।
সেইখানে কেউ নেই, কিছু নেই, শুধু নেই নেই ।
প্রভু, আমি তো কাউকে রদ করতে ঢুকিনি;
আমার তো কোনো গাত্রদাহ নেই;
আমার তো মনোমধ্যে কোনো গোত্র নেই;
হৃদয়ে আমার কোনো বন্দিনী বিহঙ্গ নেই;
অনিত্য সংসারে আমি অনাথ অনাত্মা;
এই আমি সেই আমি নই—সেই আমি এই আমি নই;
আমি আর আমি নই—আমিহীন এক আমি;
এই দেহ নই কেহ; বিদেহী বিচ্ছেদী; আখেরি অঞ্জলি।
অচিন বন্দরে … বিধ্বস্ত প্রান্তরে … নিরুদ্দেশে—
আমি এক উদ্বাস্তু; তোমার ঠিকানা ঠিকুজি নেই;
কী করে তোমাকে খুঁজি; আমার তো পুঁজি নেই;
গহন গহীন নিবিড় আপন মৌনলোকে, মৌললোকে মনে পড়ে, সৌম্য, তুমি এক একাকী একক
অনন্ত অসীম অমর্ত্য অমূর্ত অব্যক্ত অক্ষররশ্মিরাশি !