কানাডার সংবাদ ফিচার্ড

অটোয়ায় ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর জন্মদিন পালিত

অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর যথাক্রমে ৯১ তম এবং ৭২তম জন্ম দিবস পালন।

বাংলাদেশ হাইকমিশন, অটোয়া, কানাডা ০৫ আগস্ট ২০২১ তারিখ যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর যথাক্রমে ৯১তম এবং ৭২তম জন্ম বার্ষিকী পালন করে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ভাচর্ুুয়ালি অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে বাংলাদেশ হাইকমিশন, অটোয়া এবং বঙ্গবন্ধু সেন্টার ইন কানাডা কর্তৃক আয়োজিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের উপর নির্মিত দু’টি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রফেসর ডাঃ সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন মহীয়সী নারী। তিনি বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। তিনি সকলকে সব সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তিনি প্রত্যক্ষভাবে বঙ্গবন্ধুসহ যারা আসামি ছিলেন তাদের পক্ষে কাজ করেছেন। অনুষ্ঠানের অন্য দুইজন বক্তা প্রফেসর ড. সাজ্জাদুর রহমান এবং প্রফেসর জনাব ওমর সেলিম শের তাঁদের বক্তব্যে শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর সাথে তাঁদের ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করেন। তারা তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন এবং একজন বন্ধুসুলভ, মেধাবী এবং বহুপ্রতিভার অধিকারী তরুণ হিসাবে তাঁকে বর্ণনা করেন। সবার সাথে শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের একটি মধুর সম্পর্ক ছিল। বহু গুণের অধিকারী তিনি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক। ক্রীড়ানুরাগী হিসেবে আজও যে নামটি বাঙ্গালী জাতি স্মরণ করে সে হলো সবার প্রিয় শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল। দক্ষ সংগঠক হিসেবে তিনি বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নয়নে এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিশেষত যুব সমাজের কাছে অফুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বাণীতে পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত জনাব মাসুদ বিন মোমেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তাঁদের অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বঙ্গমাতাকে বঙ্গবন্ধুর জীবনের রাজনৈতিক প্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ তাঁকে বঙ্গমাতা অভিষেকে ভূষিত করেছেন। বাঙালির ছয়দফা ও এগার দফা বাস্তবায়নে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে যা জাতি চিরদিন স্মরণ করবে। স্বাধীন বাংলাদেশ পুর্নগঠনে তিনি বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা যুগিয়েছে। তিনি তাঁর সাদাসিদে জীবন যাপনের বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি

শহিদ শেখ কামালকে বাঙালি জাতির বিশেষ করে যুব সমাজের জন্য একজন রোল মডেল হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের বিনয়ী এবং নিরহংকার জীবনের কথা উল্লেখ করে তাঁকে মেধাবী ,সাংস্কৃতিমনা, ক্রীড়ানুরাগী এবং দক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে ব্যক্ত করেন।

মান্যবর হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান তাঁর বক্তব্যের শুরুতে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাদের জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিকের প্রতি আলোকপাত করেন। তিনি বলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন মহৎ হৃদয়ের অধিকারী। তিনি গরীব মানুষের দুখের কথা শুনলে সব সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন এবং তাদের দুঃখে ব্যথিত হতেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, সংগ্রাম ও মানবতার কথা উল্লেখ করে মান্যবর হাইকমিশনার বলেন যে, শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন জাতির পিতার আদর্শে বলীয়ান এক অসাধারণ তরুণ। তিনি বঙ্গমাতা এবং শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের গৌরবময় জীবন ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সকলকে জাতির পিতার ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান। হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত নূর চৌধুরীকে কানাডা হতে বাংলাদেশে দ্রুত ফেরত নেয়ার অভিপ্রায় ঘোষণা করেন এবং এ বিষয়ে কানাডাস্থ বাংলাদেশীদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান। এছাড়াও কানাডা হতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারী সকলকে আইনের মুখোমুখি করায় সচেষ্ট থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এবং এ ধরনের অপপ্রচার বন্ধে প্রবাসীদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

সবশেষে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা এবং শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালসহ জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন