দেশের সংবাদ

হেফাজতের কাউন্সিল ঘিরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় অজ্ঞাত লিফলেট!

হেফাজতের কাউন্সিল

হেফাজতের কাউন্সিল ঘিরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় অজ্ঞাত লিফলেট!

আবু তালেব, হাটহাজারী থেকে  ।। অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন বলে দাবিদার হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর সদর দফতর হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী বড় মাদ্রাসায় আগামীকালের ১ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলকে ঘিরে ক্রমেই বাড়ছে অস্থিরতা। 

সর্বজন শ্রদ্ধেয় সংগঠনটির প্রয়াত আমির আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সম্মেলনকে ঘিরে সংগঠনটিতে দেখা দেয় চরম টানাপোড়েন। এরই ধারাবাহিকতায়ই শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) জুমার নামাজ আদায়কালে কে বা কারা হাটহাজারী মাদ্রাসা মূল ফটকের বাইরে নানা ধরনের রহস্যময় লিফলেট ছড়িয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, যখন মুসল্লিরা জুম্মার নামাজ আদায় করে মাদ্রাসার বাইরে বের হচ্ছেন ঠিক ওই মুহুর্তে চোখে পড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নানা ধরনের রহস্যময় রঙ্গিন লিফলেট। লিফলেটে কারো নাম ঠিকানা না থাকলে এসব লিফলেট গুলোতে জুনায়েদ বাবুনগরী ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্র শামীম বিন সাঈদীর একটি ছবি দিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, হাটহাজারী মাদ্রাসায় মানবতাবিরোধী সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাঈদীপুত্র শামীম সাঈদীর আনাগোনা এটি কিসের ইঙ্গিত।

এছাড়াও হেফাজতে ইসলামকে হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রভাবমুক্ত করতে আল্লামা শফীর ঘনিষ্ঠদের বাদ দিয়ে হেফাজতের কমিটি করতে জামায়াত শিবির ষড়যন্ত্র করছে বলেও এসব লিফলেটে দাবি করা হয়। অন্য একটি লিফলেটে লেখা হয়েছে, ধর্মপ্রাণ ও অরাজনৈতিক হেফাজতকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ষড়যন্ত্রে মরিয়া জামায়াত-বিএনপি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, অতীতে যারা হেফাজত নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে, হেফাজতকে বিলীন করার চেষ্টা করেছে এটা তাদেরই কাজ। তৌহিদী জনতা এখন সব বুঝে কোনো ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। যথাসময়ে কাউন্সিল হবে, এটা কেউ চাইলে বানচাল করতে পারবে না। করতে চাইলে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

তবে হাটহাজারী মাদ্রাসার একজন শিক্ষার্থী জানান, কারা বিলি করেছে তা বলতে পারছি না। আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে লিফলেট বিলিকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে বলে শুনেছি।

এদিকে জুনায়েদ বাবুনগরী ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদীপুত্র শামীম বিন সাঈদীর ‘বৈঠক’ প্রসঙ্গে এর আগে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছিলেন, সেটা আদৌ জামাত-শিবিরের কোনো মিটিং ছিল না। এটা ছিল এসএমএম কুরিয়ার সার্ভিস নামের একটি কোম্পানির ইফতার মাহফিল, যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের অনেক রাজনৈতিক নেতাও সেখানে ছিলেন।
জুনায়েদ বাবুনগরী দাবি করেন, ওই ইফতার মাহফিলে শামীম সাঈদীর উপস্থিতিতে তিনি বিব্রতবোধ করছিলেন। হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীও শামীম সাঈদী উপস্থিত হওয়ায় বিরক্তি প্রকাশ করেন।

আল্লামা বাবুনগরীর ব্যক্তিগত খাদেম ইম’আমুল হাসান ফারুকী এক ব্যাখ্যায় বলেন, ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে একজন ব্যক্তি আসল। আমরা তাকে চিনতাম না। উপস্থিত অফিসের একজন ডাইরেক্টর (যিনি আওয়ামী লীগ নেতা) জানালেন, তিনি আল্লামা সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী। শামীম সাঈদী এ সময় বাবুনগরী হুজুরের পায়ের কাছে বসেন। তিনি পাশে বসা অবস্থায় ওনার এক সহকারী সবার অজান্তে দুজনের একটি ছবি তুলে ফেলেন।

বিষয়টা জানতে পেরে তার বাবুনগরী হুজুর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন এবং ছবিটি মুছে ফেলতে বলেন। কিন্তু শামীম সাঈদী বললেন, ছবিটা শুধু স্মৃতি হয়ে থাকবে, অন্য কিছু না। তখন ওই সময় উপস্থিত আজিজুল হক ইসলামাবাদী, আমি (ইম’আমুল হাসান) তাকে ছবিটি ডিলিট করার জন্য বললে তিনি বললেন, আচ্ছা ডিলিট করে দিচ্ছি। কিন্তু তিনি তা ডিলিট করেন নাই।

অন্যদিকে গতকাল শুক্রবার বিকালে এ ব্যাপারে হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সম্মেলন (কাউন্সিল) বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য মাওলানা মীর ইদরিসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি কুচক্রি মহল হেফাজতকে বিতর্কিত করতে উঠে পরে লেগেছে। তারাই হেফাজতের আগামীকাল রোববারের অনুষ্ঠিতব্য কাউন্সিল বানচাল করতে নানা যড়ষন্ত্রে লিপ্ত। তবে তাদের উদ্দেশ্য কোন দিনও সফল হবে না।

কাউন্সিলের সব ধরনের প্রস্তুতি এখন প্রায় শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সব নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে কাউন্সিলে যোগদান করতে রওনা হয়েছেন। সবাই কাউন্সিলে উপস্থিত থাকবেন বলে তিনি আশা করেন।

সূত্রঃ যুগান্তর

এসএস/সিএ


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন