বাবার দেওয়া নামটি হলো – বলহরি শীল
কাজ কর্ম করেই আমার – খুশি হতো দিল।
খৌর শিল্পের হলো বুঝি – মহা সর্বনাশ
করোনার ছোবলে এখন – হয়েছি বিনাশ।
দুই মাস হয়ে গেছে – বন্ধ আমার দোকান
কে বা কারা,দেবে বলো – খাদ্যের জোগান?
টাকা পয়সা যা ছিলো তা – হয়ে গেছে শেষ
বেঁচে থাকা কঠিন বিষয় – হয়ে যাবো নিঃশেষ।
মরণ বুঝি কাছেই এলো – যাচ্ছে না তো বাঁচা
চেয়ে দেখি মাথা ‘ চাছে ‘ – পাশের বাড়ির চাচা।
বংশ পরম্পরায় আমি – হচ্ছি জাতে নাপিত
চুল দাড়ি কেটেই আমরা – জীবন করি যাপিত।
ভদ্রলোকের গিন্নি বুঝি – এখন কাটে চুল!
তা হলে কি ধ্বংস হবে – জাতের নাপিত কূল?
আমরা যারা ছিলাম আগে – বন্ধান করা লোক
এসব দেখে হতাশ হয়ে – পাচ্ছি ভীষণ শোক।
হাট বাজারে দেখছি শুধু – ন্যাড়া মাথা বেল
ন্যাড়া মাথা হলে বুঝি – লাগেনা আর তেল।
তেলের খবর জানেন নাকি – হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
মাথা মালিশ করতে এখন – লাগছে না আর মিস্ত্রি।
কতো লোক এলো গেলো – আমার দোকান ঘরে
করোনার কারণে তারা – থাকে এখন দুরে।
সামাজিক দুরত্বের জন্য – লক ডাউন হলো
শপিং মল কি কারণে – এখন খুলে দিল?
দোকানে দোকানে দেখি – মানুষের ভীড়
খৌর শিল্পীর দোকান গুলো – বন্ধ আছে স্থির।
পারদর্শী ছিলাম আমি – আমার নিজের কাজে
করোনার কারণে এখন – মৃত্যু ঘণ্টা বাজে!
আমাদেরে দেখা এখন – জরুরি দরকার
ত্রাণ কিন্তু দিতেই আছে – সদাশয় সরকার।
দ্বায়িত্বে আছেন যারা – উপযুক্ত পদে
আমাদেরে দেখে যান – এ মহা বিপদে।
আক্ষেপ করেই বলি – শোন মোর কথা
নিচে আছে দু’টি লাইন – লিখা আছে যেথা।
ত্রাণ বৈষম্য করবে না রে – ওরে ও ভাই দাতা
উপর থেকে দেখতে পাচ্ছেন – এ জগতের ত্রাতা।
২০/০৫/২০২০ খ্রিস্টাব্দ ।
ঈশান কর সড়কের পাশে – খোকাদের পুকুর
পুকুরের চারপাশের – দৃশ্য খুব মধুর।
সড়কের পাশে আছে – পুকুরের ঘাট
ঘাটের দক্ষিণ পাশে – ফসলের মাঠ।
পুকুরের পারে, আছে তার – কতো কতো গাছ
যেমনটি আছে জলে – রকমারি মাছ।
রাস্তার পাশে তার – ফুলের বাগান
ফুল ফোটে গাছে দেয় – শুভেচ্ছা জানান।
গুল্মে আর বৃক্ষ লতায় – কতো জাতের ফুল
তমাল গাছ আছে এক – গাছেদের মূল।
শতবর্ষী তমাল গাছ – ছায়া দেয় ঘাটে
পথিকেরা বিশ্রাম নেয় – যায় যখন হাটে।
এক সময় তমাল তলে’ই – হতো সব বিচার
এখন আর সেই দিন – নেই কিন্তু আর।
গাছ এখন মৃতপ্রায় – বয়সের ভারে
পর গাছায় ফুল ফোটে – গাছের উপরে।
কদম ফুটেছে কতো – গাছেদের ডালে
ডাল গুলো দোলা দেয় – হাওয়ার তালে।
কৃষ্ণচূড়া ফুল আছে – একাধিক গাছে
ফুলের সৌন্দর্য দেখে – মনটাও নাচে।
আরও এক ফুল ফোটে – মাধবীলতা
ফুলের আধিক্যে তার – লুপ্ত হয় পাতা।
গুলাচি গাছে ফুল – হাজারে হাজার
মনে হয় যেন এক – ফুলের বাজার।
বক ফুলের গাছ আছে – দেওয়ালের ভিতর
ফুটে আছে, গাছে ফুল – কতো যে সুন্দর।
জবা,টগর, বেলী আর – অলকানন্দা ফুল
পূজারী’রা তুলে নিতে – করে না তো ভুল।
দেওয়ালের পাশে তার – ফল গাছের সারি
অপূর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্যে – ভরে আছে বাড়ি।
খোকাবাবু দুঃখ পায় – হাতে পারা হলে
আপত্তি থাকে না তার – কুড়িয়ে তা নিলে।
গাছগুলো লাগানো ছিল – খোকার নিজের হাতে
শতবর্ষী তমাল গাছ – বাদ পরে তাতে।
আরও একটি ফুল গাছ – আগেকার দিনের
গুলাচি যিনি লাগিয়েছিলেন – অতীত স্মরণের।
খোকাবাবু বাড়িতে – থাকেনা এখন
পদায়ন আন্তঃজেলায় – চাকরির কারণ।
পাড়ার ছেলেদেরে বলি – দেখে রেখো এ-সব
উপভোগ করবে তোমরা – ইহাদের সৌরভ।
১৯/০৫/২০২০ খ্রিস্টাব্দ।