কানাডার সংবাদ ফিচার্ড

কানাডার ক্যালগেরীতে ‘আলবার্টা রাইটার্স ফোরাম’ এর আত্নপ্রকাশ

কানাডার ক্যালগেরীতে ‘আলবার্টা রাইটার্স ফোরাম’ এর আত্নপ্রকাশ

কানাডার ক্যালগেরীর উৎসব সুইটস এন্ড রেস্টুরেন্টে ক্যালগেরিতে বসবাসরত সাংবাদিক,লেখক, গবেষক, কলামিস্ট, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও প্রগতিশীল সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত সুধীজনদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ‘আলবার্টা রাইটার্স ফোরাম’। 
“আলবার্টা রাইটার্স ফোরাম’ এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রথিতযশা রম্য লেখক বায়াজিদ গালিব এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট কলামিষ্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মোঃ মাহমুদ হাসান। 
কমিটির নির্বাহী উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি লেখক, প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম রিপন, বাংলাদেশ কানাডা এসোসিয়েশন এবং বুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি কলামিস্ট প্রকৌশলী আবদুল্লা রফিক, ক্যালগেরী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী হাসান, মাউন্ট রয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেবুন্নেসা চপলা, মাউন্ট রয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রঞ্জন দত্ত এবং প্রবাস বাংলা ভয়েস এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল। 
সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রথিতযশা রম্য লেখক বায়াজিদ গালিব এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট কলামিষ্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মোঃ মাহমুদ হাসান
কানাডার স্থানীয় সময় রোববার সকালে উৎসব সুইটস এন্ড রেস্টুরেন্টে “আলবার্টা রাইটার্স ফোরাম” এর উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রবাস বাংলা ভয়েস এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল এর সঞ্চালনায় 
“আলবার্টা রাইটার্স ফোরাম’ গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে লেখকগন বলেন, প্রতিটি মানুষের চিন্তা চেতনায় পার্থক্য থাকতে পারে, মতাদর্শগত ভিন্নতা থাকলেও কিছু মৌলিক বিষয়ে মতৈক্যের সুযোগ থাকে। বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর বঙ্গবন্ধুর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দর্শন নিয়ে আমাদের মাঝে কোন ভিন্নমত নেই। 
তাই সময়ের প্রয়োজনে একটি সুখী, সুন্দর ও অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা জন্য কাজ করার নিমিত্তে সমমনা লেখক, গবেষক, সাহিত্য সংস্কৃতির সঙ্গে যু্ক্ত ব্যক্তিদের মুক্তবুদ্ধির চর্চার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আর সেই লক্ষ্য নিয়ে প্রগতিশীল লেখক, গবেষক ও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে নিয়োজিতদের সংগে নিয়েই “আলবার্টা রাইটার্স ফোরাম’ । ফোরামটির কার্য প্রণালী আর ভবিষ্যতে এর কলেবর বৃদ্ধির প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা এবং মত বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
 সংগঠনটির সভাপতি রম্য লেখক বায়াজিদ গালিব বলেন, দূর প্রবাসে বাংলা ভাষাসহ মাতূভাষার চর্চা এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের মাঝে শিক্ষা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চাকে আরো দূঢ় করার প্রত্যয় নিয়েই আমাদেরই এই উদ্যোগ। 
 সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট কলামিষ্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মোঃ মাহমুদ হাসান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা বাঙালি জাতিসত্বার অমূল্য অর্জন, আমাদের ভাষা, সাহিত্য,সংস্কৃতি জাতিসত্বার গৌরব। ৪৭ এর পর থেকে নানাভাবে আমাদের বাঙালি জাতিসত্বার উপর আঘাত এসেছে, ৫২ সালে রক্তক্ষয়ী মাতৃভাষা সংগ্রামের মধ্যদিয়ে প্রতিবাদ প্রতিরোধের যে সুচনা হয়েছিল ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হলেও একাত্তরের পরাজিত শক্তি নানা ভাবে শক্তি সঞ্চয় করে মুক্তি যুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী সমাজ বিনির্মানে দেশে বিদেশের বাঙালি কমিউনিটিতে তাদের প্রচেষ্টা কে অব্যাহত রেখেছে। 
তিনি আরো বলেন, বায়ান্নের এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাঙালি জাতির সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে কবি, সাহিত্যিক, লেখক, গবেষক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অসামান্য অবদান রেখেছেন। সচেতনতা ও জনমত সৃষ্টির মাধ্যমে জাতীয় জাগরণ সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছেন। একাত্তরের যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেই কাঙ্খিত সমাজ বাস্তবায়নে এখনো নানারকম চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আর এসব দৃষ্টিকোণ থেকে প্রবাসে এ ধরনের একটি সংগঠন আজ খুবই প্রয়োজন।
 
ক্যালগেরি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কাজী হাসান বলেন, মানবিক মূল্যবোধের চর্চায় লেখকগন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারেন। অভিবাসী বাংলাদেশীদের পাশাপাশি কানাডায় আমাদের নতুন প্রজন্ম নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালনা করছে। সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে আলবার্টা রাইটার্স ফোরাম সব সৃজনশীল উদ্যোগের সাথে থেকে পরবর্তী প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এটাই আমার বিশ্বাস।
মাউন্ট রয়েল ইউনিভার্সিটির ড. জেবুন্নেসা চপলা বলেন, অভিবাসীদের পরবর্তী প্রজন্ম কে এই ফোরামের সাথে অন্তর্ভুক্ত করার মধ্যদিয়ে বহুজাতিক সংস্কৃতির চর্চা কে অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখতে হবে। কানাডা ও বাংলাদেশ উভয় সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতি আনুগত্য প্রকাশের মধ্য দিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
 
মাউন্ট রয়েল ইউনিভার্সিটির ড. রঞ্জন দত্ত বলেন, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জাতিসত্বার ইতিহাস, আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের অংশ। গবেষণা আর লেখালেখির মাধ্যমে ‘ আলবার্টা রাইটার্স ফোরাম’ কানাডার বহুজাতিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে এ চর্চাকে সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে।
 
প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম রিপন বলেন, গবেষণা, লেখালেখির মাধ্যমে সৃজনশীলতা বিকশিত হয়। মুক্তবুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে আমরা আঁধার কে পেছনে ফেলে আলোর পথে এগিয়ে যেতে পারি। পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ইতিহাস, ঐতিহ্য কে ছড়িয়ে দিয়ে তাঁদের মাঝে মাতৃভূমি কে ভালোবাসার অনুপ্রেরণা তৈরি করতে পারি।
 প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ রফিক বলেন, এমন একটি উদ্যোগের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে পেরে আমি গর্বিত। আমাদের লক্ষ্য এমন সুন্দর একটি প্রচেষ্টাকে প্রগতিশীল পথে পরিচালিত করতে হবে। একে গতিশীল করতে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল সবাই কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রবাসে আমাদের ভাষা ও মূল্যবোধকে ধরে রাখতে আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই সাহিত্য সাংস্কৃতিক চর্চা কে অব্যাহত রাখতে হবে। আর সেই লক্ষ্যে “আলবার্টা রাইটারস ফোরাম” সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন